• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪২৯
পদ্মের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

পদ্মের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া পদ্ম ফুল যেন প্রকৃতিকে সেজেছে এক অপরূপ সৌন্দর্যে। দুর থেকে মনে হয় যেন কেউ ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে। পানির উপর বিছানো সারি সারি সবুজ পাতা আর পদ্মের নয়নাভিরাম দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। মনে আসে এক অন্য রকম প্রশান্তি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসু লোকজন আসছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ধর্মনগর গ্রামের কালিবাড়ি পদ্ম বিলে।

পদ্ম বিলে কেউ আসছেন পরিবারের সদস্য নিয়ে ,আবার কেউ বন্ধু বান্ধব, আবার কেউ আত্মীয় স্বজন নিয়ে বেড়াতে। বিকাল থেকেই তরুণ-তরুণীরা আড্ডা, নৌকা চড়া, আনন্দ আর হৈচৈ করে। ভ্রমণ পিপাসুরা যেন মাতিয়ে তুলেন পুরো এলাকা। ভ্রমণপ্রিয় লোকদের কাছে এ পদ্ম বিলটি যেন দিন দিন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়ে উঠেছে।

দর্শনার্থীরা নৌকায় ঘুরে বেড়ানো আর বিল জুড়ে পদ্মফুলের সাথে ছবিতোলে ফ্রেমে বন্দি করে রাখছেন অনেকেই। তবে দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে স্থানীয় লোকজনেরা খুবই তৎপর রয়েছে।

আখাউড়া থেকে ৮ কিলোমিটার দুরে কালিবাড়ি পদ্ম বিলটি অবস্থিত। আজ থেকে প্রায় ১শ বছর আগ থেকে বর্ষাকালে এই বিলে প্রাকৃতিক ভাবে পদ্ম ফুল জন্মে। এই কারণেই এই বিলটি পদ্ম বিল নামে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই বিলের মধ্যে অসংখ্য দৃষ্টি নন্দন সাদা লাল গোলাপী পদ্ম ফুলের ছড়াছড়ি। যেখানেই দৃষ্টি যাচ্ছে শুধু পদ্ম আর পদ্ম চোখে পড়ছে। নয়নাভিরাম পদ্মে প্রকৃতিকে এক অপরূপ সৌন্দর্যে যেন ফুটিয়ে রেখেছেন। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত ভ্রমনপ্রিয় লোকদের পদচারণায় মোখরিত হয়ে উঠে ।

এই বিলের মধ্যে আছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। আগত লোকজনরা মনের আনন্দে ঘুরে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে অবলোকন করছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ নৌকা দিয়ে ঘুরে পদ্ম ফুলের সাথে ছবি তুলে ফ্রেমে নিজেকে বন্দি করে রাখছেন। গোটা জেলার মধ্যে এ বিলটি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।

উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘেষা কালিবাড়ি পদ্ম বিলের সংলগ্ন স্থানে বাংলাদেশ ও ভারত দুদেশের সীমানা পিলার রয়েছে। পিলারের পশ্চিম পাশ বাংলাদেশের আখাউড়া কসবা, আর পূর্বপাড় উত্তর পূর্ব ভারতের ত্রিপুরার মাধবপুর গ্রাম।

পৌর শহরের দেবগ্রাম এলাকা থেকে আসা মো. ফরিদ মিয়া বলেন, অনেক দিন ধরে থোকাও তিনি বের হয় নাই। তাই তিনি স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছেন। তবে এই বিলে গত বছরের চাইতে অনেকে কম পদ্ম এসেছে। অনেকেই পদ্ম ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে। যা দেখতে খুবই খারাপ লাগছে। তবে প্রাকৃতিক এই দৃশ্য দেখতে খুবই তাদের ভালো লেগেছে বলে জানায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেড্ডা এলাকা থেকে আসা ইলিয়াস হোসেন বলেন, লোকমুখে শুনে চার বন্ধু মিলে পদ্ম দেখতে এখানে আসেন। দৃষ্টি নন্দন পদ্মফুল দেখে তারা খুবই আনন্দিত।

পৌর শহরের মসজিদ পাড়া এলাকার গৃহিণী ফাল্গুনী বেগম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ দিন ধরে কোথাও ইচ্ছে করলেও বেড়াতে যেতে পারেন নি। তাই সময় সুযোগ হওয়ায় ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখানে তারা এসেছেন। সারি সারি ফুল দেখে তারা মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানায়।
মনিয়ন্দ ইউপির কালিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে বর্ষাকালে এই বিলটিতে পদ্মফুল ফুটছে। আগে লোক সংখ্যা কম হত। দিন যতই যাচ্ছে লোক সংখ্যা যেন আসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আগত লোকজনরা দেখতে এসে অনেকেই ফুল ছিড়ে নিয়ে যাওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, পদ্ম বিল দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। বিনোদন প্রিয় লোকদের কাছে এই স্থানটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্ষা মৌসুমে এ বিলে প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেওয়া পদ্মফুল এক দিকে যেমন বিলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে পাশাপাশি দর্শনার্থীদেরকেও মুগ্ধ করছে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন মনিয়ন্দ এলাকায় দুটি পদ্ম বিল রয়েছে। যা বিনোদনের জন্য ভালো স্থান। দর্শনার্থীরা এসে পদ্মের এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। তবে দেখা যাচ্ছে অনেকেই এখানে এসে ফুল ছিড়ে নষ্ট করছেন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads