• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

লটারির মাধ্যমে যাচাই বাছাই

আখাউড়ায় ধানে ন্যায্যমূল্যে পেয়ে কৃষকের আনন্দের হাসি

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২১ নভেম্বর ২০২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে লটারির মাধ্যমে জয়ী হওয়া কৃষকরা সরকারি মূল্যে খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করেছেন। ফলে কষ্টে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পেয়ে আনন্দরে হাসি ফুটে উঠেছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। কিন্তু দীর্ঘ বছর ধরে সিন্ডিকেটের কবলে পড়ায় স্থানীয় কৃষকদের ধান বিক্রিতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে লটারির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা খুবই খুশি।

এদিকে আজ রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলণায়তনে আমন ধান সংগ্রহ অভিযানের কার্যক্রম উদ্ধোধন করা হয়েছে। এরই অংশ হিসাবে লটারির মাধ্যমে কৃষক যাচাই বাছাই করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার। খাদ্য গুদামে চলতি মৌসুমের আমন ধান সংগ্রহের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে কৃষি কার্ডধারী লটারি বিজয়ী কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান গুদামে নিয়ে বিক্রি করছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত) দায়িত্ব মো. কাউছার সজীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রৌণক আরা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী প্রমূখ। উপজেলা প্রশাসন, খাদ্য ও কৃষি বিভাগ এ আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে কৃষকরা স্বত:স্ফুর্ত ভাবে অংশ গ্রহন করেন। কৃষকদের মাধ্যমেই লটারিতে নাম বাছাই করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরকার আমন ধান ক্রয়ে লটারির মাধ্যমে কৃষকদের তালিকা প্রনয়ণ করা হয়। পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন থেকে ৩৩৬ জন কৃষকের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে ২১৩ জন কৃষককে ধান বিক্রির জন্য যাচাই বাছাই করা হয়। সরকারী ভাবে কৃষকের কাছ থেকে ২১৩ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ টাকা। কেজি ধরে প্রতি মন ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০৮০ টাকা। একজন কৃষক ১ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করতে পারছেন। এদিকে এই লটারির প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন কৃষকরা। লটারিতে বাদ পড়া কৃষকদের কাছ থেকে চাহিদা সাপেক্ষে পরবর্তীতে ধান সংগ্রহ করা হবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পৌর শহরের শহরের কৃষক মো. হেফজু মিয়া বলেন, এ মৌসুমে নিজেদের উৎপাদিত আমন ধান নিয়ে অনেকটাই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কারণ স্থানীয় বাজারে ধানের দাম অনেকটাই কম হওয়ায় বিক্রিতে অনেক লোকসান গুনতে হত। কিন্তু লটারির মাধ্যমে ধান বিক্রি সুযোগ পাওয়ায় খুবই ভাল লাগছে। মাথা থেকে বড় ধরনের দুশ্চিন্তা কমে গেছে। নিশ্চিন্ত মনে ধান দেওয়া হয় বলে জানান।

কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, একদিকে করোনা ভাইরাস অন্যদিকে জমির ধান সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কৃষি অফিসের তত্বাবধানে লটারিতে বিজয় হওয়ায় তিনি খুবই খুশি। কৃষক মো. শাহজাহান বলেন, অনেক কষ্টে এবার আমন ধান আবাদ করা হয়। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। জমিতে ধানের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় তিনি খুবই খুশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, লটারি হওয়ার পূর্বে ধান বিক্রি করতে ইচ্ছুক প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদের কৃষি কার্ড জমা নিয়ে তালিকাভুক্ত করা হয়। পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন থেকে ৩৩৬ জন কৃষকের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে ২১৩ জন কৃষককে ধান বিক্রির জন্য নির্ধারণ করা হয় । সরকারী ভাবে কৃষকের কাছ থেকে ২১৩ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ টাকা । অন্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে লটারির প্রক্রিয়ার কার্যক্রম করা হয়। তিনি আর বলেন যেসব কৃষক লটারিতে বিজয় হয়নি অথচ তাদের কাছে ধান রয়েছে, তারা তালিকাভুক্ত হতে কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়। অবশ্যই যাচাই বাচাই শেষে তাদের থেকে ধান নেওয়া হবে। এ জন্য কৃষকদের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।

উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাউছার সজীব জানান, উপজেলা ধান সংগ্রহ কমিটির নির্দেশনা ও কৃষি বিভাগ থেকে তিনি আরও বলেন তালিকাভুক্ত কৃষকদের নাম সরবরাহ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে চিটামুক্ত শুকনা ধান সংগ্রহ করা হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসের প্রদত্ত তালিকা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads