প্রভাষক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন(৪৫)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রানীখার এমদাদুল বারী গাউছিয়া আলিম মাদরাসার ইতিহাস বিভাগের একজন প্রভাষক ছিলেন। তিনি নাছিরনগর উপজেলার ভূবন গ্রামের আব্দুল হাফিজের ছেলে। প্রত্যেক বৃহস্পতিবার মাদরাসার পাঠদান শেষে তিনি বাড়িতে যেতন। আবার শনিবার সকালে আবার মাদরাসায় ফিরে আসতেন। চাকুরি হওয়ার পর থেকে এই ভাবেই তিনি আসা যাওয়া করতেন। কিন্তু ওই শিক্ষকের আর মাদরাসায় ফিরে আসা হলো না। মাদরাসায় আসতেই ট্রাক্টরের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরাইল এলাকায় রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে ট্রাক্টরের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে তিনি মারা যান।
এদিকে মুহুর্তের মধ্যে ওই শিক্ষকের মৃত্যুর খবর মাদরাসায় পৌঁছলে শোকে স্তদ্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ সবাই। পাশাপাশি শোকে স্তব্ধ হয়ে যান গোটা এলাকা লোকজনও। কারণ এই মাদরাসার সকলের মধ্যমনি ও প্রিয় শিক্ষক তিনি। ট্রাক্টরের ধাক্কায় প্রাণ প্রিয় শিক্ষককে হারিয়ে এখন সবাই শোকাহত। প্রভাষক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন তার স্ত্রী ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।
এদিকে পুলিশের সহযোগিতায় শিক্ষককের মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
মাদরাসার শিক্ষক সানাউল্লাহ জানায়, দেলোয়ার হোসেন শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার মাদরাসায় থাকতেন। শুক্রবার মাদরাসা বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার ক্লাস শেষে বাড়িতে চলে যেতেন। শনিবার মাদরাসায় আসার পথে তিনি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন।
দেলোয়ার হোসেনের ভাই আতাউর রহমান জানায়, তিনি মাদরাসায় যেতে বাড়ি থেকে বের হন। কিছুক্ষণ পর ফোনে খবর পান তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
মুফতি শামসুল ইসলাম আল-হুসাইনী বলেন, স্যার ছিলেন একজন প্রকৃত মানুষ গড়ার কারিগর। তার হাতের ছোয়ায় আজ এই এলাকায় শিক্ষার আলোর ব্যাপক প্রসার ঘটে। এভাবে মৃত্যু হবে তা যেন তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
তার সহকর্মী শেখ আব্দুর রহমান মিলন স্যার বলেন দেলোয়ার হোসেন ছিলেন একজন গুণি আদর্শ শিক্ষক। কর্তব্যে পালনে তিনি কখনো অবহেলা করেন নি। শিক্ষার মান উন্নয়নে এই বিদ্যালয়ে তার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। শিক্ষার্থীদেরকে তিনি মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। তিনি আরও বলেন বিদ্যালয়ের অনেক কিছুতে তার সঙ্গে সমন্বয় করতে হত। পেশাগত কাজে তার সঙ্গে আমার বেশি সময় কেটেছে। দেলোয়ার হোসেন স্যারের এই ভাবে মৃত্যু হবে তা কখনও ভাবিনি।
খাঁটিখাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাজালাল আলম বলেন, রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি বালুবাহী ট্রাক্টর ওই শিক্ষককে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। নিহতের মরদেহ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।