• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
'কাজ নাই পেটে ভাত নাই'

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

'কাজ নাই পেটে ভাত নাই'

  • সালাহউদ্দিন সালমান, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ)
  • প্রকাশিত ০৭ জুলাই ২০২১

দেশে প্রতিদিনই করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে । করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের প্রভাব পড়েছে সিরাজদিখান উপজেলাতেও।দেশে করোনায় যেমন মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে, তেমনি জ্যামিতিক হারে মানুষের কর্মহীন হওয়া এবং কাজ হারানোর ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে। দেখা যায় মফঃস্বলে প্রধান স্থানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও এলাকার অন্যান্য আনাচেকানাচে তেমন তোয়াক্কা করা হচ্ছে না করোনার বিধিনিষেধের। তাদের দাবি, আগে খাবার তারপর স্বাস্থ্যবিধি। মারা যাবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত খাবার ছাড়া চলে না। তাই লকডাউনের আগে কর্মহীন এবং শ্রমজীবী মানুষের খাবার নিশ্চয়তা চান তারা। তাদের কাজ না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এমনটাই জানান কয়েকজন ভ্যান চালক।

গত কয়েকদিন ধরে দেশে সংক্রমণের ভয়ংকর চিত্র দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি গত এক বছরেও দেখা যায়নি। প্রায় প্রতিদিনই রোগী শনাক্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড হচ্ছে।এদিকে সিরাজদিখানে সর্বাত্মক লকডাউনে সংকুচিত হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের কাজের সুযোগ।এতে জীবিকার সংকটে পড়েছেন এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। রিকশাচালক, পরিবহণ শ্রমিক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, সাধারণ দোকানদার এবং ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার খেটে খাওয়া মানুষ কাজ না থাকায় এসব পেশার মানুষের হাতে টাকা নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। অনেকেই তিনবেলা খেতে পাচ্ছেন না। জরুরি প্রয়োজনেও নিতে পারছেন না চিকিৎসা সেবা। এছাড়া অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনও মেটাতে পারছেন না। অভাব আর অনটনে পার করছেন দুর্বিষহ জীবন।দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর লকডাউনে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ভিবিন্ন রাস্তায় মানুষের চলাচল কম দেখা গেলেও বৃষ্টিভেজা সকালে রাস্তায়,বন্ধ মার্কেট ও অলিগলির মোড়ে দেখা গেছে ভ্যান চালকদের অলস সময় কাটানোর দৃশ্য।

আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কঠিন লকডাউনের মাঝে কর্মহীন ভ্যান চালক মো. কাসেম বলেন, সংসার চালাতে পারছিনা সারাদিনে একটা ও ভাড়া মারতে পারিনি।পুলিশ দেখলেই পিটায়।তার উপর বৃষ্টি যেনো আমাদের জন্য আরেক মহামারী।শুনি সরকার থেকে আমাদের মতো ভ্যান চালকদের জন্য টাকা দিয়েছে কই আমরা একদিনও পাইনি।আবার আসছে ঈদ খেতেই পারিনা তিন বেলা ঈদ করবো কিভাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় করোনার কারণে নানা পেশার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বেসরকারি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যারা সরকারের এমপিওভুক্ত নয়, কেবল শিক্ষার্থীদের বেতনে চলে। সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থা ও কঠিন। তাদের বেতন যেমন বন্ধ আছে তেমনি কারো কাছে বলতেও পারছে না। তাই কাজের সন্ধানে বাইরে যাবার এক ধরণের তাড়না তৈরি হয়েছে। করোনায় আক্রান্তের ভয়ের চেয়েও তাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে খাবার সংগ্রহ।

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন,উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ইতোমধ্যে সরকার ২২ লক্ষ ৯৬ হাজার অর্থ এবং ৮ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।এইসব বরাদ্দ স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষদের ঘরে ঘরে পুঁছে দেওয়া হচ্ছে।নিন্ম আয়ের একজন মানুষও যাতে না খেয়ে থাকে আমরা তাদের সে ব্যবস্থা করছি।যারা অভাব অনাটনে আছেন তারা স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করলেই অনুদান পেয়ে যাবে। এবং এই বরাদ্দ চলমান লকডাউনে অব্যাহত থাকবে এছাড়া অন্যান্য বরাদ্দও আসতে পারে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads