• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
টাইগারে কুপোকাত অজি বাহিনী

ছবি: ইন্টারনেট

ক্রিকেট

টাইগারে কুপোকাত অজি বাহিনী

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ০৩ আগস্ট ২০২১

অনেকটাই দুর্বল দল নিয়ে বাংলাদেশে আসে অস্ট্রেলিয়া দল। দলে নেই স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের মতো তারকা খেলোয়াড়। এই তুচ্ছ-তাচ্ছিলের দারুণ জবাব দিয়েছে টাইগাররা। মঙ্গলবার মিরপুরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ২৩ রানে শক্তিশালী অজি বাহিনীকে হারিয়ে দেয়। বাংলাদেশের ৭ উইকেটে ১৩১ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া সব উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৮ রান করে। এটা ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ৫ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জয়। 

সফরকারী দলকে চাপে ফেলতে স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বলেই সাফল্য মাহেদি হাসানের, বোল্ড করেন অ্যালেক্স কারেকে (০)। পরের ওভারে নাসুম আহমেদের ঘূর্ণি ডেলিভারি কিছুটা এগিয়ে খেলতে গিয়ে জশ ফিলিপ (৯) হন স্ট্যাম্পিং। বল পেয়ে চোখের পলকে স্টাম্প ভেঙে দেন নুরুল হাসান সোহান। তৃতীয় ওভারে আরো এক উইকেট। এবার সাকিব নিজের প্রথম বলেই বোল্ড করেন ময়েসেজ হেনড্রিকসকে (১)। সুইপ করতে গিয়ে বল টেনে নিয়ে উইকেট হারান হেনড্রিকস।

চতুর্থ জুটিতে মিশেল মার্শ ও অধিনায়ক ম্যাথিউ ওয়েড বেশ আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকেন। তবে দলীয় ৪৯ রানের মাথায় ওয়েডকে ফিরিয়ে দেন নাসুম। তার ক্যাচ লুফে নেন মোস্তাফিজ। ওয়েড করেন ২৩ বলে ১৩ রান। দলীয় ৭১ রানের সময় অস্ট্রেলিয়ার অ্যাগার নাসুমের বলে হিট উইকেট হন। তিনি করেন ৭ রান। দলীয় ৮৪ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে অজিদের। নাসুমের বলে শরিফুলের হাতে ধরা পড়েন মার্শ। তিনি ৪৫ বলে ৪৫ রান করেন। দলীয় ১০০ রানের সময় সপ্তম উইকেট হারায় সফরকারীরা। মোস্তাফিজের বলে টার্নার (১০) ক্যাচ তুলে দেন মাহমুদউল্লাহর হাতে। দলের ১০২ রানের মাথায় শরিফুলের বলে টাই (০) আউট হন। তিনি ক্যাচ তুলে দেন নাইমের হাতে। এরপর দলীয় ১০৪ রানের সময় শরিফুলের বলে জাম্পা (০) আউট হন। তার ক্যাচ নেন আফিফ। স্টার্ক অপরাজিত ১৪ রান করেন।

বাংলাদেশের নাসুম মাত্র ১৯ রানে ৪টি উইকেট লাভ করেন। শরিফুল ও মোস্তাফিজ ২টি করে এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব ১টি করে উইকেট পান।   

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই অজি বোলারদের চাপের মুখে ছিল বাংলাদেশ। আত্মঘাতী হয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। রীতিমতো হাঁসফাঁস করছিলেন উইকেটে, শেষ পর্যন্ত নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন বাঁহাতি এই ওপেনার। জশ হ্যাজলেউডের বলটি বানিয়ে মারতে গিয়েছিলেন, কাট করে সেটি নিজের উইকেটেই টেনে আনেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলের ঘটনা। সৌম্য ৯ বলে করেন মাত্র ২ রান।

সৌম্য ফেরার পর নাইম শেখ মোটামুটি ভালো খেলছিলেন। মিচেল স্টার্ককে ফ্লিক করে বড় এক ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আবার রানের গতি আটকে যায় নাইমের।

সেই চাপ থেকেই বোধ হয় অ্যাডাম জাম্পাকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন সপ্তম ওভারের শেষ বলে। বলটি মিস করে হন পরিষ্কার বোল্ড, ২৯ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় নাইম করেন ৩০ রান।

এরপর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন কিছুটা। যদিও তেড়েফুড়ে খেলতে পারেননি তারাও। ৩২ বলের জুটিতে তারা যোগ করেন ৩৬ রান।

ডাউন দ্য উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। হ্যাজলউডের বলে দৌড়ে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন ময়েচেস হেনড্রিকস। মাহমুদউল্লাহর ২০ বলে সমান রানের ইনিংসটিতে ছিল একটি ছক্কার মার।

এরপর নুরুল হাসান সোহানও উইকেটে টিকতে পারেননি। অ্যান্ড্রু টাইয়ের এক ডেলিভারি অনেকটা সামনে এগিয়ে গিয়ে ওয়াইডের কাছাকাছি জায়গা থেকে তুলে মারেন তিনি, ৪ বলে ৩ রান করে হন মিচেল মার্শের ক্যাচ।

৮৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১৪.৩ ওভারও পার হয়ে যায়। উইকেটে ভরসা হয়ে ছিলেন সাকিব। কিন্তু আর সবার মতো তিনিও ঠিক টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩৬ রান করে হ্যাজেলউডের স্লোয়ারে বোল্ড হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

শামীম হোসেন পাটোয়ারী আন্তর্জাতিক আঙিনায় এবার প্রথম কঠিন বোলিংয়ের মুখে পড়েন। স্টার্কের টানা দুই বলে দুই করে চার রান নিলেও পরে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হন তরুণ এই ব্যাটসম্যান (৩ বলে ৪), ওপরে যায় লেগস্ট্যাম্প।

আফিফ হোসেন শেষ ওভারে এসে আউট হয়েছেন সেই স্টার্কের বলেই। এবারো বোল্ড, ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৩ রান করে ইনিংসের শেষ বলে উইকেট হারান আফিফ।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন হ্যাজলেউড। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রানে ৩টি উইকেট নেন এই পেসার। স্টার্কের শিকার ২টি।

বাংলাদেশ ও সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচ আজ বুধবার। এরপর ৬, ৭ এবং ৯ আগস্ট সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।

 

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads