• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জৈষ্ঠ ১৪২৯
দূর থেকে মনে হয় যেন সুমদ্র সৈকত, মুগ্ধ আগতরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

দূর থেকে মনে হয় যেন সুমদ্র সৈকত, মুগ্ধ আগতরা

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ অক্টোবর ২০২১

চারদিকে থৈ থৈ করছে পরিস্কার পানি। দূর থেকে দেখা যায়, পানির উপর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা লাল সাদা সবুজ রঙের দৃষ্টিনন্দন ঘর। ওইসব ঘর যেন ছোট বড় সবার নজর কাড়ছে। সেই সাথে খোলা জায়গায় দখিনা হাওয়া আর নির্ভেজাল নিশ্বাস মায়াভরা সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মাতিয়ে তুলছে এলাকা। 

এমন এক দৃশ্য দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া বড়বাজার-বরিশল হেলিডি রোডের তিতাস নদী মোহনার বরিশল বোয়ালিয়া বিলে। এ বিলের রাস্তার পাশে পানির মধ্যে বাঁশ আর টিন দিয়ে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের কৌঠা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টার। সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বরিশল গ্রামের প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেন ও ব্যবসায়ী নুরে আলম ভূইয়া এই দুইজন মিলে এটি নির্মাণ করেন। বর্তানে এটি স্থানীয় লোকদের মাঝে ব্যাপক সারা জাগিয়ে তুলেছে। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ৮ টা পযর্ন্ত আগত লোকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠছে।

এক দিকে তিতাসের মোহনায় দু’পাশে বর্ষার পানি থৈ থৈ করছে,অপরদিকে পানি উপর লাল, সবুজ, সাদা, হলুদ , আকাশিসহ বিভিন্ন রঙের দৃষ্টি নন্দন ঘরের নৈসর্গিক রূপে মানুষকে আকর্ষণ করছে যেন সর্বক্ষণ। মনে হয় যেন এটি কোন এক সুমদ্র সৈকত। বর্তমানে এটি যেন এক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে এই দর্শনীয় স্থানটি দিন দিন ভ্রমন পিপাসীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বিকালে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় থাকছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রঙ-বেরঙের ১০টি ঘর। উপরে রয়েছে টিনের চাল। নিচে বাঁশের খুটি। চারদিকে বাঁশ বেত দিয়ে বেড়া। এক একটি ঘর ৭-৮ হাত লম্বা। সেই সাথে প্রতিটি ঘরের দূরত্ব রয়েছে অনেক। ভেতরের সার্বিক পরিবেশও রয়েছে ভালো। বিকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন একে একে আসছেন। পানির উপরে এটি হওয়ায় স্বল্প সময়ে বেশ যেন সারা ফেলেছে।  যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় বিভিন্ন যানবাহন করে আখাউড়া,বিজয়নগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন। কেউ স্ত্রী, পুত্র নিয়ে, কেউ বা এসেছেন পরিবারের সদস্য নিয়ে ,আবার কেউ বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন নিয়ে।

পৌর শহরের মসজিদ পাড়া এলাকার মো. পারভেজ মিয়া বলেন, তার ছেলে ও মেয়ে লোকমুখে শুনেছে পানির উপর রেস্টুরেন্ট হয়েছে। তাই বিকালে স্ত্রীসহ ছেলে মেয়েকে নিয়ে আসা। বিলের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন হোটেল, সেই সাথে তিতাস পাড়ের মোহনায় পড়ন্ত বিকালে মুক্ত বাতাস আর নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে খুবই ভালো লাগছে বলে জানায়।

দুর্গাপুর এলাকার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে ভালো নিরিবিলি রিসোর্ট নেই যেখানে বসে অবসর সময় কাটানো যায়। বরিশল বিলে মুক্ত বাতাস নৈসর্গিক পরিবেশ আর খোলা জায়গায় পানির মধ্যে এটি তৈরি করায় দেখতে খুবই ভালো লাগছে। তাই দুই বন্ধু মিলে এখানে আসা। তিনি আরও বলেন এই রিসোর্টের খাবারের মান ও রয়েছে অনেকটাই ভালো।

গৃহিণী লিমা আক্তার বলেন, গত ২ দিন আগে তার ছোট বোন ও মেয়ে নিয়ে তার বাড়িতে এসেছেন। তাই বিকালে তারা এখানে বেড়াতে এসেছেন। বাঁশের কোঠায় তারা নাস্তা ও চা খেয়েছেন। তারা বলেন, এখানে আগ থেকে কোন খাবার তৈরী থাকে না। খবারের অর্ডার দেওয়া হলে তৈরী করে পরিবেশন করা হয়।

মোগড়া এলাকার মো. জাফর মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘ বছর পর দেশে এসেছেন। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ইচ্ছা থাকলেও কোথাও কোন যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই পরন্ত বিকালে স্ত্রী,ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ নিয়ে আসা। তিতাস পাড়ে দাঁড়িয়ে সুর্যাস্ত দেখা পরে বাঁশের কৌঠায় সবাই মিলে খাবার খাওয়া ছবি তোলা খুবই ভালো লেগেছে বলে জানায়।

বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিম মিয়া তিনি বলেন, পানির উপর হেটেল দেখতে ছেলে অনেক দিনের বাইনা। সময় সুযোগ না হওয়ায় এখানে আসা হয় নি। তাই স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে আজকে এখানে আসা। মুক্ত হাওয়া আর নিরিবিলি পরিবেশ সত্যি খুবই ভালো লেগেছে।

পৌর শহরের খড়মপুর এলাকার মো. তানভীর হাসান বলেন, বাড়িতে নতুন আত্মীয় এসেছে। সবাই মিলে এখানে ঘুরতে এসেছেন। নতুন রিসোর্টের খাবার মুক্ত বাতাস,তিতাস পাড়ের সৌন্দর্য সব মিলিয়ে তাদের খুবই ভাল লেগেছে বলে জানায়।

বাঁশের কৌঠার চাইনিজ রেস্টুন্টে অ্যান্ড পার্টি সেন্টারের মালিক মো. আলমগীর হোসেন ভূইয়া বলেন, এখানে কোন বিনোদনের জায়গা নেই মানুষ বসে গল্প করবে অবসর সময় পার করবে। এসব কিছু চিন্তা করে তিতান নদীর মোহনায় বরিশল বিলের মধ্যে এটি তৈরী করা হয়। ইতোমধ্যে ভালো সারা পড়েছে। এখানে উন্নত মানের বিভিন্ন রকমারী খাবার বিক্রি হয়। দুরদুরান্ত থেকে লোকজন এই নিরিবিলি পরিবেশে সময় পার করছেন। তিনি আরও বলেন চাইনজ হোটেলে সেব সব খাবার পাওয়া যায় আমরা চেষ্টা করছি খাবারের মান ভালো রেখে ওইসব খাবার দিতে। বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পযর্ন্ত খোলা থাকে তাদের এই সেন্টার বলে জানায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads