একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। বগুড়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখনো নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হয়নি।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল বিকালে বগুড়া জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন সিইসি। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে হওয়া ওই ‘রুদ্ধদ্বার সভা’ করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন তিনি। এতে সিইসি বলেন, নির্বাচনের তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। তবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি কোনো রাজনৈতিক দলের অনাস্থার বিষয়ে নুরুল হুদা বলেন, তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে এটা বলতেই পারে, এটা তাদের ব্যাপার। তবে আমাদের সক্ষমতা নিয়ে আমরা সন্ধিহান নই। আমরা মনে করি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা প্রস্তুত আছি এবং এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে।
সব দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- এটাই আমরা চাই। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু কেউ নির্বাচনে না এলে আলাদা করে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আর বসার কোনো সুযোগ ও সময় নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো দলের কেউই যদি নির্বাচনে অংশ না নেন তাহলে রেজিস্ট্রেশন বাতিলের ঝুঁকি তো থেকেই যায়।
ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে নুরুল হুদা বলেন, সব রাজনৈতিক দল ও জনগণ চাইলে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হবে। তবে তা সীমিত পরিসরে। ইভিএম ব্যবহার-সংক্রান্ত বিভিন্ন অঞ্চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিক, জনগণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে থাকবেন।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির সঙ্গে এগিয়ে যেতে আমরা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে চাই, তবে এ ক্ষেত্রে আইনের পরিবর্তন দরকার। সেই আইন পরিবর্তনের জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। যদি সেটা আইনে পরিণত হয়, তাহলে আমরা সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করব।
বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ নূরে আলম সিদ্দিকী, পুলিশ সুপার মো. আশরাফ আলী ভূঞা, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার রাজশাহী সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, র্যাব-১২ বগুড়া কমান্ডার মেজর এসএম মোর্শেদসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে বগুড়া সার্ভার স্টেশনে রাজশাহী বিভাগ ও বগুড়ার বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা।