• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
ড্র’র পথে পাল্লেকেলে টেস্ট

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

ড্র’র পথে পাল্লেকেলে টেস্ট

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ এপ্রিল ২০২১

রান উৎসবে ড্রয়ের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার পাল্লেকেলে টেস্ট। গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ তিন উইকেটে ৫১২ রান। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল সাত উইকেটে ৫৪১ রান, (ডি.ক্লে.)। এখনো ২৯ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ। আজ ম্যাচের শেষ দিন। ম্যাচের ফল যেন সবার জানা হয়ে গেছে।

শনিবার সারা দিন ব্যাট করেছে শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যান করুনারত্নে ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এই জুটি ভাঙতেই পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ৩২২ রান করেও এই জুটি এখনো অবিচ্ছিন্ন, বল খেলেছে ৫২৪।

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের হাহাকার- এই পিচে বোলারদের জন্য কিছু নেই। ওদিকে বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বললেন, ৫২০ রান পেলেই তিনি খুশি। তিনি ভেবেছিলেন ওই স্কোরে চাপে ফেলা যাবে শ্রীলঙ্কাকে। কিসের চাপ! ক্যান্ডি টেস্টের চতুর্থ দিনে কোনো উইকেটই পড়ল না। আলোর স্বল্পতায় আগেভাগে খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার সময় রান পাহাড়ে লঙ্কানরা। সত্যি বোলারদের জন্য কিছু নেই পাল্লেকেলের উইকেটে! বাংলাদেশের বোলারদের অসহায়ত্বের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানের হাসির ফোয়ারা। যে শট যেভাবে খেলতে চেয়েছেন, ব্যাট ঠিক তাই শুনেছে। ড্রাইভ, কাট, ডাউন দ্য উইকেট, পুল, সুইপ-লেগেছে মাঝ ব্যাটে। যদিওবা কখনো মিস হচ্ছে, তাতেও কোনো বিপদ ঘটছে না। শুধু ওভারের পর ওভার করে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ-তাইজুল ইসলামরা। বিপরীতে ব্যাটিং স্বর্গে দিমুথ করুনারত্নে পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা হাসছেন দ্বিতীয় দেড় শ ছাড়ানো ইনিংস খেলে।

তৃতীয় দিন অপরাজিত থেকে গিয়েছিলেন প্যাভিলিয়নে। আর গতকাল গোটা দিন ব্যাট করলেন, পঞ্চম দিনেও তারা নামবেন। করুনারত্নে অপরাজিত ২৩৪ রানে, আর ধনঞ্জয়ার নামের পাশে হার না মানা ১৫৪ রানের ইনিংস। আলোর স্বল্পতার কারণে খেলা আগে বন্ধ না হলে হয়তো যোগ হতো আরো কিছু রান।

প্রথম দফায় আলোর অভাবে খেলা বন্ধ হয় স্থায়ীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টার পর। মেঘে ঢাকা পড়েছিল আকাশ, তাই আলোর কমতি দেখা দিয়েছিল। যদিও খানিক পর খেলা শুরু হতেই ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন করুনারত্নে। তাসকিন আহমেদের বল তার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপার ও প্রথম স্লিপের মাঝখান দিয়ে পেরিয়ে যায় সীমানা, আর তাতেই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। টেস্টের শীর্ষ যে ৯টি দেশ আছে, তাদের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান হিসেবে সবশেষ ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা, ২০১৫ সালে। প্রায় ৬ বছর আবারো লঙ্কানরা এই কীর্তি দেখল করুনারত্নের সৌজন্যে।

ঘরের মাঠের সুবিধা সব দলই পেতে চায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যান্ডি টেস্টেও শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক করুনারত্নের প্রত্যাশা ছিল তেমনটাই। কিন্তু উইকেটে বোলারদের জন্য কিছুই পাননি তিনি। তাই রানের পাহাড় গড়েছে বাংলাদেশ। তার জবাবটা করুনারত্নে নিজেই দিচ্ছেন ব্যাট হাতে। দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। আলোর স্বল্পতা কাটিয়ে মাঠে ফেরার দ্বিতীয় ওভারেই মাইলফলকটি ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। ৩৮৭ বলে পান ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। এত দিন তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৯৬।

ডাবল সেঞ্চুরির পথে রয়েছেন ধনঞ্জয়াও। যদি শেষ দিনে সুযোগ পান ব্যাট করার এবং পিচের অবস্থা একই থাকে, তাহলে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক তিনিও পেয়ে পেতে পারেন। অপরাজিত ১৫৪ রানের ইনিংসটি এই ব্যাটসম্যান সাজিয়েছেন ২০ বাউন্ডারিতে। আর চতুর্থ উইকেটে করুনারত্নের সঙ্গে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ৩২২ রানের জুটি।

ওভারের পর ওভার পার হলো, কিন্তু এলো না কোনো সাফল্য। ক্যান্ডি টেস্টের চতুর্থ দিনের পুরোটাই উইকেটশূন্য বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে হয়েছে ৩১ ওভার। আধিপত্য বিস্তার করে লঙ্কানরা উইকেট অক্ষত রেখে তোলে ১০২ রান। পরের দুই সেশনেও একই অবস্থা। চতুর্থ দিনে ৭৬ ওভার বল করেছে বাংলাদেশ। পেস-স্পিনের সঙ্গে অধিনায়ক মুমিনুল নিজেও এসেছেন বোলিংয়ে। কোনো লাভ হয়নি, বড্ড একটি অসহায় দিন কাটল!

টেস্ট ক্যারিয়ারে এর আগে চারবার দেড় শ ছুঁয়ে ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পাননি করুনারত্নে। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুবাই টেস্টে আউট হয়েছিলেন ১৯৬ রান করে। পরের বছর গলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৫৮ রানে অপরাজিত থাকতে হয়েছিল সঙ্গীর ওভাবে। একই মাঠে ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছিলেন ১৮৬, এর আগের বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ১৫২।

শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়া চতুর্থ ব্যাটসম্যান করুনারত্নে। মাহেলা জয়াবর্ধনে তিনবার এই কীর্তি গড়েছেন নেতৃত্বের ম্যাচে, একবার করে মারভান আত্তাপাত্তু ও কুমার সাঙ্গাকারা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি ২৮তম ডাবল সেঞ্চুরি, সবচেয়ে বেশি ৭টি করেছেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরাই। সাঙ্গাকারা একাই করেছেন ৩টি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads