• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
১৫ বছরেও চালু হয়নি ২০ শয্যার হাসপাতাল

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

১৫ বছরেও চালু হয়নি ২০ শয্যার হাসপাতাল

  • খায়রুল আহসান মানিক, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই ২০২১

২০০৬ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ২০ শয্যা বিশিষ্ট গোহারুয়া হাসপাতাল করা হলেও গত ১৫ বছরেও পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হয়নি। হাসপাতালটি পুরোদমে চালু না হওয়ায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চার উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাসপাতালটির ছয়টি ভবন এখন ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। অনেক অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে।

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১৫ এপ্রিল হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০০৬ সালের ১৭ অক্টোবর শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান এই হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু কোনো চিকিৎসক পদায়ন না করে উদ্বোধন করায় শুরুতেই হোঁচট খায় হাসপাতালটি। ২০১৪ সালে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে হাসপাতালটি চালু ও প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে চিঠি দেন কুমিল্লার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান। ওই বছরই হাসপাতালটির জন্য ছয়জন ডাক্তার ও ছয়জন নার্সের মোট ১২টি পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু জুন মাসে নিয়োগ দেওয়া হয় মাত্র একজন চিকিৎসা কর্মকর্তাকে। ওই বছরের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি এ হাসপাতালে ছিলেন কাগজে কলমে। তিনি যাওয়ার পর দুই নারী চিকিৎসক, একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও গাইনি বিশেষজ্ঞ কিছুদিন দায়িত্ব পান। তাদের কেউ বাস্তবে আসেনি। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঢাকায় প্রেষণে চলে যান গাইনি চিকিৎসক। আর চিকিৎসা কর্মকর্তা সপ্তাহে দুইদিন এই হাসপাতালে ও চারদিন নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করেন। কিছুদিন পর তিনিও বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। তবে এলাকাবাসী বলছেন, আর কেউ না থাকায় তিনিও বাস্তবে কোনো চিকিৎসা দেননি এই হাসপাতালে। এরই মধ্যে প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে যায় হাসপাতালটি। ২০১৭ সালে স্থানীয় সাংসদ তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী (বর্তমান অর্থমন্ত্রী), তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসপাতালটি পরিদর্শন করে পুনরায় পুরোদমে চালুর আশ্বাস প্রদান করেন। এরপর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। ২০১৭ সালে ১৩টি পদ সৃষ্টি করা হয়। যেখানে মোট ১৮জন নিয়োগ পাওয়ার কথা। কিন্তু তারপরও আলোর মুখ দেখেনি হাসপাতালটি। ২০১৯ সালে এক চিকিৎসা কর্মকর্তা দায়িত্ব দেওয়া হয় এই হাসপাতালে কিন্তু তিনি একা থাকায় তিনিও অন্যত্র বদলি হন। ২০২০ সালের জুন মাসে ৫ জনকে পদায়ন করা হলে বর্তমানে এই পাঁচজন আউটডোরে সেবা দিচ্ছেন হাসপাতালটিতে। তবে ইনডোর সেবা দেওয়ার জন্য এখনো কোনো শয্যা স্থাপন করা হয়নি হাসপাতালটিতে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে বর্তমানে কর্মরত আছেন পাঁচজন। একজন করে আবাসিক চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা দেন। আর একজন সিনিয়র ব্রাদার ও ওয়ার্ডবয় অন্যান্য বিষয়গুলো দেখভাল করেন। তবে বহির্বিভাগের সেবা শেষ হলে সিনিয়র ব্রাদার ও ডাক্তাররা হাসপাতালটি ত্যাগ করেন।

নাঙ্গলকোট উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা দেবদাস দেব বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ বছরের মধ্যে একটা ভালো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’

কুমিল্লার সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসেন বলেন, কুমিল্লায় চিকিৎসক সংকট রয়েছে। হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হলে বাড়তি চিকিৎসকের দরকার হবে। যা দেওয়ার সামর্থ্য বর্তমানে আমাদের নেই। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে গেলে ইনডোর ও আউটডোর দুটোতেই চিকিৎসা সেবা চালু করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads