• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
বড় সংগ্রহের আশায় বাংলাদেশ

অভিষেকে দারুণ ইনিংস খেলা সাদমান ইসলামের দর্শনীয় শট

ছবি : ক্রিকইনফো

ক্রিকেট

বড় সংগ্রহের আশায় বাংলাদেশ

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ০১ ডিসেম্বর ২০১৮

দিনের শুরুতেই বড় চমক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ একাদশে নেই কোনো স্পেশালিস্ট পেসার, যা প্রথমবারের মতো। চোখ কপালে তোলার মতো ঘটনা। এমন আবহের মধ্যেই টেস্ট ক্যাপ পেলেন সাদমান ইসলাম। ব্যাট হাতে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে তিনি খেললেন ভয়ডরহীন, সুস্থির, এক ধ্রুপদি ইনিংস। সাদমান যখন নিজেকে চেনাচ্ছেন, তখন অপর প্রান্তে বাজে শটে আউটের মহড়া অভিজ্ঞদের। ১৯০ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ যখন কিছুটা শঙ্কায়, তখন সাকিব-মাহমুদউল্লাহর দৃঢ়চেতা জুটি দিন শেষে স্বস্তি এনে দিয়েছে টাইগার শিবিরে। বড় সংগ্রহের আশা এখন করতেই পারে বাংলাদেশ। প্রথম দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫৯ রান। দুই দলের ব্যাট-বলের লড়াইয়ে প্রথম দিনে বেশিরভাগ আলো কেড়েছেন বাংলাদেশের অভিষিক্ত তরুণ সাদমান ইসলামই। কী নিখুঁত ব্যাটিং। ডিফেন্স আঁটসাঁট। টেম্পারামেন্ট দারুণ। ব্যালান্সও দেখার মতো। কোনো ঝক্কি ঝামেলার মধ্যে যাননি। খেলেছেন সহজাত খেলাটাই। ১৪৭ বলে পেয়েছেন অভিষেক ফিফটি। সেঞ্চুরিটা পেতেই পারতেন। ভাগ্য খারাপ বলেই দেবেন্দ্র বিশুর বলে এলবিডব্লিউ। বুঝতে পারেনননি বলের টার্ন। ১৯৯ বলে সাদমান যখন ফিরলেন তখন তার রান ৭৬। তখন কয়েকটি রেকর্ড ঝুলছে তার নামের পাশে। অভিষেকে ওপেনিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড সাদমানের। আগেরটি ছিল জাভেদ ওমরের ৬২ রান, ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বুলাওয়েতে। আরো একটি মাইলফলক আছে। অভিষেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বল খেলেছেন তিনি। সর্বোচ্চ ৩৮০ বল খেলার কৃতিত্ব আমিনুল ইসলাম বুলবুলের, ২০০০ সালে, বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে।

সাদমান আলো ছড়ালেও তার সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামা সৌম্য সরকার নিজের ছায়াই হয়ে ছিলেন। ব্যক্তিগত ১৯ রানে চেজের বলে হোপের কাছে ক্যাচ দেন তিনি। ভাঙে ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটি। মুমিনুল ভালোই খেলছিলেন এরপর সাদমানের সঙ্গে। তবে হঠাৎই বাজে শট। লং অনে সহজ ক্যাচ দেন রোস্টনের হাতে। ২৯ রানে ফেরেন পকেট ডায়নামো। তারপরও এই জুটি থেকে আসে ৪৫ রান।

সাদমানের সঙ্গে মিঠুনের জুটি ভালোই জমে ওঠে। আসে ৬৪ রান। কিন্তু হঠাৎই মিঠুন বাজে বলে আউট। বিশুর বল সরে গিয়ে খেলতে লাইন মিস করে বোল্ড। কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই ২৯ রান করা মিঠুন এমন আউটে মাথা কুটে মরছেন, এটা নিশ্চিত। সাকিবের সঙ্গে জমে ওঠার আগেই বিদায় সাদমান বিশুর বলে পরিষ্কার এলবি হয়ে। রিভিউ নেয়ারও প্রয়োজন হয়নি বাংলাদেশের।

আঙুলের ব্যথায় শঙ্কায় থাকা মুশফিক এদিন কিছুই করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১৪ রানে এভিন লুইসের বলে বোল্ড হয়ে দলকে বিপদের মধ্যেই ফেলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ৮ রানের সময়ই তামিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে চার হাজার রান পূর্ণ করেন মুশফিক। এটাই সান্ত্বনা তার। ১৯০ রানে তখন ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের।

দিনের খেলা বাকি তখনো ২২.৩ ওভার। না জানি অল আউট হয়ে যায় বাংলাদেশ প্রথম দিনেই, এমন শঙ্কা তখন চরমে। কিন্তু বিরূপ পরিস্থিতিতে আশার ফুল ফোটালেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। সহজাত ব্যাটিং নিয়ন্ত্রণে রেখে আগলে রাখেন উইকেট। শেষ সেশনে নেই বাউন্ডারি, যা বিস্ময়জাগানিয়া। তবে স্বস্তি সাকিব-মাহমুদউল্লাহ দুজনই অপরাজিত দিন শেষে। এসেছে ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৬৯ রানের জুটি। ১১৩ বলে ৫৫ রানে সাকিব, ৫৯ বলে ৩১ রানে অপরাজিত মাহমুদউল্লাহ।

আজ এই জুটি থিতু হতে পারলে সংগ্রহটা বড় হবে তা সুনিশ্চিত। কারণ টেল এন্ডার হলেও পরের ব্যাটসম্যানরা বেশ কার্যকরী ব্যাট হাতে। আছেন লিটন দাস, মিরাজ, তাইজুল ও নাঈম। স্কোরটা তিনশ ছাড়িয়ে উঁকি দেবে বড় সংগ্রহের দিকে, এমন আশা করা মোটেও অমূলক নয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads