• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

বড়লেখায় কারচুপির অভিযোগ এনে পুনঃনির্বাচনের দাবি চেয়ারম্যান প্রার্থীর

  • বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ ডিসেম্বর ২০২১

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের দুটি কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস স্বপন।

গত শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাত ৮ টায় উপজেলার অফিসবাজারস্থ নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান তিনি। স্বপন আনারস প্রতীক নিয়ে ওই ইউপিতে প্রতিদ্বিতা করেছেন। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে গত ২৮ নভেম্বর এ ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস স্বপন অভিযোগ করেন, ‘২৮ নভেম্বর দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। ভোট শুরুর কিছু সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর লোকজন আমাদের দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেন। তারা জোরপূর্বক ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট কেড়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল দেন। এভাবেই ভোট হয়েছে। নৌকার প্রার্থীর লোকজন প্রশাসনের সহযোগীতায় কয়েকটি কেন্দ্র দখল করে রাখেন এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল দিয়ে ব্যালট বাক্সে ভরেছেন।

আব্দুল কুদ্দুস স্বপন বলেন, ‘মোহাম্মদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর এজেন্টরা সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জোরপূর্বক ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট কেড়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল দেন। ছোটলেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ২০০ ব্যালট পেপার ছিনিয়ে সিল মারে। এগুলো ধরা পড়ে। কিন্তু এর আগে আরও ব্যালটে সিল দেওয়া হয়। বোবারথল সেন্টারের ফলাফল পরিবর্তন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ফলাফল দেওয়া হয়েছে। যদিও ওই কেন্দ্রে ভোটের ফলাফলে নৌকার প্রার্থীর অবস্থান ৩ নম্বরে থাকার কথা। সুষ্ঠু ভোট হলে সকল কেন্দ্র মিলিয়ে নৌকার প্রার্থী দুই হাজারের বেশি ভোট পেতেন না।

স্বপন আরও বলেন, ‘মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আমরা আশস্ত ছিলাম। তিনি প্রার্থীদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বলেছিলেন এবারের নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ ফেয়ার হবে। কোনো ধরণের কারচুপি হবে না। কিন্তু নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে দেখি প্যাডে সিল নেই, কালি নেই। আমার এলাকার ৪টি কেন্দ্রে ভোট শুরুর পর এই অবস্থা দেখে প্রিজাইডিংকে বলি। প্রিজাইডিং আমাকে কিনে দিতে বলেন। আমি লাইব্রেরি থেকে প্যাড, কালি কিনে দেই। আমার সহযোদ্ধা বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাব উদ্দিনও একটি কেন্দ্রে প্যাড, কালি কিনে দেন। এটা কোন ধরনের নির্বাচন হয়েছে। আমার বোধগম্য হয়নি।

তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টায় মোহাম্মদনগর সেন্টার থেকে আমার ও বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাব উদ্দিনের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। ঘটনা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলি। তিনি এসে ৫ মিনিট থেকে চলে যান। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেনি। কিভাবে ভোট চুরি করা হয়েছে সকলেই দেখেছেন। আমাদের কাছে ভিডিও প্রমাণ আছে। কিন্তু আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। অভিযোগ জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি।

সবচেয়ে দুঃখজন ঘটনা ঘটেছে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়ে। ভোটের আগের দিন সকালে নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে মোহাম্মদনগর ও বোবারথল সেন্টারের পূর্বের প্রিজাইডিং পরিবর্তন করে পছন্দের প্রিজাইডিং অফিসার দেওয়া হয়। এভাবে সকল সেন্টারেই ঘটনাট ঘটেছে।’

পুনঃভোটের দাবি করে এই প্রার্থী বলেন, ‘দুটি কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে রিটার্নিং অফিসার বরাবর ১ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে পুনরায় সুষ্ঠু ভোট দিয়ে জনগনের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফল ঘটনানোর জন্য দাবি করছি। প্রতিকার না পেলে ট্রাইব্যুনালে মামলা করব।’

সংবাদ সম্মেলনে এলাকার সমাজসেবক শাহাজান উদ্দিন, জয়নুল ইসলাম, কামাল উদ্দিন, হাজী ওয়াইসুর রহমান, আং রুপ, ফখরুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, আজিম উদ্দিন, রিপন আহমদ, ময়না মিয়া, মামুন, মুমিন, আলবাব হোসেন অপু, মহি উদ্দিন টিটু, শাকির আহমদ, কয়েছ আহমদ, এনাম উদ্দিন, নছির উদ্দিন, হাজী আহমদ আলীসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads