• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ জুলাই ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গত কয়েক দিন ধরে তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপযর্স্ত হয়ে উঠেছে । সকাল থেকেই সূর্যের তাপে প্রকৃতি রুক্ষ হয়ে উঠেছে। রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। পাশাপাশি তীব্র তাপদাহ আর গরম বাতাস শরীরে আগুনের হলকার মতো বিধছে। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। তাই দিন দিন গরম বেড়ে চলায় উপজেলাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শহর থেকে গ্রাম কোথাও যেন স্বস্তি নেই। মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুল ও অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। অনেকে গরম থেকে রক্ষা পেতে বার বার গোসল করছেন।

এদিকে গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্দি,কাশি, জ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিন পার করছেন। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা এমন চিত্র দেখা যায়।

অপর দিকে তীব্র তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিংও। প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অব্যাহত তাপদাহ, লোডশেডিং আর মশার উপদ্রপ বেড়ে যাওয়ায় এখানকার জনজীবন হয়ে উঠেছে বিপযর্স্ত। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের জন্য শিশু থেকে সব বয়সী নারী পুরুষ শিক্ষার্থী,অসুস্থ্য রোগীদের দূর্ভোগ বেড়েছে। কোন কোন এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে ২ থেকে ৫ ঘন্টা পর বিদ্যুৎ আসছে। বিদ্যুৎ শুধু দিনে রাতেই নয় মধ্য রাতেও চলে যাচ্ছে। ফলে রাতের ঘুমের ও ব্যাঘাত ঘটছে। শহরের চাইতে গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে এর ভয়াবহতা অনেক বেশী।

উপজেলা দক্ষিণ ইউনিয়নের মো: আরমান মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন ধরে অসম্ভব গরমে কোন কাজ কর্ম করতে পারছেন না। পাশাপাশি আছে দিনে রাতে লোডশেডিংও । গরমে রাতে ঘুমাতে খুবই কষ্ট হয়। মো: সাব্বির মিয়া বলেন, তীব্র গরম থাকায় গত কয়েক দিন ধরে তার কাজ কর্ম বন্ধ রয়েছে। গরমে নেই ঘরে শান্তি নেই বাহিরে শান্তি। রাতের বেলায় ঘুমাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।

শ্রমিক মো: ফুরকান মিয়া বলেন, এই গরমে কাজ করে গত তিন দিন ধরে তার শরীর ভাল নেই। জ্বরে বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। তাছাড়া রয়েছে লোডশেডিং। সব মিলিয়ে তার কষ্ট বাড়ছে।

এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো: আল-আমিন বলেন, একদিকে অসহ্য গরম অন্য দিকে লোডশেডিং থাকায় পড়াশুনা ব্যাহত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অসহ্য গরমে পড়াশুনা করা যায় না।

মো: আবিরে হোসেন বলেন, আমার বয়স ৬০ চলে। এভাবে গরম পড়তে দেখেনি। গরমে মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রিকশা চালক মো: ফরিদ মিয়া বলেন, আগে দিনে রিকশা চলাতাম। রোদ থাকায় এখন রাতে চালাই। কিন্তু সারারাত পরিশ্রম করে বাড়িতে এসে গরমের কারনে ঘুমাতে পারছি না।

গৃহিণী শিরিন আক্তার লাকী বলেন গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে নিয়মিত বিরতিতে লোডশেডিং হচ্ছে। রাতের চেয়ে দিনেই লোডশেডিং হচ্ছে বেশী। ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংএর যন্ত্রণায় এখানকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। মো: ইমাম বলেন, আগে দিনে ও সন্ধ্যায় লোডশেডিং হলে ও মাঝ রাতে হত না। এখন তাও হচ্ছে। সারা দিন খাটুনির পর রাতে ঘুমাতে গেলে বিদ্যুৎ থাকে না। অসহ্য গরমে ঘুমানো যায় না।

সড়ক বাজার কম্পিউটার ব্যবসায়ী মো: মান্নান মিয়া বলেন, কম্পিউটার চালু হতে ৫ মিনিট লাগে। কিন্তু প্রায় সময়ই দেখা যায় ১০ মিনিটের মধ্যে ২-৩ বার বিদ্যুৎ আসে আর যায়। এতে ব্যবসায়ীক কোন উপকার না হলেও কম্পিউটার নষ্ট হওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অনেক ক্ষতির সম্মখীন হতে হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার -পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো: হিমেল খান বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে সর্দি কাশি জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকে। যাদের জ্বরসহ সর্র্দি কাশি আক্রান্ত হয়েছে তারা যত্রতত্র ঘোরাঘোরি না করা ভালো। এসময় তরল জাতীয় খাবার ও বিভিন্ন ফলমুল খাওয়া এবং চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পরামর্শে দেন তিনি। এখানে চিকিৎসা সেবার কোন ক্রুটি নেই। সাধ্যমতো আগত রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন বলে জানায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads