• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
আখাউড়ায় চাঁই বিক্রির ধুম

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

আখাউড়ায় চাঁই বিক্রির ধুম

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৫ জুলাই ২০২২

এখন চলছে বর্ষাকাল। খাল-বিল, জলাশয়, নদী নালাসহ সর্বত্রই পানি থৈ থৈ করছে। পাশাপাশি এই পানিতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের আনা-গোনাও বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সুযোগে সৌখিন মাছ শিকারিরা বিভিন্ন কৌশলে এখন মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠছেন। অনেকেই মাছ ধরতে চাঁই কিনছেন। ইতোমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া বাজারে চাঁই বিক্রি জমে উঠেছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোকজন এই বাজারে এসে তারা মাছ ধরতে চাঁই কিনছেন। তাছাড়া চাঁই কেনা বেচার জন্য এই বাজারটি দীর্ঘ বছরের সুনাম থাকায় লোকজন এখানেই তারা ক্রয় করতে ছুটে আসছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বছরে ৩ থেকে ৪ মাস পানি থাকে। পানি থাকার কারণে নানা ধরনের উপকরণ দিয়ে তারা মৎস্য শিকার করছেন। ওইসব উপকরণের মধ্যে সৌখিন মৎস্য শিকারিদের কাছে চাঁই রয়েছে অন্যতম। স্থানীয় পর্যায়ে সৌখিন মৎস্য শিকারিদের কাছে ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাঁই তৈরির সঙ্গে জড়িত মৌসুমী কারিগররা ঘরে বসেই মাছ শিকারের দেশীয় ওইসব উপকরণ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। আর মাছ ধরার চাঁইসহ নানা উপকরণ তৈরি করে অনেকেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন।

সরেজমিনে মোগড়া বাজারে সাপ্তাহিক হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে অনেক লোকজন চাঁই নিয়ে রাস্তার পাশে বিক্রি করতে বসে আছেন। স্থানীয়সহ বিভিন্ন জায়গার সৌখিন মৎস্য শিকারিরা ওইসব চাঁই ক্রয় করছেন। এরপর নৌকা , ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা কিংবা ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছেন। এক একটি চাঁই ৩ শ থেকে সাড়ে ৭শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মোগড়া বাজারে সাপ্তাহিক হাটে চাঁই বিক্রি করতে আসা কসবার মো: হোসেন আলী বলেন, তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চাঁই তৈরী করে হাট বাজারে বিক্রি করছেন। বর্ষা মৌসুমে ভালো চাঁই এর কদর রয়েছে। তিনি আরো বলেন মাছ ধরার চাঁই তৈরিতে বাঁশ, তালের ডাকুর দরকার হয়। তালের ডাকু পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরে আঁশ ছাড়াতে হয়। পাশাপাশি বাঁশও পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। ওই ভেজা বাঁশ রোদে শুকিয়ে দা দিয়ে চিরে ভাগ ভাগ করে সুবিধামতো চাঁইয়ের দুই পাশ শক্ত করে আটকানো হয়। এক একটি চাঁই আকার বেধে ৩শ থেকে ৭শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।

চাঁই তৈরির কারিগর মো: ফিরোজ মিয়া বলেন, এ মৌসুমে নিম্মাঞ্চলে পানি থাকায় চাঁইয়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে একটি বাঁশ ৫শ থেকে ৬শ টাকায় কেনা হয়। একটি বাঁশ দিয়ে কমপক্ষে ৪ টা চাঁই, বুছরা হয়। দৈনিক ৩ টি চাঁই তৈরি করা যায়। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় শ্রমিক দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে।

মো: শাহজাহান মিয়া বলেন, গত ৭ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁই সংগ্রহ করে চাঁই বিক্রি করছেন। এখন বর্ষা মৌসুম হওয়ায় চাঁইয়ের কদর ও বেশ ভালো রয়েছে। দৈনিক ৩০-৩৫টি চাঁই বিক্রি হয় বলে জানায়। বাঁশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন চাঁইয়ের দামও বেড়েছে। ক্রেতা মো: আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা সব সময় পানির অপেক্ষায় থাকি। খাল বিল ও জলাশয়ে পানি থাকায় নানা উপকরণ দিয়ে দৈনিক মাছ ধরা হয়। এরমধ্যে চাঁই রয়েছে অন্যতম। আগে যেখানে একটি চাঁই দেড়শ থেকে ২শ টাকায় কেনা হতো এখন তা কিনতে হচ্ছে ৩শ থেকে ৫শ টাকায়।

মো: ইউনুছ মিয়া বলেন, পানি আসলে সব সময় তিনি চাঁই দিয়ে মাছ শিকার করছেন। বাড়িতে থাকা কিছু চাঁই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ৮টি চাঁই সাপ্তাহিক হাট থেকে ক্রয় করেন। গত দুই তিন বছরে কয়েকগুন দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads