• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
 বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া বধ

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া বধ

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ০৪ আগস্ট ২০২১

অসাধারণ ম্যাচ, অসাধারণ ফলাফল, অসাধারণ টাইগার বাহিনী। ক্রিকেটের আদিভূমি অস্ট্রেলিয়াকে টানা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পরাস্ত করল স্বাগতিক বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে সিরিজ লাভের দোরগোড়ায় এখন লাল-সবুজের দল। অনেক নেগেটিভ অ্যাপরোচের পরও বাংলাদেশ জয়ের নিশানা বজায় রাখতে সমর্থ হলো। বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১২১ রানে বেঁধে রেখে ১৮.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১২৩ রান করে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। জয় এলো ৫ উইকেটে। শাবাশ বীর সেনানী! শাবাশ বীর ক্রিকেট দল!!

মাত্র ১২২ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে অনেকটাই গা-ছাড়া ভাব নিয়ে খেলতে থাকেন বাংলাদেশের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই। দলীয় মাত্র ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। সৌম্য সরকারকে (০) বোল্ড করেন স্টার্ক। দলের রান ২১ হতেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ নাঈম (৯) হ্যাজেলউডের শিকারে পরিণত হন। দ্রুতগতিতে রান তুলছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু টাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। সাকিব করেন ১৭ বলে ২৬ রান। এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ (০) দলীয় ৫৯ রানের সময় অ্যাগারের বলে বোল্ড হন। বেশ কয়েকবার জীবন ফিরে পাওয়া মাহেদি হাসান আউট হন দলীয় ৬৭ রানের সময়। জাম্পার বলে স্টাম্প হন মাহেদি। তিনি ২৪ বলে ২৩ রান করেন।

৫টি উইকেট পড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ চাপে পড়ে। কিন্তু ষষ্ঠ জুটিতে আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান দারুণ এক জুটি গড়েন। তারা বেশ আস্থার সঙ্গে খেলে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ত্যাগ করেন। 

আফিফ ৩১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৭ এবং সোহান ২১ বলে ৩টি চারে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন।

অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ক, হ্যাজেলউড, অ্যাগার, জাম্পা ও টাই ১টি করে উইকেট লাভ করেন।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বেশ দেখেশুনে শুরু করেন তাদের দুই ওপেনার অ্যালেক্স কারে আর গ্লেন ফিলিপে। এবারো স্পিন দিয়ে বোলিং শুরু করে বাংলাদেশ। মাহেদি হাসানকে আক্রমণে আনেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ওভার থেকে মাত্র ১ রান তুলতে পারে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারেই নাসুম আহমেদের ওপর চড়াও হন কারে, জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান। তবে পরের ওভারে এসে এই ওপেনারকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন মাহেদি। ওভারের তৃতীয় বলে ঘূর্ণি বুঝতে না পেরে কারে (১১ বলে ১১) তুলে দেন মিড অফে, নাসুম নেন সহজ ক্যাচ। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

এরপর বল হাতে নিয়ে নিজের প্রথম ওভারেই জাদু দেখান মোস্তাফিজ। কাটার মাস্টারের অবিশ্বাস্য এক ডেলিভারিতে বোকা বনে যান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ফিলিপে। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের ঘটনা। ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হজম করলেও এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান ফিজ। দ্বিতীয় আর তৃতীয় বলে দেন ডট। চতুর্থ বলেই অবিশ্বাস্য এক ডেলিভারি। ফিলিপে (১৪ বলে ১০) ছাড়বেন কি খেলবেন, বুঝতে বুঝতেই পেছন দিক দিয়ে উম্মুক্ত হওয়া লেগ স্টাম্প উড়ে যায় মোস্তাফিজের কাটারে।

৩১ রানে ২ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া এরপর দেখেশুনে খেলার কৌশল নেয়। তৃতীয় উইকেটে পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি গড়েন ময়েচেস হেনড্রিসক আর মিচেল মার্শ। তাদের ৫২ বলে ৫৭ রানের জুটিটি শেষ পর্যন্ত ভেঙেছেন সাকিব আল হাসান। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাকিবকে সুইপ খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন হেনড্রিকস। ২৫ বলে করেন ৩০ রান। মার্শ আরো একবার ধরে খেলছিলেন। তবে ভুল করে বসেন শরিফুল ইসলামের বেরিয়ে যাওয়া এক ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে। ৪২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করা এই ব্যাটসম্যান ক্যাচ হন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের। একশর আগে (৯৯ রানে) ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

১৮তম ওভারে এসে অস্ট্রেলিয়ার দুঃখ আরো বাড়ান মোস্তাফিজ। টানা দুই বলে তুলে নেন দুই উইকেট। অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড (৭ বলে ৪) লেগ স্টাম্প খালি করে শট খেলতে গিয়েছিলেন, মোস্তাফিজের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প যায় ওপরে। পরের বলে অ্যাশটন অ্যাগারও হন বিভ্রান্ত। তার গ্লাভসে লেগে বল উঠে যায় ওপরে। উইকেটরক্ষক সোহান সেই ক্যাচ নিতে ভুল করেননি। হ্যাটট্রিক ডেলিভারিটি ওয়াইড দেন মোস্তাফিজ। ফলে সুযোগ ছিল পরের বলে। এবার মিচেল স্টার্কেরও এজ হয়েছিল। একটুর জন্য ক্যাচ হয়নি। শেষ পর্যন্ত ধুঁকতে থাকা অস্ট্রেলিয়া আর পুঁজিটা বড় করতে পারেনি।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোস্তাফিজ। ৪ ওভারে ২৩ রান খরচায় নিয়েছেন ৩টি উইকেট। সমান ওভারে ২৭ রানে ২ উইকেট শরিফুলের। মাহেদি ও সাকিব একটি করে উইকেট লাভ করেন।

বাংলাদেশ ও সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল শুক্রবার। এরপর ৭ এবং ৯ আগস্ট সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।

 

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads