• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
দুই লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি ৩০০ টাকায়

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

দুই লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি ৩০০ টাকায়

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ জুলাই ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির পশুর চামড়ার ক্রেতা নেই বলে চলে। উল্লেখযোগ্য ক্রেতা না পাওয়ায় কোরবানির জবেহ করা চামড়া এবারও পানির দরে বিক্রি হয়েছে। এক একটি চামড়া নিচে ১৫০ টাকা থেকে উপরে ৩০০ টাকার বেশী কেউ বিক্রি করতে পারেনি। চামড়ার দর কম থাকায় অনেকেই মাদরাসায় দিয়ে দিয়েছেন। রোরবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে লোকজনের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। খুচরা ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে কোরবানির জবেহ করা পশুর চামড়া পানির দরে সংগ্রহ করেন। এ অবস্থার ফলে ফলে অসহায় হতদরিদ্র ও দুস্থদের ভাগ্যে জুটেনি প্রকৃত চামড়ার টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছর কোরবানির ঈদ আসলে শহরসহ গ্রামাঞ্চলের অসহায় হতদরিদ্র ও দুস্থরা কোরবানির চামড়ার আয়ের দিকে চেয়ে থাকেন। আবার অনেক নিকট গরিব আত্মীয় স্বজন চামড়ার টাকা নিতে ঈদের আগে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন। তাছাড়া মাদরাসার লোকজন অসহায় হতদরিদ্র ও দুস্থরা ঈদের পর দিন থেকে চামড়ার টাকা সংগ্রহের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভীড় জমাতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চামড়া ক্রয়ের উল্লেখযোগ্য ক্রেতা না থাকা ও দরদাম কম বলায় বিপাকে পড়ছেন বিক্রেতারা। তারা এক প্রকার বাধ্য হয়ে পানির দরে বিক্রি করতে হচ্ছে পশুর চামড়া। তাছাড়া অনেকে আবার চামড়া বিক্রি থেকে বিরত থেকে মাদরাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ বছর পৌর শহরসহ

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরুর চামড়া ১শ টাকা থেকে উপড়ে ৩ শত টাকা, মহিষ ২শ থেকে ৩ শ, ছাগল ৩০ শ থেকে ৫০টাকা বিক্রি হয়েছে।
পৌর এলাকার কামরুল হাসান বলেন, এ বছর কোরবানির গরু কেনা হয়েছে ২লাখ টাকায়। সেই গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩শ টাকায়। এক গ্রুপ প্রথমে ২শ টাকা বলে চলে যায়। পরে অনেক কষ্টে ৩শ টাকায় বিক্রি হয়। আলহাজ্ব মিরাজুল ইসলাম বলেন, তার কোরবানির পশু লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনা হয়। পশু জবেহর পর বিকাল ৫টা পযর্ন্ত ১ জন লোক আসে ক্রয় করতে। তারা প্রথমে ২শ টাকা বলে । এরপর ৫০ টাকা আরো বাড়ে। অবস্থা খারাপ দেখে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

মো: মহসিন মিয়া বলেন, বলেন, ১লাখ ৩০ হাজার টাকার কেনা গরুর চামড়া ১৫০ টাকা বলায় বিক্রি করা হয়নি। সন্ধ্যা পযর্ন্ত অপেক্ষা করে দরদাম না বাড়ায় শেষ পযর্ন্ত তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসায় দিয়েছেন বলে জানায়। তিনি আরো বলেন আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে ৪০ হাজার টাকার গরুর চামড়া ১৫শ টাকা বিক্রি করেছেন। দিন দিন সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে আর চামড়ার দামই শুধু কমছে।

উপজেলার মোগড়া ইউপির আবুল কাশেম মিয়া বলেন বলেন, ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার কেনা মহিষের চামড়া দাম হয়েছে মাত্র ২শ টাকা। তাই বিক্রি না করে তিনি মাদরাসায় দিয়েছেন।

দুর্গাপুর এলাকার মো: আব্বাস মিয়া বলেন, কোরবানির জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কেনা হয়। খুচরা ও মৌসুমী ব্যবসায়ী কম থাকায় কাঙ্খিত দাম পাওয়া যায় নি। অবশেষে বিকাল পযর্ন্ত অপেক্ষা করে ২শ ৫০ টাকায় চামড়া বিক্রি হয়।

মো: ইলিয়াস মিয়া বলেন, বিকাল পযর্ন্ত কোন লোক চামড়া ক্রয় করতে আসেননি। পরে কোন উপায় না পেয়ে মাদরাসায় দিয়েছেন বলে জানায়।
ব্যবসায়ী মো: বিল্লাল হোসেন বলেন, উপরে থেকে যে দর দেওয়া হয়েছে সেই অনুপাতে চামড়া কেনা হয়েছে। এর বাহিরে কিনার সুযোগ নেই। গত বছর না বুঝে চামড়া কিনে অনেক টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। তাই খুবই শতর্ক হয়ে চামড়া কেনা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads