• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে দুদিন পর মারা গেলেন ছাত্রলীগ নেতা মাসুম

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে দুদিন পর মারা গেলেন ছাত্রলীগ নেতা মাসুম

  • শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ জুলাই ২০২১

ঈদের দিনে কোরবানির যাবতীয় কর্মযজ্ঞ শেষে বিকালে বন্ধুদের (ছাত্রলীগ কর্মী) সঙ্গে ঘোরাফেরা আড্ডাতে ব্যস্ত থাকেন ছাত্রলীগ কর্মী সৈয়দ মাসুম আহম্মেদ। পরে রাতের শেষের দিকে এক বন্ধু ছাত্রনেতার সঙ্গে বাড়ি ফিরেন মাসুম। তবে বাড়িতে ঢুকে নিজের তালা বন্ধ ঘরের সামনে আসতেই বিস্মিত হয়ে যান তিনি। ঘরের তালা ভাঙা কেন এমন ভাবনা ভাবতে ভাবতেই অন্ধকার রুমে প্রবেশ করে মাসুম। সেই ঘরের ভিতরে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা ঝাপটে ধরে এলোমেলো কোপাতে থাকে মাসুমকে। উপর্যুপরি কোপের মধ্যেই চিৎকার করতে থাকে সে। বাড়ির অন্য ঘরের দরজাগুলো বাইরে থেকে আটকানো থাকাতে কেউ সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসতে পারেনি।  মৃত্যু নিশ্চিত জেনে দুর্বৃত্তরা চলে গেলে মাসুন নিজেই হামাগুড়ি দিয়ে ভাইয়ের দরজা বাইরে থেকে খুলে দেন। পরে তাকে মুমূর্ষ অবস্থাতে উদ্ধার করে হাসপাতেলে নেওয়া হয়। বুধবার ভোর রাতে এমনি বিভৎস হামলার ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পৌর শহরের বেড়াইদের চালা গ্রামে। হামলায় শিকার ছাত্রলীগ কর্মী  সৈয়দ মাসুম আহমেদ দুদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ শুক্রবার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।

নিহত মাসুম ওই গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের  ছোট ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের স্বজনরা জানান, ঈদের দিনে কোরবানি শেষ করে বিকালে ঘুরতে বের হয় মাসুম। পরে রাতের শেষের দিকে তার বন্ধু জুবায়েরের সঙ্গে বাড়ি ফিরে। বাড়ির কাছেই মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে দিয়ে যান জুবায়ের। পরে বাড়িতে এসে নিজের ঘরেই তালা ভাঙা দেখে। ঘরে ঢুকতেই আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়  মাসুম । এ সময় হামলাকারীরা বাড়ির অন্য সব রুমের  দরজার বাইরে থেকে আটকে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। নিজের ঘরে ফেলেই উপর্যুপরি কুপিয়ে মৃত্য নিশ্চিত ভেবে ফেলে চলে যা দুর্বৃত্তরা। পরে মাসুম রক্তাক্ত অবস্থাতে হামাগুরি দিয়ে ভাইয়ের রুমের দরজার বাইরে থেকে খুলে দেয় । এ সময় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আলহেরা হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৱ

তারা আরো জানান, অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসক রেফার করেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত ঢাকা নিওরোসাইন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে দুদিন চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে আজ শুক্রবার তিনি মারা যান।

নিহত মাসুমের স্বজন ফাহাদ আহমেদ জানান, নিহত মাসুম, ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল। বড় এক ভাই ও এক বোন রয়েছে তার। সে ময়মনসিংহ পলিটেকনিট থেকে ডিপ্লোমা সাইন্সে পড়াশোনা শেষ করে। সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে সক্রিয় কর্মী ছিল। এমন নৃশংসতায় তার প্রাণ যাবে ভাবতেই আমরা নিজেদের ধরে রাখতে পারি না।

তিনি বলেন, দ্রুত এ হত্যার মুল আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকিরুল হাসান জিকু বলেন, মাসুম আমাদের সহযোদ্ধা। ছাত্রলীগের একজন আদর্শ সৈনিক। সে ছাত্রলীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। এ নৃশংস হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। মাসুমের হত্যাকারিদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। তার প্রকৃত বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগ সর্বদায় সোচ্ছার থাকবে রাজপথে।

গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন জানান, এ নৃশংস হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শোকবার্তা দিয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, পুলিশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে হত্যা রহস্য উন্মোচনে। নিহতের ভাইয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads