• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
একই জমিতে ৩ ফসল, ধান আবাদে খুশি কৃষক

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

একই জমিতে ৩ ফসল, ধান আবাদে খুশি কৃষক

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ১৫ জুন ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ইতিমধ্যে বোরো ধান কাটা ও ঘরে তোলার কাজ শেষ হয়েছে। এ মৌসুমে জমিতে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও বাজারে বিক্রিতে দাম ভাল পাওয়ায় বেজায় খুশি স্থানীয় কৃষকরা। এদিকে বোরো ধান ঘরে তোলা শেষ না হতেই কৃষকরা উৎসাহ নিয়ে আউশ আবাদে ঝুঁকছেন। কৃষকরা রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলতি মৌসুমে আউশ ধান আবাদ পুরোদমে শুরু করেছে। জমিতে হালচাষ, বীজ উঠানো ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপনে এক প্রকার ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ চাষের উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ চাষের আবাদও । একই জমিতে বোরো, আমন ও আউশসহ ৩টি ফসল হওয়ায় কৃষকরা যেন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলায় প্রায় ১৩০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের চাইতে ২০ হেক্টর বেশী। সরকার আউশ ধান আবাদের জন্য ৫শ কৃষকের মাঝে জনপ্রতি ২০ কেজি সার ও ৫ কেজি বীজ বিনামূল্যে প্রদান করেন। বোরো ধান কাটা শেষে উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ইতিমধ্যে ধান বীজ রোপণসহ জমিতে আউশ ধান আবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকেরা।

কৃষি কর্মকর্তারা জানায়, আউশ হল একটি বর্ষালী ও লাভজনক ধান । এই চাষ আবাদে খরচ তুলনামূলক অনেক কম হয়। সেইসাথে ফলন ও ভালো হয়। তাছাড়া এই ধানের আবাদ তুলে পুনরায় ওই জমিতে সহজে রোপা আমন ধানের চাষ করা যায়। এতে আমন আবাদের কোন ক্ষতি হয় না। তবে যথা সময়ে আকাশের বৃষ্টিপাত হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা আনন্দে আউশ ধান রোপণ শুরু করেছেন।

এদিকে কৃষি অফিস বলছেন তারা জমিতে রোগবালাই ও পোকামাকড় হতে ফসল রক্ষায় মাঠে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কৃষকদেরকে সার্বিক ভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন ।

সরেজমিনে পৌর এলাকায় তরাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, উপজেলার উমেদপুর, বাউতলা, সাতপাড়া,তোলাবাড়ি, নুনাসারসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় কৃষকরা আউশ ধান আবাদে জমি প্রস্তুত, চারা উত্তোলন ও রোপনের কাজে তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পৌর এলাকার কৃষক মো. দেওয়ান খান বলেন, গেল বোরো চাষে গত কয়েক বছরের তুলনায় তার ফলন ভালো হয়েছে। ধান বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি। তাছাড়া সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে সার বীজ পাওয়ায় আউশ ধান আবাদে তার উৎসাহ কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন বর্ষা মৌসুমে আউশ ধান চাষে সেচের তেমন প্রয়োজন হয় না। সারসহ অন্যান্য উপকরনও কম লাগে তাই এই আবাদটি অধিক লাভজনক হওয়াই তিনি ৩ বিঘা জমিতে চাষ করছেন। গত বছর এ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন বলে জানায়।

কৃষক মো: ফরিদ মিয়া বলেন, বোরো মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছে। বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় ধান চাষে তিনি অনেকটাই লাভবান বলে জানায়। তিনি আরো বলেন সরকার বিনামূল্যে সার বীজ দেওয়ায় ২ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল আউশ আবাদ করেন। গত ৩ বছর ধরে এ চাষ করছেন বলে জানায়। এক সময় দুই ফসল ধান করে লোকসান গুনতে হতো। এখন প্রযুক্তিসহ উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করায় ধান চাষে তিনি লাভের মুখ দেখছেন।

কৃষক মো. আল-আমিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে আউশ ধান চাষের সময় পানি সেচের তেমন প্রয়োজন হয় না। সরকার আউশ আবাদের জন্য কৃষকদেরকে বিনামূল্যে সার,বীজ দেওয়ায় আমন বোরো চাষের থেকে তাদের খরচ অনেক কম হয়। ধানের উৎপাদনও তুলনামূলক ভালো হয়। সরকারি সহায়তা পাওয়ায় গত ২ বছর ধরে তিনি এ চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এবছর তিনি ৫৫ শতক জমিতে আউশ ধান আবাদ করেছেন বলে জানায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, যথাসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা আউশ ধান আবাদ শুরু করেছে কৃষকরা । তবে এ উপজেলায় আউশ ধানের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন পৌর শহরসহ উপজেলায় ৫শ জন কৃষকের মাঝে আউশ আবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়। পাশাপাশি অনেক কৃষককে প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। ফলন ভাল করতে কৃষকদেরকে সব রকমের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads