• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

বিদ্যুতের আওতায় ভোলার "কুকরি-মুকরি" পর্যটন কেন্দ্র

  • অচিন্ত্য মজুমদার, ভোলা
  • প্রকাশিত ১৫ নভেম্বর ২০২১

দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুকরি-মুকরি বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। ভোলার মূল ভূখন্ড থেকে বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে দুর্গম এই জনপদকে। ফলে পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি, ছোটখাটো শিল্প-কারখানা তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কুকরি-মুকরির মানুষ। 

সরেজমিনে ভোলার সর্ব দক্ষিণের চরফ্যাশন উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন চর কুকরি-মুকরি ঘুরে জানা গেছে, চর কুকরি-মুকরি দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। নদীপথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় সেখানে। বাহন একমাত্র ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পীডবোট। এখানকার অধিকাংশ মানুষ সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর বাকিরা পর্যটনের উপর নির্ভরশীল।

সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুকরি মুকরির বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন বহু পর্যটক আসেন। দ্বীপটির মনোরম সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও,বিদ্যুৎ না থাকায় এখানে রাত্রিযাপন ছিল খুবই বিড়ম্বনার। সন্ধ্যা নামার আগেই রাতের নীরবতা নেমে আসত এক সময়। বিচ্ছিন্ন এ দ্বীপটিতে কখনও বিজলিবাতি জ্বলবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি স্থানীয়রা।   বর্তমানে নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে জতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত করা হয়েছে এই জনপদকে। এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ।

বিদ্যুৎ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু না হলেও, আগেই ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। ছোট-খাটো শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করায় আগ্রহ বাড়ছে এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দা জেলে করিম মিয়া জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ হয়েও তারা এখন শহরের মতো সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। বিদ্যুৎ আসায় তাদের ছেলে মেয়েরা গভীর রাত অবদি পড়াশোনা করতে পারছে বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী জামাল মোল্লা জানান, চর কুকরি মুকরির অধিকাংশ মানুষ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। ফলে জেলেদের জালে ব্যবহারের জন্য প্লুট ও বয়া প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ আসায় এসব উপকরণ তৈরির একটি কারখানা স্থাপন করার ইচ্ছা রয়েছে তার। যার ফলে একদিকে যেমন তিনি আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন অন্যদিকে জেলেরাও স্বল্পমূল্যে সহজে তাদের এসব উপকরন হাতে পাবেন বলে জানান তিনি।

ভোলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো: আলতাফ হোসেন বলেন, ৩৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কুকরি-মুকরিসহ আশপাশের ১৬টি চরে ১ হাজার ৪শ ২৮ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এসব চরের ৭১টি গ্রামে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ৩৬ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধা লাভ করবে। গ্রাহকপ্রতি সরকারের ব্যয় হবে ৯৮ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ৫ টি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপিত হয়েছে এবং দুটি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎতায়নের কাজ করা হয়েছে। ফলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এই প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাপক উন্নতি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads