মাহমুদুল হাসান রিমন, সখীপুর (টাঙ্গাইল) :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ও পাকা সড়কের এক পাশে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। কমপক্ষে তিন বছর ধরে উপজেলার বনবিভাগের বহেড়াতৈল রেঞ্জের এমএমচালা বিট কার্যালয়ের পাশে বনাঞ্চলের একাধিক স্থানে এ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে বন বিভাগ ও সখীপুর পৌরসভার মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। পাকা সড়কের ওপরে ও সংরক্ষিত বন এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
স্থানীয় বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বনবিভাগের বহেড়াতৈল রেঞ্জের এমএমচালা বিট কার্যালয় থেকে মাত্র ২০০গজ দক্ষিণে সখীপুর-মহানন্দপুর পাকা সড়কের এক পাশে ও বনাঞ্চলের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে পৌরসভার গাড়ি দিয়ে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কমপক্ষে তিন বছর ধরে এ বর্জ্য ফেলার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। মশা-মাছির উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। দুর্গন্ধে পাশের এলাকায় মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বর্জ্য খেয়ে বন্য প্রাণীর মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। এ ছাড়াও বনাঞ্চলে ফেলা অপচনশীল প্লাস্টিক ও পলিথিন থাকায় পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বর্জ্য ফেলে একটি ট্রাক সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশে ময়লা ফেলতে গিয়ে খালি স্থান পূরণ হওয়ায় এখন পাকা সড়কের একাংশের ওপরে ফেলতে দেখা গেছে। ফলে সড়ক দিয়ে চলাচল করা গাড়ি ময়লার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। পুরো সড়ক জুড়ে ময়লাযুক্ত পানি থাকায় পায়ে হেঁটে চলাচলকারী স্থানীয়দের মাঝে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া সংরক্ষিত বনের ভেতর বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
ময়লার বাগাড়ের পাশের বাসিন্দা আবুল মিয়া বলেন, কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে এই স্থানে পৌরসভা ময়লা ফেলছে। দুর্গন্ধে বাড়িতে টেকা দায়। আমরা গরিব মানুষ দুর্গন্ধ সহ্য করে চলছি। কাউকে কিছু বলতে পারছি না।
ময়লা ফেলার ২০০ গজ দূরে বনবিভাগের এমএমচালা বিট কার্যালয়। বিট কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভাকে বার বার বলার পরও আমাদের কথার কোনো দামই দিচ্ছে না।
সখীপুর উপজেলা আ.লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বনে বর্জ্য ফেলার কারণে বনের পরিবেশ দূষিত হবে। এছাড়াও ওই বর্জ্যে অপচনশীল প্লাস্টিক ও পলিথিন থাকায় সেগুলোও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ। এছাড়াও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বহেড়াতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, গত তিন বছর ধরে পৌরসভার মেয়রকে বনাঞ্চলে ও সড়কের পাশে ময়লা না ফেলার জন্য কমপক্ষে ১০ বার অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকেও অবগত করানো হয়েছে। গত সোমবার মেয়রকে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। তারপরেও তিনি শুনছেন না।
এ বিষয়ে সখীপুর পৌরসভার টানা তিনবার নির্বাচিত আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ বলেন, ময়লা ফেলার জন্য ভিন্ন একটি জায়গা খোঁজা হচ্ছে। আশা করি খুব শিগগিরই এ বিষয়টি সমাধান করা হয়ে যাবে।
