• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
রোহিঙ্গাদের বর্জ্যে অনাবাদি কয়েকশ একর জমি

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

রোহিঙ্গাদের বর্জ্যে অনাবাদি কয়েকশ একর জমি

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ১৯ ডিসেম্বর ২০২১

রোহিঙ্গাদের বর্জ্যের কারণে চাষাবাদ হচ্ছে না কয়েক শত একর জমি। দীর্ঘ চার বছর ধরে জমির মালিকরা কোনো ধরনের চাষাবাদ করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিকার লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি, বরং রোহিঙ্গাদের বর্জ্য আরো নতুন নতুন জমিতে গিয়ে পড়ছে।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী পানবাজার এলাকার শরীফ আহামদ (৬০) বলেন, আমার মূল পেশা কৃষিকাজ, বাপদাদার আমল থেকে কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছি। কিন্তু ২০১৭ সালে ব্যাপকভাবে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে আমিসহ অনেক স্থানীয় মানুষের জন্য গলার কাটা হয়ে গেছে। এই রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা নিজেদের ঘরে রান্না করে খাবার তৈরি করে দিয়েছি, রাতে থাকতে দিয়েছি, নিজেদের ঘরের জিনিসপত্র দিয়ে তাদের ঘর তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু এখন তাদের ফেলা বর্জ্য এবং ব্যবহূত মলমূত্র আমাদের জমিতে এসে পড়ছে। কয়েক বছর ধরে এই অসনীয় অবস্থা, ফলে আমাদের সেই জমিতে আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। আমার ব্যক্তিগত অন্তত পাঁচ একর, প্রতিবেশী হানিফের আট একরসহ অনেক মানুষের জমিতে আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফেলা সেই মলমূত্র থেকে উৎকট গন্ধ এসে এতে ঘরেই বসাবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি গত তিন বছর অন্তত ৫০ বার জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তবে এখনো কোনো কাজ হয়নি, কেউ কথাও বলেন না।

উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল গফুর চৌধুরী বলেন, আমার জানা মতে অন্তত ১৫০ একর জমিতে রোহিঙ্গা বর্জ্য ফেলার কারণে স্থানীয়রা তাদের নিজস্ব জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না। এছাড়া প্রায় ১০০ একর জমি রোহিঙ্গাদের জন্য সুরক্ষা কর্মসূচী বা কাটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে সেখানে ঢুকে গেছে। ফলে সেই জমিতে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এক কথায় এখানে স্থানীয়রাই এখন পরবাসী।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন উখিয়া উপজেলার সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে, মানবিক কারণে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা এখন পুরু উখিয়াসহ কক্সবাজারের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে। মলমূত্র ফেলে, কবরস্থান করে, অথবা প্রতিদিন নতুন নতুন ঘর করে স্থানীয়দের জমি দখল করছে রোহিঙ্গারা। ফলে প্রতিনিয়ত অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন বলেন, অনেক জায়গায় রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়দের বেশ কিছু সমস্যা হচ্ছে, এটা সত্য। তবে আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় স্থানীয়দের জন্য সহায়তা থাকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads