• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা নির্যাতিত নারীর

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা নির্যাতিত নারীর

  • লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ মে ২০২২

পাচারকারীদের হাত থেকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে থানায় এসে ঘটে যাওয়া ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন নির্যাতিত এক তরুণী। অসুস্থ অবস্থায় ওই তরুণী ২১ মে সকালে পাটগ্রাম থানায় আসে। পরে ওই দিনই ঘটনার সাথে জড়িত এক নারীসহ ৩জনকে আটক করে পুলিশ।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকারপাড়ার মৃত ওমর আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম ভুটুয়া (৩৫), একই এলাকার মুন্সিপাড়া গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে মোকছেদুল হক (৩২) ও পাটগ্রাম পৌরসভার রসুলগঞ্জ জুম্মাপাড়ার শফিক হোসেনের স্ত্রী চম্পা বেগম (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, টিকটক ভিডিও তৈরি করার সুবাদে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার সঙ্গে পাবনা সাঁথিয়া উপজেলার এক তরুণীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। তিন বছর আগে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের।

একপর্যায়ে মেয়েটিকে নিয়ে সাতক্ষীরার সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি জমান সোহেল। সেখানে কলকাতা শহরে মেয়েটিকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন  সোহেল। সেখানে প্রায় নয় মাস অবস্থানের পর একই সীমান্ত দিয়ে কৌশলে পালিয়ে আসে মেয়েটি।  

প্রেমিক সোহেলও কিছু দিন পর ভারত থেকে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন। এরপর চাপের মুখে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে সোহেল ওই প্রেমিকাকে বিয়ে করেন। কিছু দিন স্ত্রীকে নিয়ে হবিগঞ্জে নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন সোহেল। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মেয়েটি।  

আবার স্ত্রীকে ভারতে পাচার করতে পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলতি বছরের ১৩ মে কৌশলে পাটগ্রামের দহগ্রামে পাঠান সোহেল। দহগ্রাম থেকে ভারতে পাঠানোর সময় পাচারকারীদের একজন মোকছেদুল ইসলাম ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। ভারতে পাচারের পর ওই নারী বুঝতে পারেন, স্বামী তাকে আবার পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করেছেন। পরে এ পথে ১৫ মে পুনরায় ফিরে আসেন তিনি। ফেরার পথেও অপর পাচারকারী আশরাফুল ইসলামের কাছে ধর্ষণের শিকার হন তিনি। ধর্ষণ করেও তাকে ছেড়ে দেয়নি পাচারকারী চক্রটি। আবারও ধর্ষণের জন্য ওই নারীকে আটকে রাখে।  অবশেষে সেখান থেকেও কৌশলে পালিয়ে ২১মে সকালে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় নেন।  এসময় পুুলিশের কাছে জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার লোমহর্ষক বর্ননা দেন নির্যাতিত ওই তরুণী। 

পরে থানার ওসি ওমর ফারুক নির্যাতিত নারীর জীবনের ঘটনা শোনেন। পরে ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে পাচার ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত এক নারীসহ তিনজনকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় নির্যাতিত ওই নারী বাদী হয়ে ধর্ষণ ও মানবপাচার নিরোধ আইনে স্বামী সোহেলকে প্রধান করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন।  

পুলিশ ওই নির্যাতিত নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রোববার (২২ মে) দুপুরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠায়। তবে মূল অভিযুক্ত সোহেল মিয়া এবং এজাহারনামীয় দহগ্রামের একজন পাচারকারী পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads