• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪২৯
এএসপিসহ ৩ সিআইডি সদস্য বরখাস্ত

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

দিনাজপুরে মা ও ছেলে অপহরণ

এএসপিসহ ৩ সিআইডি সদস্য বরখাস্ত

  • মো. শাহাদৎ হোসেন শাহ, দিনাজপুর
  • প্রকাশিত ২৮ আগস্ট ২০২১

দিনাজপুরে মা ও ছেলে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রংপুর সিআইডি জোনের এএসপি সারোয়ার কবীর সোহাগসহ ৩ সিআইডি পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রংপুর সিআইডি জোনের ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতাউর রহমান আজ শনিবার বাংলাদেশের খবরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রংপুর সিআইডি জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সারোয়ার কবীর সোহাগ, উপ-সহকারী পরিদর্শক হাসিনুর রহমান ও কনেস্টবল আহসানুল হক ফারুককে পুলিশের অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদেরকে কর্র্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনেস্টবল আহসানুল হক ফারুককে আজ সকালে তিনি নিজেই পুলিশ অধ্যাদেশ অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। অপরজন বিসিএস ক্যাডারের একজন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গতকাল শনিবার দুপুরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সিআইডি পুলিশের সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দাইল গ্রাম থেকে মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে অপহরণ এবং ২৪ আগস্ট রাতে মুক্তিপন গ্রহণের সময় পুলিশের অভিযানে ওই ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন আটকের বিষয়টি সিআইডি সদরদপ্তর ঢাকায় চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। তারপর থেকেই সিআইডি পুলিশের ৩ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়। গত ২৫ আগস্ট সিআইডি সদর দপ্তরের নির্দেশে দিনাজপুর সিআইডি জোনের বিশেষ পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়কে ঘটনাটি অনুসন্ধান করে আটক ৩ সিআইডি পুলিশ সদস্য কি ধরনের অপরাধ করেছেন তা অবহিত করতে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দিনাজপুর সিআইডি জোনের বিশেষ পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় জানান, তিনি গত ২৫ আগস্ট সিআইডি সদর দপ্তরের নির্দেশে এই ঘটনার অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন। পরদিন ২৬ আগস্ট থেকেই অনুসন্ধান শুরু করা হয়।

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অপহৃত জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে গত ২৫ আগস্ট চিরিরবন্দর থানায় একটি অপহরণ, চাঁদাবাজি, লুন্ঠন, ক্ষতিসাধন ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৩ সিআইডি পুলিশসহ ৫ জন গ্রেপ্তার করা হলেও এজাহারনামীয় অপর ৫ জন আসামি এখনও পলাতক রয়েনেছ। মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে ওই দিনই দিনাজপুর ডিবি পুলিশকে মামলাটি তদন্তের জন্য চিরিরবন্দর থানা থেকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মামলার অন্যতম আসামি দিনাজপুর শহরের নিমনগর মহল্লার ইনামুল হকের ছেলে ফসিউল আলম পলাশ (৩৫) গত ২৫ আগস্ট রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসুর কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার সাক্ষী হিসেবে ভিকটিম জহুরা বেগম ও তার ছেলে এজাহারকারী জাহাঙ্গীর আলম নিজেও ওই দিন রাতে বিচারকের নিকট জবানবন্দী দিয়েছেন। ২৬ আগস্ট মামলার অন্যতম সাক্ষী চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দাইল গ্রামের আফতাব উদ্দীনের ছেলে কামরুল ইসলাম ও একই উপজেলার পূর্ব সাইতাড়া গ্রামের ফজলার রহমানের পুত্র আফতাবুর জামানের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘটনার ভিকটিম জহুরা বেগম ও জাহাঙ্গীর আলমকে দিনাজপুর জেল কারাগারে নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

তিনি জানান, ঘটনাটি যেহেতু সিআইডি পুলিশের ৩ সদস্য জড়িত বিষয়টি সিআইডি সদর দপ্তর, পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণায়ে পত্র মারফত অবহিত করা হয়েছে।

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশ পেলেই খুব শিগগির আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads