• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
তৃষ্ণার্ত মানুষের প্রাণ জুড়াচ্ছে আল-আমিনের শরবতে

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

তৃষ্ণার্ত মানুষের প্রাণ জুড়াচ্ছে আল-আমিনের শরবতে

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০২ জুন ২০২২

মাথার ওপর প্রহর রোদ। সূর্যের তাপে সকাল থেকেই প্রকৃতি ও যেন রুক্ষ হয়ে উঠেছে । কর্ম ব্যস্ততায় মানুষের বাড়ছে কাজের চাপ। তপ্ত গরমের তীব্রতায় তৃষ্ণার্ত মানুষ ও প্রাণীকুলে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। চারিদিকে একটু শীতল পরশ লাভের জন্য মানুষেরা যেন হাঁসফাস করছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস পেতে যেন বেশ বেগ পেতে হচ্ছে মানুষকে। ঠিক এমন গরমের সময় প্রশান্তির বার্তা নিয়ে তৃষ্ণার্ত মানুষের প্রাণ জুড়াচ্ছে আল-আমিনের শরবতে। ক্লান্তি আর অবসাদ ভাব কাটাতে প্রহর রোদে মানুষের মাঝে প্রশান্তি এনে দিচ্ছেন তার এই শরবত। আল-আমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ গরমে চলছে ফুটপাতে বসে তার শরবত বিক্রি। সে দীর্ঘ বছর ধরে পৌর শহরের সড়ক বাজার এলাকায় ফুটপাতে বসে তিনি সকাল বিকাল শরবত বিক্রি করে আসছেন। আর এই শরবত বিক্রির আয় দিয়ে চলছে তার সংসার।

সরেজমিন সড়ক বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার এক পাশে ফুটপাতের মধ্যে প্রহর রোদের আল-আমিন দাঁড়িয়ে আছেন। সাথে একটি টেবিল বেশ কয়েকটি গ্লাস, পানির বড় ফিল্টার, লেবুসহ নানা প্রকারের জিনিস তিনি সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন। তৈরি করছেন স্বাস্থ্যসম্মত লেবুর শরবত। প্রহর রোদে আর তীব্র গরমে ক্লান্তি দুর করতে লোকজনরা দাঁড়িয়ে থেকে তার এখান থেকে শরবত পান করছেন । তিনি প্রতি গ্লাস শরবত বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। তার শরবতের গুনগত মান ভালো হওয়ায় ইতিমেধ্য এলাকায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন।

শরবত বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, এই গরমে তাদের বিক্রি বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত দেড় থেকে দু’শ গ্লাস শরবত বিক্রি হয় । প্রতি গ্লাস শরবত তিনি বিক্রি করছেন ১০ টাকায়। তবে গরম বেশী থাকলে শরবত বিক্রি বেশী হয় বলে জানায়। গরমের কারনে লেবু ও ট্যাংক মিশ্রিত শরবতের চাহিদা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে বেশী।

তিনি আরো বলেন চিনি আর লেবুর দাম বেড়েছে। কিন্তু শরবতের দাম বাড়েনি। খরচ বাদে দৈনিক ৩শ টাকার উপর আয় হয় বলে জানায়। শরবত বিক্রির আয়ে চলে তার জীবিকা। স্ত্রী,৩ ছেলে ২ মেয়ে নিয়ে তিনি এখন সুখে শান্তিতেই দিনানিপাত করছেন।

অটো রিকশা চালক মো: সুরুজ মিয়া বলেন, এই গরমে রিকশা চালানো খুবই কষ্টকর। রিকশা চালালে প্রচুর পিপাসা লাগে। এই গরমে টিউবওয়েলের পানির পাশাপাশি ভিন্ন স্বাদের এই শরবত সময় পেলে তিনি পান করেন বলে জানায়।

মো: আলী মিয়া এই গরমে খোলা আকাশের নিচে ফুতপাতে বসে মালামাল বিক্রি করতে খুবই পিপাসা লাগে। শরীরের ক্লান্তি দুর করতে প্রতিদিন লেবু ও ট্যাংকের শরবত খান বলেন জানায়।

রিকশা চালক কাজল বলেন প্রায়ই এখানে শরবত খেতে আসি। এই শরবত খেয়ে আমাদের এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। বরং যখন খান তখন খুবই ভালো লাগে।

আল-আমিন বলেন, বাংলাদেশের খবরকে বলেন প্রতিটি মানুষ তার ব্যক্তিগত জীবনের গন্ডির মধ্যে দৈনন্দিন কিছু না কিছু কাজ করে সাংসারিক জীবন ব্যবস্থার মান উন্নয়ন করার চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে কারও সাংসারিক জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসে আবার কারও আসেনা। ইচ্ছা শক্তি, শ্রম আর আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে শরবত বিক্রির মাধ্যমে সে তার অভাব অনটন গুছিয়েছে। তিনি বলেন কোন কাজকে ছোট করে দেখতে নেই। একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করলে সহজই অভব অনটন জয় সম্ভব। তিনি বলেন জীবন বাঁচাতে পথে নামলেই মানুষ পথ চিনে। আমি কোন মানুষের বোঝা হয়তে চায় না। ইচ্ছা করলে মানুষ অনেক কিছু করতে পারে সেই চেষ্টায় করছি। বর্তমানে এ ব্যবসা ভালই চলছে। এ ব্যবসা করে আমি খুবই খুশি। এখন কোন আমার অভাব অনটন নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার -পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো: হিমেল খান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, গরমে পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে অস্বাস্থ্যকর পানি পান করলে শরীরে নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। লেবুর যে শরবত রাস্তার পাশে কিংবা ফুতপাতে বিক্রি হচ্ছে অনেকাংশে সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ওইসব ঠাণ্ডা পানীয় দেখতে খুব চিত্তাকর্ষক হলেও তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই এ ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads