• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে আখাউড়া

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে আখাউড়া

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। অবিশ্বাস্য উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে ১০২.১১ বর্গ কিলোমিটারের এ উপজেলা। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) এ উপজেলায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করছেন।

এক সময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে এ উপজেলার পরিচিতি থাকলেও দেখা মেলেনি কাঙ্খিত উন্নয়নের। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসায় দৃশ্যপট পাল্টে যেতে শুরু করে। রাস্তা ঘাট, স্কুল, কলেজ, ব্রিজ, কালভার্ট, বিদ্যুতায়নসহ একের পর এক নানামুখি উন্নয়নমূলক কাজের বদৌলতে বদলে যেতে থাকে এ উপজেলার চেহারা। তবে এ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অব্যাহত থাকলে ও এসব কিছর গতি বৃদ্ধি পেয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কল্যাণে। তিনি সংসদ সদস্য হয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন করার পর থেকে  উন্নয়নে বদলে যেতে থাকে শহরসহ গ্রাম পর্যায়ে।  আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-কসবা আখাউড়ার সংসদ সদস্য। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় শুধু মাত্র ২০১৮-২১  অর্থ বছরে মোট এ উপজেলায় ৫১ কোটি ৬৬লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এসব উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে রাস্তা ঘাট, স্কুল , ব্রিজ, কালভার্ট প্রভৃতি। বর্তমানে  চলমান রয়েছে ৪৭ কোটি কোটি ১৫হাজার টাকার কাজ।

উপজেলা এলজিইডি  অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছরে ৫১ কোটি ৬৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে গ্রামীন উন্নয়ন করা হয়।  ২০১৮-২০ অর্থ বছরে ৪২ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর মধ্যে ২৯ কোটি, ৩ লাখ,৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৮.৮৭৮ কি:মি: দৈর্ঘ্যে ৩৫টি গ্রামীণ সড়ক  নির্মাণ করা হয়। ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০৬.৫২ মিটারে ৬টি ব্রীজ, ৮ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১১টি  প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন  ও ৫৮লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২টি ভূমি অফিস নির্মাণ করা হয়।

তাছাড়া ২০২১-২২ অর্থ বছরে সদ্য সমাপ্ত হয় ৮ কোটি ৮০লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৩টি সড়ক ও ৩ টি কালভার্ট। ১৩টি সড়কে নির্মাণ ব্যয় হয় ৮ কোটি ৪৫লাখ৭৭ হাজার টাকা ও ৩ টি কালভার্টে ৩৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

এর মধ্যে  উপজেলার মোগড়া ভবানিপুর রোড,  আইরল শিবনগর রোড, ভাটামাথা প্রাথমিক বিদ্যালয় রোড, মনিয়ন্দ-টনকি-ঘাঘুটিয়া তুলাই শিমুল রোড, বাউতলা আনন্দপুর রোড, রুটি হাতিনাবিল রোড, মনিয়ন্দ মাঝিগাছা রোড, আখাউড়া বড় বাজার, নুরপুর লামবাড়ি রোড, আখাউড়া উত্তর খালাজোড়া গাজিরবারজর রোড, কর্ণেল বাজার জয়নগর বাউতলা রোড, মনিয়ন্দ টনকি ছোট গাঙ্গাইল- মোগড়া-আখাউড়া দক্ষিণ রোড, সেনারবাদি-চেকপোস্ট রাজেন্দ্রপুর সড়ক, নিলাখাত বাজার রোডসহ ৪৮টি  গ্রামীন সড়ক নির্মাণ করা হয়। ৫৮লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয়ে আখাউড়া সদর ও তন্তর বাজার দুটি ভূমি অফিস  নির্মাণ করা হয়। ৮ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে  রাধানগর , ধরখার, নাছরিন নবী, রানীখার, বান্ডসার, আজমপুর, রহিমপুর, হিরাপুর দুর্গপুরসহ ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ হয় হয়।

৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গাংভাঙ্গা-গঙ্গানগর ব্রীজ, মোগড়া বাজার সাতপাড়া, কর্ণেল বাজার ধাতুরপহেলা রোড ব্রীজ, বনগজ-কৃষ্ণনগর রোড ব্রীজ, গাজি বাজার ছয়ঘরিয়া - রাজেন্দ্রপুর রোড ব্রীজ, ভাটামাথা বাজার তন্তর টান মান্দাইল মনিয়ন্দ রোড, নয়াদিল কুসুমবাড়ি রোডে ১০৬.৫২ মিটারে ৬টি ব্রীজ ও ৩৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। তাছাড়া ২১-২২ অর্থ বছরে ৪টি সড়ক ৪টি ব্রীজ ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণসহ মোট ৪৭ কোটি ১৫লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে।

মনিয়ন্দ এলাকার মো:সোহাগ মিয়া বলেন বিএনপি ক্ষমতা থাকা কালিন সময় তারা এলাকায় কাঙ্খিত কোন উন্নয়ন করেনি। যার কারণে স্থানীয় লোকজনও তাদের প্রতি নাখোশ হতে থাকে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতা আসার পর থেকে  এলাকায় উন্নয়ন শুরু হতে থাকে। তিনি আরো বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কল্যাণে আমাদের এলাকায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়। এ জন্য তিনি এলাকাবাসির পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

রহিমপুর গ্রামের মো: ফোরকান মিয়া বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে আমাদের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের অভাবে কোমলমতি ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা করতে খুবই কষ্ট হতো। অনেক সরকার এসেছে কিন্তু কেউ এ বিষয়য়ে নজর দেননি। কিন্তু মাননীয় আইন মন্ত্রীর কল্যাণে আমরা নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ও উন্নত রাস্তা পেয়েছি। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এ উপজেলায় শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে  ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এ উপজেলার রাস্তাঘাট, স্কুল-ব্রীজ কালভার্ট, মসজিদ-মন্দিরসহ নানামুখী উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে এলাকা। এমন দৃশ্যমান উন্নয়ন আর কোনো সরকারের আমলে হয়নি।

তিনি আরো বলেন, এসব কিছুর উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে মাননীয় আইন মন্ত্রীর কল্যাণে।

উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, এলজিইডির অধিনে এ  উপজেলার ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। শুধু মাত্র ২০১৮-২১  অর্থ বছরে এ উপজেলায় মোট ৫১ কোটি ৬৬লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে রাস্তা, ব্রীজ, কালভার্ট বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে  ৪৭ কোটি ১৫ হাজার টাকার কাজ চলমান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওইসব কাজ শেষ হতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ২০২২-২৫ অর্থ বছরে  পরিকল্পনায় আছে  ১৫০টি সড়ক উন্নয়ন ও মেরামত যার দৈর্ঘ্য ১৪০ কি:মি, ১২টি ব্রীজ ও ৪০টি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads