• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

‘হুজুর আপনার পায়ে ধরি, আর মাইরেন না’

  • শেরপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

‘হুজুর আপনার পায়ে ধরি। আমারে আর মাইরেন না। আমি আর অনুপস্থিত থাকুম না।’ কথাগুলো বলছে আসিফুল ইসলাম বিজয় (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের পূর্ব খড়িয়া গ্রামের নূর হেরা নূরানী তালিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সোমবার সকাল ১০ টার দিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন হাফেজ মো. আমানুল্লাহ নামে এক শিক্ষক।ঐদিন রাত ৯টার দিকে আহত আসিফকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।

আহত শিক্ষার্থী আসিফ ও তার পরিবারের লোকজন জানায়, শ্রীবরদী উপজেলার পূর্ব খরিয়া গ্রামের খলিলুর রহমান খোকনের ছেলে আসিফুল ইসলাম বিজয়কে কোরআনের হাফেজ শিক্ষার জন্যে মাদ্রাসায় দিয়েছিলেন। আসিফও নিয়মিত মাদ্রাসায় যেতো। সম্প্রতি একদিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় সোমবার দুপুরে ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হাফেজ মো. আমানুল্লাহ আসিফকে মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে আসিফ। শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চায় সে। তবুও তাকে ক্ষমা করা হয়নি। এতে সে গুরুতর আহত হলে পরে স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাকে বাড়িতে রেখে আসে।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আসিফ কান্না জড়িত কন্ঠে বলতে থাকে, খুব বলেছি, হুজুর আমারে আর মাইরেন না, তারপরও মারা বাদ দেয় নাই। শেষে পা  ধরেছি। এক পর্যায়ে আমার বুকে লাথি মারে। বুকটা ব্যাথা করতাছে।পিঠটা খুব জ্বলতাছে। পরে মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্রদের মাধ্যমে আসিফকে তার বাড়িতে পাঠানো হয়। এ সময় আসিফের স্বজনরা তার শরীরের জখম দেখে তাকে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

আসিফের বাবা খলিলুর রহমান খোকন জানায়, কোরআনে হাফেজ শিক্ষার জন্যে ওই মাদ্রাসায় দিছি। যেভাবে মারছে। এভাবে মানুষ পশুকেও মারেনা। 

স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে এমন নির্মম নির্যাতনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান তারা। শেরপুর জেলা শাখা আমাদের আইনের চেয়ারম্যান নূর-ই-আলম চঞ্চল বলেন, খুবই ন্যাক্কারজনক একটি কাজ করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। জেলা সদর হাসপাতাল ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হুমায়ুন আহমেদ নূর বলেন, আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রেখেছি। চিকিৎসা চলছে।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads