• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
'সালামি ছাড়া' মিলছে না কাউন্টারে টিকিট, ট্রেন যাত্রীদের দূর্ভোগ

ছবি: প্রতিনিধির

সারা দেশ

'সালামি ছাড়া' মিলছে না কাউন্টারে টিকিট, ট্রেন যাত্রীদের দূর্ভোগ

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ মে ২০২২

দেশের পূর্বাঞ্চল রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া জংশন স্টেশনে আসন বিহীন টিকিট ও যেন সোনার হরিন হয়ে উঠেছে। এখানে সালামি ছাড়া মিলছে না যাত্রীদে আসন বিহীন টিকিট । রেলওয়ে বিভাগ আসন বিহীন টিকিট সিমীত করায় বেশ কয়েক দিন ধরে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়া থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বরত কিছু অসাধু লোক অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন বলে এমন অভিযোগ ট্রেন যাত্রীদের। তারা জানায়, কাউন্টারের দায়িত্বরা আন্ত:নগর ট্রেনের গন্তব্য বুঝে মূল ভাড়া থেকে টিকিট প্রতি আরো ২০-৩০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে। যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আসন বিহীন টিকিট ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করছেন। এতে করে আন্ত:নগর ট্রেন যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। কেন অতিরিক্ত টাকা রাখা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্টারে দায়িত্বরতা এ বিষয়ে কিছুই বলছে না।

জানা যায়, পূর্বাঞ্চল রেলপথের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন স্টেশন আখাউড়া। ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট-লাকসাম-নোয়াখালী-ময়মনসিংহ রেলপথে আখাউড়া-আজমপুর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করছেন। ওই দুই স্টেশনে অন্তত ২২টি আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি রয়েছে। ওই সব ট্রেনগুলো মহানগর গোধলী,প্রভাতি,মহানগর এক্সপ্রেস, তৃর্ণানিশিতা, পারাবত, জয়েন্তীকা, বিজয় এক্সপ্রেস, উপবন, পাহাড়িকা, উদয়ন, উপকুল এক্সপ্রেস ট্রেন। সে সাথে নিয়মিত চলাচল করছে মেইল ও লোকাল ট্রেন। তবে ঈদসহ গুরুত্বপূর্ণ দিবসে এখানে যাত্রী সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে যায়।

যাত্রীরা টিকিট কাউন্টারে ৪ দিন আগে ধর্না দিয়ে ও আসন যুক্ত টিকিট পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া রেলওয়ে বিভাগ আসন বিহীন টিকিট সীমিত করায় এখন সেই টিকিও পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে উঠছে। ফলে যাত্রীরা আসন বিহীন টিকিট নিতে অতিরিক্ত সালামি দিয়ে ভ্রমণ করছেন।

অবশ্য রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, টিকিটবিহীন কোন যাত্রী ট্রেনে ভ্রমন করার কোন সুযোগ নেই। ট্রেনে দায়িত্বরতা বিনা টিকিটে যাতে কোন যাত্রী ট্রেনে ভ্রমন না করতে পারে সেক্ষেত্রে তারা খুবই তৎপর রয়েছে। তাছাড় টিকিট কাউন্টারে কোন যাত্রীর কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়া থেকে অতিরিক্ত টাকা রাখার কোনো সুযোগ নেই।

আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে কথা হয় আজমপুর এলাকার মো: আব্দুল হাকিমের সাথে। তিনি বলেন তার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য কুমিল্লা যেতে এখানে এসেছেন। অনেক চেষ্টা করে ও কাউন্টারে আসনযুক্ত কোন টিকিট পায়নি। পরে তিনি আসন বিহীন দুটি টিকিট ক্রয় করেন। প্রতি টিকিটে নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৪০ টাকা কাউন্টারে বেশী দিতে হয়েছে।

ট্রেন যাত্রী মো: জুয়েল বলেন, প্রয়োজনীয় কাজ করতে মহানগর ট্রেনে প্রায় তার কুমিল্লা-আসা যাওয়া করতে হয়। আখাউড়া থেকে কুমিল্লা যেতে ভাড়া হচ্ছে ৬০ টাকা। কিন্তু কাউন্টার থেকে ৬০ টাকার টিকিট ৮০ টাকা কেনা হয় বলে জানায়।

পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকা থেকে মো. আফসার উদ্দিন বলেন, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। প্রয়োজনীয় কাজে তিনি বাড়িতে এসেছেন। কাজ শেষে ঢাকায় যেতে কাউন্টারে আসন যুক্ত কোন টিকিট তিনি পায়নি। পরে উপকুল ট্রেনে আসন বিহীন টিকিটে তাকে ঢাকায় যেতে হয়। এজন্য কাউন্টারে তাকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে আরো ২০ টাকা বেশী দিতে হয়েছে।

আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সুপার মো. কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, টিকিট কাউন্টারে কোনো যাত্রীর কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা রাখার কোন সুযোগ নেই। এ পযর্ন্ত কেউ এ বিষয়টি জানায়নি। পাশাপাশি বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করার কোনো সুযোগ নেই। আন্ত:নগর ট্রেনগুলোতে দায়িত্বরত টিটিইরা খুবই তৎপর রয়েছে বলে জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads