• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
বেপরোয়া ভারতীয় গরু পাচারকারীরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

বিএসএফের গুলিতে নিহত দু'জনের লাশ ফেরত পায়নি স্বজনরা

বেপরোয়া ভারতীয় গরু পাচারকারীরা

  • এসকে সাহেদ, লালমনিরহাট
  • প্রকাশিত ১৭ জুলাই ২০২১

লালমনিরহাটে কোরবানির ঈদকে ঘিরে ভারতীয় গরু পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত ভারতীয় গরু সীমান্ত পাড় করে এনে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজাররে দেশী গরুর সাথে বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীর লাশ এখনো ফেরত পায়নি স্বজনরা।

জানা গেছে, জেলার ২৮৫ কিলোমিটার ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্তের প্রায় ৭৪ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়াবিহীন অবস্থায় রয়েছে। কাঁটাতারের বেড়াবিহীন সীমান্তগুলো বুড়িতিস্তা, ধরলা ও তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত। কোথাও কোথাও রয়েছে দূর্গম চরাঞ্চল। এই সুযোগে কোরবানির ঈদে গরুর চাহিদার উপর নির্ভর করে গরু পাচারকারিরা বেপোরয়া হয়ে উঠেছে। সীমান্তের দহগ্রাম, দৈইখাওয়া, কালীগঞ্জ, চাপারহাট, গোড়ল, কুটিয়ামঙ্গল, দূর্গাপুর ও মোগলহাটসহ আন্ততঃ ১১টি সীমান্ত দিয়ে দেদারছে ভারতীয় গরু আসছে। এসব ভারতীয় গরুর বেশির ভাগ ধরলা নদী দিয়ে নৌকা যোগে এনে কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ি ও লালমনিরহাটের বড়বাড়ি হাটে বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়াও সপ্তাহের শনিবার-বুধবার জেলার কালীগঞ্জের শিয়াল খোওয়ায়হাট। শুক্রবার-সোমবার চাপারহাট ও শনিবার-মঙ্গলবার দূরাকুটিহাটে চোরাইপথে আসা এসব ভারতীয় গরু দেশি গরুর সাথে মিশিয়ে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। ওইসব গরু হাটে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকা, চট্টগ্রাাম, কুমিল্লা, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার গরুর পাইকার এসে ট্রাকভর্তি করে ওইসব গরু নিচ্ছে।

এদিকে অবৈধপথে ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশীর লাশ এখনো ফেরত দেয়নি বিএসএফ। গত ৩০জুন ভারত থেকে গুরু নিয়ে ফেরার পথে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার যুবক রিফাত হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ। বিজিবি ও বিএসএফ’র পতাকা বৈঠকের ১৬দিন পেরিয়ে গেলেও লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। অপরদিকে গত ১৪জুলাই ভোর রাতে ভারত থেকে গুরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের ফলিমারী গ্রামের সুবল চন্দ্র রায় ওরফে সাদ্দাম (৩০) এর লাশও ফেরত দেয়নি বএসএফ। এছাড়া জেলার পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছোঁড়া গুলিতে জসিউল মিয়া (৩৫) বাংলাদেশি গরু পাচরকারী গুরুতর আহত হয়ে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর পরেও গরু পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা প্রতিদিনই কোন না কোনভাবে জিবনের ঝুঁকি নিয়ে গরু পার করছে।

জানা গেছে, লালমনিরহাট ২৮৫ কিলোমিটার সীমান্তে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি, রংপুর ৫১ বিজিবি ও রংপুর ৬১ বিজিবি দায়িত্ব পালন করে আসছে। সীমান্তে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে তিনটি পৃথক ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করছে। আইন শৃংখলা বাহিনী গরুর হাটে অভিযানে গিয়ে স্লীপ দেখে ফিরে আসে। প্রকৃত অর্থে এটা ভুয়া স্লিপ ও অযুহাত মাত্র। কারন গরু পাড়াপাড়ে নিষেজ্ঞা রয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, এক জোড়া ভারতীয় গরু পাচার হয়ে আসেলে সীমান্ত রক্ষীবাহিনী, অন্যান্য বাহিনী, রাজনৈতিক কর্তা ব্যক্তিরা অর্থ পেয়ে থাকে। আর এভাবেই গরুর অবৈধ ব্যবসা করে সীমান্ত সংলগ্ন হাটের ইজারাদার ও চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলররা কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads