• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

লিটন-সাকিবে বড় জয় বাংলাদেশের

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০২১

ওপেনার লিটন দাসের অনবদ্য সেঞ্চুরির পর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের মারাত্মক বোলিংয়ে বাংলাদেশ স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে ১৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজে শুভসূচনা করেছে। শুক্রবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান করে বাংলাদেশ দল। জবাবে জিম্বাবুয়ে ২৮.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে করে ১২১ রান।

এটা ছিল জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ৭৬ ম্যাচে ৪৮তম জয়। আর জিম্বাবুয়ের মাটিতে এটা ছিল বাংলাদেশের ১৪তম জয়। বাংলাদেশের বাকি ৩৩টি জয় আসে নিজেদের মাটিতে এবং ১টি জয় নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। যেখানে জিম্বাবুয়ের মোট জয় ২৮টি। 

২৭৭ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে দলীয় মাত্র ১৩ রানের মধ্যে ২টি উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মারুমানি (০) আউট হন সাইফুদ্দিনের বলে। আর মাধেভেরেকে (৯) ফিরিয়ে দেন সাকিব। চাকাভা ৫৪ রানের একটি সাবলীল ইনিংস খেললেও আর কেউ ঠিকমতো ক্রিজে দাঁড়াতে পারেন নি। এছাড়া অধিনায়ক টেইলর ২৪ ও মায়ার্স ১৮ রান করেন। বাংলাদেশের সাকিব ৩০ রানে ৫টি উইকেট পান। তাসকিন, মিরাজ ও শরিফুল ১টি করে উইকেট লাভ করেন। 

এর আগে টসে হেরে পেসবান্ধব কন্ডিশনে ব্যাট করতে গিয়েই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভার থেকে আসেনি কোনো রান। তৃতীয় ওভারের ব্লেসিং মুজারাবানির প্রথম বলেই কাবু তামিম ইকবাল। লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ধরা দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তিনে নেমেই ব্যাটে বল লাগিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু ভালো টাচে শুরুটা কাজে লাগল না। অস্থির হয়ে গেলেন দ্রুতই। বেশ কয়েকবার পরাস্ত হয়ে অস্বস্তিতে পড়া এই ব্যাটসম্যান মুজারাবানির বলে সহজ ক্যাচ দেন পয়েন্টে।

মোহাম্মদ মিঠুন নেমেছিলেন মুশফিকুর রহিমের জায়গায়। কিন্তু সুযোগটা বিফলে হারালেন তিনি। লিটনকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের আভাস দিয়েও তা নিভেছে দ্রুত। ১৯ বলে ১৯ করা মিঠুন টেন্ডাই চাতারার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে দেন ক্যাচ।

লিটন পরে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেনকে। তবে এই জুটির অবদানও কেবল ১৭। রিচার্ড এনগারাভার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে মোসাদ্দেকও ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ৭৪ রানেই ৪ উইকেট খুঁইয়ে বসে বাংলাদেশ।

এরপর লিটনের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদউল্লাহ। শুরুতে সময় নিয়ে থিতু হওয়া লিটন পরিস্থিতির দাবি মেটাচ্ছিলেন ঠাণ্ডা মাথায়। শটের সংখ্যা কমিয়ে টিকে থাকার দিকে মন দেন তিনি।

৭৮ বলে মাত্র ৩ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মন্থর ফিফটি স্পর্শ করেন লিটন। মাহমুদউল্লাহও সময় নিয়ে থিতু হয়ে রান বাড়াতে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে বড় জুটির পর শেষটাও রাঙানোর আভাস ছিল তার। তবে ১০৩ বলে ৯৩ রানের জুটির পর বিদায় মাহমুদউল্লাহর। ৫২ বলে ৩৩ করা মাহমুদউল্লাহ লুক জঙ্গুইর স্লোয়ার বাউন্সার মারতে গিয়ে পুরো ব্যাটে লাগাতে পারেননি। সহজ ক্যাচ যায় উইকেটের পেছনে।

শুরুতে সময় নিয়ে থিতু হওয়া লিটন ফিফটির পর ছিলেন অনেকটা সাবলীল। বাউন্ডারির ওপর জোর না দিয়ে দারুণ বিচক্ষণভাবে  সিঙ্গেল-ডাবলসের ওপর ভর দিয়ে এগিয়ে নেন ইনিংস। রান-বলের ব্যবধানও ক্রমশ কমে আসে। প্রথম ফিফটি করতে ৭৮ বল লাগালেও পরের ফিফটি আনেন মাত্র ৩২ বলে। ১০০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারে চতুর্থ বারের মতো তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন এই ডানহাতি ওপেনার। সেঞ্চুরির পর মেরে খেলে রান বাড়ানোর দায় ছিল লিটনের ওপরই বেশি। সেই চেষ্টাতে গিয়েই হয়ে যায় গড়বড়। এনগারাভাকে পুলে উড়াতে গিয়ে ভালো টাইমিং হয়নি, ক্যাচ যায় ফাইন লেগে। ১১৪ বলে ১০২ রানে থামেন লিটন। পরে আফিফ দাঁড়িয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পথ হারায়নি। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে আরো ৫৮ রান যোগ করেন তিনি। স্লগ ওভারে নেমে মিরাজ ছিলেন কিছুটা মন্থর। আফিফ অবশ্য সবটা পুষিয়ে দেন। তবু শেষ ৬০ বলে ৭৭ রানের বেশি আসেনি।

৪৯তম ওভারে মিরাজ ২৫ বলে ২৬ করে ক্যাচ দেওয়ার পরের বলেই স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন আফিফ। ৩৫ বলে দলের চাহিদা মেটানো ৪৫ এসেছে তার ব্যাটে। তাতে বাংলাদেশ দল পেয়েছে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।

লিটন দাস ম্যাচসেরা হন। আগামীকাল রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডে একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads