গত দুই বছর আগে গলার ডানপাশে ছোট একটি ফোড়া উঠে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হতে থাকে এই ফোড়াটি। এখন ফোড়াটি বিশাল আকৃতি ধারণ করে ঝুলে আছে। পাশাপাশি সেখানে একাধিক বড় বড় ফোড়া উঠে ভিতরে ময়লা জমে আছে। অনেকে বলছে এটি জটিল টিউমার। টিউমার গুলো ভিতর থেকে বংশ বৃদ্ধি করছে।
এমনই জটিল রোগে ভুগছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার নয়াপাড়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ইউনুছ আলী। ৬৪ বছর বয়সী ইউনুছকে এলাকাতে সবাই ব্যারিস্টার নামেই চেনে। তিনি মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে। বাঁশের বেড়া তৈরি করে জীবন চলত নিঃসন্তান ব্যারিস্টারের।
স্ত্রীকে নিয়ে ছোট্ট একটি ভাঙ্গাচোরা টিনের ঘরে থাকেন তিনি। গলায় এই জটিল সমস্যা নিয়ে মৃত্যুর ক্ষণ গুণছিলেন এই বৃদ্ধ। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে প্রতিনিয়ত জটিল হয়ে উঠছে তার গলার সমস্যা।
গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তার নিজস্ব ফেসবুকে ব্যারিস্টারের চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে একটি পোষ্ট দেন। এরপর অসহায় ব্যারিস্টারের চিকিৎসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য শিবলী সাদিক।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে সাংসদ শিবলী সাদিকের নির্দেশে ঘোড়াঘাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রুবেল এবং ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক সরকার অসুস্থ ব্যারিস্টারকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেলে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন।
বৃদ্ধ ব্যারিস্টারের স্ত্রী কহিনুর বেগম বলেন,‘হামার স্বামী দুই বছর থেকে বিছনাত পড়ে আছে। টেকার অভাবে চিকিৎসা করাবার পাচ্ছি না। খায়া না খায়া হামাহেরে দিন যাচ্ছে। হামার এটিকার এমপির লোকজন আসা বুধবার হামার স্বামীক দিনাজপুর হাসপাতালে ভর্তি করছে। ডাক্তাররা আসা হামার স্বামীক দেখা গেছে। এখন চিকিৎসা চলিচ্ছে। হামার এমপিক আল্লাহ যুগ যুগ বাঁচা থুক।’
পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘আমি ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়ার পরপরই সাংসদ শিবলী সাদিক ফোন করে জানান, ওই বৃদ্ধের চিকিৎসার সকল দায়িত্ব আমার। তিনি আমাকে বৃদ্ধের পরিবারের সাথে আলোচনা করে দ্রুত মেডিকেলে ভর্তি করতে নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বৃদ্ধকে মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছি। বৃহস্পতিবার একাধিক চিকিৎসক মিলে একটি আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ। তার এই জটিল সমস্যার চিকিৎসার জন্য।’