• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা

গাজীপুর নগর ভবন

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা

  • গাজীপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ জুন ২০১৮

শনিবার মধ্যরাতের মধ্যে সব বহিরাগতদের গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছিল, এলাকার বাসিন্দা নয় বা ভোটার না, তাদের ২৩ জুন রাত ১২টার পূর্বেই নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করতে হবে। প্রশাসনের সেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থনে প্রচার চালিয়েছেন খুলনার নতুন মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।

জাহাঙ্গীরের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বিষয়টি ‘জানতেন না’ বলে কর্মসূচির ইতি টানতে হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে। প্রশ্নের মুখে ওই সংবাদ সম্মেলন ছাড়তে বাধ্য হন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলামও।

ইসির নির্দেশনা উপেক্ষার এই ঘটনাগুলোর পাশাপাশি গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার হারুন-অর রশীদের ভূমিকা নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন তুললেও কোনো ক্ষেত্রেই ইসির পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগে রোববার ছিল প্রচারের শেষ দিন। এই দিন প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সরগরম ছিল রাজধানী লাগোয়া এই নগরী। এর মধ্যেই সকালে নগরীর চান্দনা-চৌরাস্তা মোড়ে নৌকা প্রতীকের জাহাঙ্গীরের পক্ষে ভোট চান নৌকায় ভোট করে খুলনায় বিজয়ী মেয়র তালুকদার খালেক।

তিনি গাজীপুরবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের মনে রাখতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল। গাজীপুর পিছিয়ে থাকতে পারে না। তার প্রার্থীকে ভোট দিলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে আপনাদের জন্য প্রকল্প নিয়ে, টাকা নিয়ে আসতে পারবেন। আপনাদের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।’

এরপর দুপুরে ছয়দানা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করতে আসেন ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা নওফেল। বহিরাগতদের বিষয়ে নির্দেশনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম, ২৪ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত এখানে প্রচার চালানো যাবে। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশনার বিষয়ে জানতাম না। আপনারা যেহেতু নজরে এনেছেন, এখন আর মতবিনিময় সভা চালু রাখা হবে না।’

এরপর বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আতিকুলকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর। বহিরাগতদের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর আতিকসহ কয়েকজন মঞ্চ থেকে নেমে যান।

বিষয়টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নেতারা ‘জানতেন না’ বললেও গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে ১২ জুন।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বহিরাগতদের অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আচরণবিধির কোনো তোয়াক্কা করছে না। নির্বাচন কমিশন বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকায় অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে খুলনার বিতর্কিত ভোটের মেয়রসহ কেন্দ্রীয় নেতাদেরকেও আজকেও প্রচারণা করতে দেখা গেছে।’

ইসি কর্মকর্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বহিরাগতদের এলাকা ছাড়ার বিষয়টি আচরণবিধি ও নির্বাচন বিধিতে না থাকলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রে উল্লেখ করা থাকে। ইসির উপ সচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বহিরাগতদের এলাকা ছাড়ার বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক ইসির একটা সিদ্ধান্ত, যা আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে জারি করা হয়।’

মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র উপেক্ষিত হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ঢাকায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে গাজীপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘খুব ভালোভাবে চলছে, খুব সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। খারাপ হলে তো আমরা খবর পেতাম।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads