• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
আখাউড়ায় পশু বিক্রিতে খুশি খামারিরা

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

আখাউড়ায় পশু বিক্রিতে খুশি খামারিরা

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ১৮ জুলাই ২০২১

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চলমান কঠোর লকডাউন শিথিল করায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার জমে উঠেছে পশুর হাটে। তবে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পশুরহাট নিয়ে খামারি ও পারিবারিক ভাবে পালনকারী গৃহস্থদের মধ্যে শঙ্কা তৈরী হলে ও লকডাউন শিথিল করায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গত ৩ দিন ধরে চলছে স্থানীয় বাজারে পশু বেচাকেনা। এদিকে একাধিক খামারি জানায়, স্থানীয় বাজার থেকে তুলনামূলক গ্রামের মধ্যে পশু বেচা কেনা হচ্ছে বেশী। তবে পশু বিক্রিতে লাভ হওয়ায় খুশি খামারি ও পারিবারিক ভাবে পালনকারী গৃহস্থরা।

একাধিক খামিরা জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে পশু নিয়ে দুুশ্চিন্তার মধ্যে থাকলেও অনলাইনের মাধ্যমে পশু বিক্রি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ও পরে পশুর হাট বসায় তাদের চিন্তা দুর হয়। পাড়া মহল্লার বেশীভাগ লোকজন ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু খামারে দেখে তারা ক্রয় করেনে বলে জানায়। আবার অনেকে ঝামেলা এড়াতে তাদের ক্রয়কৃত গরু ঈদের আগ পযর্ন্ত তাদের রেখে যান। এ জন্য কয়েন দিন লালন পালনে দিতে হয় বাড়তি কিছু টাকা।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৫০৬ টি খামার সহ, পারিবারিক ভাবে কৃষক তাদের বাড়িতে মোটাতাজাকরনসহ মোট ১৩ হাজার ৮৩২ টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়। এরমধ্যে গরু ১১১৫০টি মহিষ ৩৬৩টি ও ছাগল ভেড়া ২৩১৯টি রয়েছে।

সেই সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় সদর উপজেলাসহ অন্যান্য স্থান থেকে আরো ২ থেকে সাড়ে ৩ হাজার পশু আসবে বলে আশা করছেন। এ উপজেলায় যে পরিমান পশু কোরবানি করা হবে তা স্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে প্রাণী সম্পদ অফিস জানায়। তারা জানায় কোরবানির পশুর কোন সংকট নেই। স্থানীয়দের উৎপাদিত পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা মেটানো যাবে।

খামারি মো. মাহফুজ মিয়া বলেন ঈদকে কেন্দ্র করে এ বছর ৩০ টি গরু নিয়ে একটি খামার গড়ে তুলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে লকডাউন শিথিল করা আর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে অনলাইন ‘ফেসবুক’-এর মাধ্যমে পশু কেনাবেচার প্লাটফর্ম গড়ে তুলায় আমাদের পশু বিক্রি নিয়ে চিন্তা দুর হয়। অনলাইনের মাধ্যমে ৬টি আর স্থানীয় বাজারে এপর্ন্ত তিনি ১৫ টি গরু বিক্রি করেছেন বলে জানায়। তিনি বাকি সময়ের মধ্যে সব গরু বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

মো. তাজু ভূইয়া বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদে বিক্রি করতে দেশীয় পদ্ধতিতে তিনি ১০টি গরু লালন পালন করেছেন। আমাদেরর ও যেমন গরু বিক্রি করতে হবে ক্রেতারা ক্রয় করে নিতে হবে এই দুয়ের মধ্যে নানা কৌশলে পশুর হাট ছাড়া ৪টি গরু তার বিক্রি হয়। আর বাকি ৩টি গরু পশুর হাটে ২টি বিক্রি হয়েছে বলে জানায়।

মো. আল-আমিন মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ধারদেনা করে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য ১০টি গরু দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করেন। গরু কেনা, লালান পালন, খাবার, ওষধসহ অনেক টাকা ব্যয় হয় তার। বর্তমান এ পরিস্থিতিতে গরু নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে ও তা দুর হয়ে যায়। বাজারে না তুলে খামারের মধ্যে তার ৫টি গরু বিক্রি হয়। বাকী ৫টির মধ্যে ৪টি গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানায়। এ বছর গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে ও অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো লাভ হয়েছে।

মো. হুমায়ুন মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে তিনি ৩টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন। গরু বিক্রি করতে ফেসবুক গ্রুপে গরুর ছবি আপলোড দেওয়ায় লকডাউনের মধ্যেই গরু বিক্রি হয়ে যায়। ওই ৩টি গরু বিক্রিতে ভালো টাকা লাভ হয়। মো. শিকদার হোসেন বলেন, গত ৬ বছর ধরে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গরু লালন পালন করে বিক্রি করছেন। এবছর তার খামারে ২২টি গরু রয়েছে। তিনি বলেন গত বছর বাড়িতে ৩টি গরু বিক্রি হয়। বাজারে হয়েছে ১৫টি। এবার বাড়িতে হয়েছে ১১টি বাজারে ৯ টি। তিনি আশাবাদি ঈদের আগে বাকি গরু বিক্রি হবে।

ক্রেতা মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, বর্তমান সময় ভালো না । তাই গ্রাম থেকে একটি ৬০ হাজার টাকায় গরু কেনা হয়। মো. রাসেল মিয়া বলেন, বাজারে অনেক ঝামেলা তাই নিজ গ্রামে গড়ে উঠা খামার থেকে ১টি গরু দেখে ৬৫ হাজার টাকায় কেনা হয়। রাখার ঝামেলা থাকায় ওইখানেই রেখে আসা হয়।

শামসু মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সব সময় বাজার থেকে গরু কেনা হয়। এখন পরিস্থিতি ভালো না । তাই ঝামেলায় না গিয়ে গ্রাম থেকেই গরু কেনা হয়। গ্রামের হওয়ায় পালন নিয়ে কোন বাড়তি চিন্তা নেই।

তাছাড়া পৌর শহরসহ উপজেলার বেশী ভাগ পারিবারিক ভাবে পালনকারী লোকজনের গরু বিক্রি প্রায় শেষ হয়েছে।

আখাউড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. কামাল বাশার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, এ উপজেলার কৃষক ও খামারিরা দেশীয় পদ্ধতিতে যত্ন নিয়ে গরু লালন পালন করছে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পশু বেশী রয়েছে। স্থানীয়দের উৎপাদিত পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা মেটানো যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads