• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
হঠাৎ মুখ খুললেন সাকিব

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

হঠাৎ মুখ খুললেন সাকিব

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২২ মার্চ ২০২১

বাংলাদেশের কৃতী খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান টেস্ট খেলতে চান না, এই কথাটা এখন রটে গেছে মুখে মুখে। সাধারণ সমর্থকরা এমন ধারণা করতেই পারেন, তারা ভেতরের অনেক কিছু বুঝতে পারেন না। কী কারণে কোনো খেলোয়াড় কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেটাও হয়তো সবার বোধগম্য হয় না।

কিন্তু বোর্ডের দায়িত্বশীল কোনো জায়গা থেকে যখন কেউ বলেন এমন কথা, তখন সেটা মেনে নেওয়া কঠিন, মনে করেন সাকিব। দেশ তথা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আলাদা করেই আঙুল তুলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের দিকে।

শনিবার এক লাইভ অনুষ্ঠানে সাকিব সরাসরিই বলেন, আকরাম খান তার কথাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন। বিসিবির কাছে শ্রীলঙ্কা সফরে খেলতে চান না জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছেন, সাকিব জানালেন তাতেও তিনি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য আইপিএলটা খেলতে চান। টেস্ট খেলতে চান না এমন কথা কখনো কোথাও বলেননি।

আকরাম খানের এমন ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানো নিয়ে সাকিবের কথা, ‘আকরাম ভাই বলেছে আলাদা করে। শুক্রবারও সম্ভবত কোথাও বলেছে যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমার ধারণা তিনি চিঠিটা ঠিকভাবে পড়েনইনি। বারবার তিনি বলছেন, আমি টেস্ট খেলতে চাই না। এটা আমি কোথাও বলিনি।’

সাকিব যোগ করেন, ‘আমি যে মাঠে খেলব সেই মাঠেই সেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে চার মাস পর খেলব বিশ্বকাপ। আমি তাই এই জায়গায় অন্যদের তুলনায় বেশি প্রস্তুতি নিতে পারব। বাংলাদেশ দলের অন্যদের সঙ্গেও আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারব। এটা দলকে সাহায্য করবে। একেকজনের কাছে একেকরকম মনে হতে পারে। যে যে জায়গায় থাকে, সেই শুধু সেই পরিস্থিতিটা বুঝবে। আমি আশাও করি না সবাই এটা বুঝবে। মানুষের কথা থাকবেই, এটা নিয়ে আমি চিন্তা করি না। এমন কোনো জায়গা থেকে ভুল মন্তব্য করা উচিত নয়, যেটা মানুষকে ভুল ভাবতে সাহায্য করে।’ 

আকরাম খানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সাকিব বলেন, ‘ক্রিকেট অপারেশন্স জাতীয় দল নিয়ে কী কাজ করেছে, কী প্ল্যান করছে? তাদের ব্যর্থতা বা সাফল্য কী? আকরাম ভাই তো অনেক গাটসি (সাহসী) মানুষ, এর আগে উনি পদত্যাগও করেছেন। ব্যর্থতার দায় তো তার ওপরও পড়ে, নাকি?’ সাকিব যোগ করেন, ‘আমাদের এইচপি শেষ চার-পাঁচ বছরে কয়টা খেলোয়াড় তৈরি করেছে, আমি জানি না। অনেকেই আছেন, তারা একসময় বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তারা আসলে (বোর্ডে) কী নিয়ে কাজ করছেন, আমি জানি না।’

বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন আর পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন ছাড়া বাকিরা কী কাজ করেছেন ক্রিকেটের উন্নতির জন্য, খুঁজে পাচ্ছেন না সাকিব। তার কথা, ‘আমাদের থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত একটা গ্যাপ। এই জায়গায় কী কাজ হয়েছে? আমাদের একাডেমি বা এইচপিতে তো এমন তো কোনো কাজ দেখি না। সুজন ভাই ছাড়া কারও খুব বেশি ইনভলভমেন্ট নাই। গত চার-পাঁচ বছরে আমি তো কিছু দেখি না। পাইপলাইন মানেই এমন খেলোয়াড় যে এসে জায়গাটা পূরণ করবে। এমন কিছু কি হয়েছে?’

বিসিবি প্রেসিডেন্টের অবদানের কথাও আলাদা করে উল্লেখ করে সাকিব বলেন, ‘আমরা সব সময় পাপন ভাইকে দোষ দেই। পাপন ভাই আমার কাছে মনে হয় যত বেশি চিন্তা করে, ওত বেশি চিন্তা খুব কম মানুষই আছে ক্রিকেট বোর্ডে করে। সুজন ভাইও করে। তার ফলটাও আমরা দেখতে পাচ্ছি। যুবদল ভালো করছে। এই দুজন ছাড়া ক্রেডিট দেওয়ার মানুষ তো দেখি না, যারা আসলে ক্রিকেটটা নিয়ে ভাবছে।’

সাকিব মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে স্বভাবজাত একটা প্রবণতা আছে, বিদেশিদের অনেক মূল্যায়ন করা। কিন্তু নিজের দেশের বড় কাউকেও আমরা প্রাপ্য সম্মানটা দিতে পারি না। সাকিবের বলেন, ‘নির্মম সত্যটা হচ্ছে, যখন আমাদের দেশে বাইরের কেউ খেলতে আসে, আমরা তাদের স্যার-হুজুর করতে থাকি দু-একজন ছাড়া। যারা অল্প কটা ম্যাচ খেলেছে বা খেলেওনি তাদের সাথে আমরা এমন করি। অথচ আমাদের দেশে যারা ৫-৭-১০ বছর খেলেছে বা খেলছে, তাদের আমরা শ্রদ্ধা করি না। আমার দেশের মানুষই যদি আমাকে শ্রদ্ধা না করে বোর্ড না করে। তাহলে উন্নতিটা হবে কীভাবে?’

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads