• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
টিকা নেওয়ায় 'শারীরিক কষ্ট দূর হয়েছে' খোদেজা বেগমের

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

টিকা নেওয়ায় 'শারীরিক কষ্ট দূর হয়েছে' খোদেজা বেগমের

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রথম দিকে টিকা নিয়ে গ্রামে গঞ্জে মানুষ নানা কথা বলেছিল । করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয় ভিতি নিয়ে গত মাসে গণটিকা শুরু হওয়ায় কেন্দ্রে গিয়ে প্রথম ডোজ তিনি নিয়েছেন । টিকা নেওয়ার আগে তার স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হতো। প্রায় তার শরীরে জ্বর হতো। কিন্তু টিকা নেওয়ায় এখন আর কোন সমস্যা হয়নি। তার যেন অনেকটাই শারীরিক কষ্ট দুর হয়েছে। তিনি বলেন টিকার বিকল্প নেই। মানুষ শুধু অপপ্রচারে ব্যস্ত থাকে বেশী। পৌর শহরের দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার পর খোদেজা বেগম (৬৮) নামে এক নারী এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, তার এক ছেলে ও ছেলের বউ গণ টিকা দিতে এসেছেন। সহজে টিকা দিতে পেরে তিনি খুবই খুশি।

এদিকে সারা দেশের ন্যায় মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ৫ টি কেন্দ্রে একযোগে করোনার গণটিকা দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন শৃঙ্খলভাবে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন প্রথম ডোজ গ্রহীতারা। পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় টিকা কার্ড হাতে নিয়ে কেন্দ্রেগুলোতে হাজির হন ২৫ বছর ঊর্ধ্বে তরুণ-তরুণী, নারী পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার টিকা প্রত্যাশীরা।

এ উপজেলার ৫টি কেন্দ্রে হলো পৌর শহরের জাহানারা হক মহিলা কলেজ,দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় , মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় , মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ও ধরখার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে আসা উপজেলার মোগড়া এলাকার মো.খোরশেদ মিয়া (৮০) বলেন, স্বাভাবিক ভাবে তার চলাফেরা করতে তার খুবই কষ্ট হতো। দিন দিন তার দৃষ্টিশক্তি যেন অনেকটাই কমছে। করোনার টিকা নিয়ে মানুষ নানান কথা বলায় তার কিছুটা মনের মধ্যে ভয় তৈরী হয়। গণটিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ায় প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর তার সেই ভয় দুর হয়ে মনোবল অনেকটাই যেন চাঙ্গা হয়ে আছে। তিনি বলেন প্রথম ডোজ নেওয়ার আগে প্রায় তার শরীর খারাপ থাকতো। তাই তিনি টিকা দিতে ভয় হতো। কিন্তু সাহস করে টিকা নেওয়ার পর আগের থেকে তিনি অনেক ভাল আছেন। এখন পযর্ন্ত তার কোন শরীরের কোন সমস্যা হয়নি। তিনি আরও বলেন দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় নয়াদিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসে আধঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকা নিয়েছেন। টিকা নিতে পেরে তিনি খুবই খুশি। তাছাড়া তার স্ত্রী, দুই ছেলে টিকা নিয়েছেন বলে জানায়।

একই কেন্দ্রে মো. শাহআলম বলেন, কেন্দ্রে আসার পরপরই ক্ষণিকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকে অবশেষে তিনি শেষে তিনি দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন প্রথম ডোজ নেওয়ার আগে প্রায় সময় জ্বর মাথা ব্যাথাসহ অনেক সমস্যা হতো। প্রথমে টিকা নিতে ভয় পেলে ও পরে করোনা টিকার প্রচার প্রচারনা শুনে তার ভয় দুর হয়। তাই সাহস করে তিনি গণটিকার প্রথম ডোজ গ্রহন করেন। এরপর থেকে তার আর রোগ বালাই হয়নি। শরীরও অনেকটাই ভালো আছেন বলে জানায়। তাই অতি সহজে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পেরে আনন্দের বহিঃপ্রকাশের চিত্র তার মুখে ফুটে উঠে।

এদিকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের পর নয়াদিল গ্রামের গৃহিনী আয়েশা খাতুন বলেন, আমরা অতি সহজে টিকা পাওয়ায় এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদ জানান। আমরা একেবারে গ্রামাঞ্চলের অসহায় মানুষ। নেই কোন শিক্ষা ও। করোনার প্রকোপ যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সে টা যেনে খুবই খারাপ লাগতো। আমরা কোনোদিন চিন্তা করিনি এতো সহজে এ করোনা টিকা দিতে পারব। আমি দ্বিতীয় ডোজ নিতে পেরে তিনি অনেক খুশি । তার পরিবারে ৩ জন সদস্য টিকা নিয়েছেন বলে জানায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদুর রহমান জানান, দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে এ উপজেলায় ৫টি কেন্দ্র রয়েছে। যারা যে কেন্দ্র থেকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিল এখন সেই কেন্দ্র থেকে গ্রহীতারা টিকা নিচ্ছেন । প্রথম ডোজের টিকা কার্ড ছাড়া কাউকে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানায়। টিকাদান কার্যক্রমে ৩৫ জন স্বাস্থ্য কর্মী, সেচ্ছাসেবক ৪৫ জন ও পুলিশ সদস্য,আনসার ও বিভিন্ন সংগঠনের সেচ্ছাসেবীরা সার্বক্ষণিক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads