• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
পাঠাগারের আদলে পূজা মণ্ডপ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

পাঠাগারের আদলে পূজা মণ্ডপ

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

থরে থরে সাজানো আছে বই। চারদিকে শুধু বই আর বই নজরে পড়ছে। এতে স্থান পেয়েছে বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের বিভিন্ন প্রকারের বই। এর মধ্যে গোরা, শেষের কবিতা, নুরজাহান, পদ্মা নদীর মাঝি, সূর্য দীঘল বাড়ি, তিতাস একটি নদীর নাম, জননীর গল্প, সাতকাহন- এমন একশ' বই শোভা পাচ্ছে। দেখে মনে হয় এ যেন একটা পাঠাগার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শ্রী শ্রী সরস্বতী মায়ের পুজা উপলক্ষে অরুণ সংঘ শনিবার দুইদিন ব্যাপি এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করে। রোববার শেষ হবে এ অনুষ্ঠান। সরস্বতী মায়ের পুজা উপলক্ষে ব্যতিক্রমী এই আয়োজন দর্শনার্থীদের বেশ নজর কেড়েছে।

তবে এখানেই শেষ নয়। দর্শনার্থীদের মাঝে বিলিও করা হচ্ছে বিভিন্ন বই। আগত দর্শনার্থীরা বাংলা সাহিত্যের সেরা বইয়ের পরিচিত হতে পেরে যেন খুশি।

এদিকে আগত লোকজনের মধ্যে অনেকেই সেলফি তুলছেন অস্থায়ী পাঠাগারের সামনে। বইগুলো দেখলে মনে হয় কোন বাড়ি বা দোকান কিংবা লাইব্রেরীতে তুলে এনে সাজানো হয়েছে। আলমারিগুলিও ধরার উপায় নেই যে সেগুলি কৃত্রিমভাবে তৈরি। সম্পূর্ণ স্থান জুড়ে বই আর বই এর যেন সমাহার ঘটিয়েছে তারা। এখানে প্রবেশ করলে মনে হবে শুধু বিনোদন নয় ভক্তির সঙ্গে পড়াশুনার দরকার। দৃষ্টিনন্দন এই ভাবে পাঠাগারের আদলে মণ্ডপ তৈরি করায় উদ্যোক্তাদের স্বাধুবাদ জানাচ্ছেন আগতরা। প্রশংসায় ভাসছে গোটা এলাকা।

অরুণ সংঘের প্রধান স্বমন্বয়ক বিশ্বজিৎ পাল বাবু বলেন “বর্তমানে এই প্রজন্মের অনেক শিশুরা জানেও না লাইব্রেরী কি । অনেক বাবা মা’র ব্যস্ততার কারণে শিশু কিশোরদের কাছে লাইব্রেরী এখনও অনেকটাই যেন অধরা হয়ে আছে । তাই আমরা চেয়েছি এই অপরিহার্য আনন্দের মাঝে তাঁদেরকে লাইব্রেরীর প্রয়োজন বোঝাতে। তাদেরকে বইমুখী করে তুলতে। আমাদের এখানে প্রতি বছর নতুন আঙ্গিকে পূজা মন্ডপের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে পাঠাগারের আদলে মন্ডপ তেরি করা হয়। তবে করোনার কারণে এ বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে না। এ বছরও ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আমাদের পূজার আয়োজনে শামিল হয়েছে।

পাঠাগারের কারিগর মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, তিনি কুমিল্লার লাকসাম থেকে এসে এখানে কাজ করছেন। এই কাজ করতে পেরে তিনি খুবই খুশি।

দর্শনার্থী কাজল দাস বলেন, এই প্রথম কোন পূজা মণ্ডপে ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়েছে। এই রকম আয়োজন কখনও চোখে পড়েনি। দেখে খুবই ভালো লেগেছে। পাঠাগারের আদলে প্যান্ডেল গড়ে তোলার কারণে দেখতে পরিবার সদস্যদেরকে নিয়ে এখানে চলে আসা। ছেলে মেয়েদের কাছে এটি খুবই ভালো লেগেছে বলে জানায়।

সুভাষ সাহা বলেন, আমাদের এখানে প্রতি বছর নতুন আঙ্গিকে পুজা মণ্ডপ তৈরি হয়ে থাকে। এবার পাঠাগারের আদলে এটি তৈরি হওয়ায় দেখার জন্য সবার মাঝে বেশ আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দেখতে আসলাম।

এদিকে শুধু শহরের মানুষ নয় উপজেলাসহ আশপাশের আরও বিভিন্ন এলাকার লোকজন এটি দেখতে আসছেন। করোনা মহামারির কথা মাথায় রেখে পূজা মন্ডপ প্রাঙ্গণে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্যান্ডেল বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads