হারানো যৌবন ফিরে পেতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ নিয়ে যশোরের বাঘারপাড়ায় আরেক শ্রমিক নকিম উদ্দীনকে হত্যা করে লিটন মালিতা। কবিরাজ বারিকের কথামতো সে তাকে হত্যা করে একটি পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ নিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। দুই দিন অভিযান চালিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল গত মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা থেকে আব্দুল বারেক (৬২) ও বুধবার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী এলাকা থেকে লিটন মালিতাকে (৪০) আটক করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃত লিটন মালিতার কাছ থেকে একটি পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ ও একটি চোখ উদ্ধার করা হয়েছে।
যশোরের বাঘারপাড়ায় উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামে গত ২৬ মে ধান কাটার জন্য কৃষাণ হিসেবে নকিম উদ্দীনসহ তিনজনকে বাড়িতে নিয়ে যান পাইকপাড়া গ্রামের মৃত ইবাদ মোল্যার ছেলে বেনজির আহম্মেদ (৪২)। এর মধ্যে গত রোববার বিকালে পারিশ্রমিকের টাকা বুঝে নিয়ে একজন চলে যায়। লিটন মালিতা ও নকিম উদ্দীন রাতে খাবার খেয়ে এক কক্ষে ঘুমিয়ে থাকে। পরে বাড়ির মালিক বেনজির আহম্মেদ গত সোমবার সকালে কৃষাণদের ডাক দিলে বাইরে থেকে দরজা খোলা দেখতে পান। দরজা খোলা দেখে তিনি ভেতরে যেয়ে দেখেন জখম অবস্থায় কৃষাণ নকিম উদ্দীনের লাশ খাটের উপর পড়ে আছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংএ জানান, আটক কবিরাজ আব্দুল বারেক চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি পেশায় কবিরাজ। আটক অপর ব্যক্তি লিটন মালিতা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার মোহাম্মদ জুমা গ্রামের হানিফ মালিতার ছেলে। আটক লিটন মালিতা দীর্ঘদিন যাবত যৌনরোগে ভুগছিলেন। পরে স্থানীয় কবিরাজ আব্দুল বারেকের শরণাপন্ন হয় লিটন। কবিরাজ লিটনকে যে কোনো একটি পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ ও একটি চোখ উপড়ে নিয়ে আসলে সে হারানো যৌবন ফিরে পাবে বলে জানান। সেই থেকে লিটন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সুযোগ খুঁজতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ধান কাটার শ্রমিক সেজে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে কাজ নেয়। সুযোগ বুঝে কবিরাজের দেয়া মহাওষুধের উপকরণ যোগাড় করতে নকিম উদ্দীন নামের এই শ্রমিককে খুন করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে চলে যায় মানিকগঞ্জ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে যশোরের বাঘারপাড়ায় উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে কৃষি শ্রমিক নকিম উদ্দীন হত্যা হয়। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে লাশ ও আলামত হিসেবে হত্যায় ব্যবহূত একটি চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নকিম উদ্দীন বাঘারপাড়া উপজেলার ধুপখালী গ্রামের মৃত দলিলুদ্দিন মোল্যার ছেলে।
