• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
নভেম্বরে গড়াতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

প্রতীকী ছবি

নির্বাচন

নভেম্বরে গড়াতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ০৫ অক্টোবর ২০১৮

নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে নতুন চিন্তা ও পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই সরকার গঠনের এক ধরনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা এতদিন ছিল তাদের। চলতি মাসের মাঝামাঝি এই সরকার গঠনের সম্ভাবনা নেই। এ মাসের শেষের দিকে ওই সরকার গঠনের পরিকল্পনা থাকলেও তা নভেম্বর পর্যন্ত গড়াতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত করেননি বলে ক্ষমতাসীন দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্র বাংলাদেশের খবরকে জানায়।

সূত্র মতে, নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদ কম সময়ের মধ্যে রেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার বিষয়ে পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদ ৫০ দিনের মধ্যে রাখতে চাইছেন ক্ষমতাসীনরা। ওই সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন প্রশাসনের ওপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। ফলে সরকারবিরোধী দলগুলো তখন আন্দোলন করে দেশে ভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না দলটির নীতিনির্ধারকরা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে জানান, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে। একই সময়ে নির্বাচনকালীন সরকারও গঠন করা হবে।’

সূত্র জানায়, আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হবে। তফসিল নির্বাচনের অংশ হওয়ায় এই সময়ের আগে তা ঘোষণার কোনো সুযোগ নেই। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে- নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য থেকেও এমন আভাস ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন হিসাব করে তফসিল ঘোষণা আর ভোট নেওয়ার মধ্যে ৪৫ দিনের ব্যবধান ধরলে তফসিল ঘোষণার সময় পড়ে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে।

নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ২৭ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ছিল। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার আগে তারিখটি সাংবাদিকদের বলে দেওয়ায় এক্ষেত্রে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ২৭ ডিসেম্বরের বদলে ২০ ডিসেম্বর এখন সম্ভাব্য তারিখ। ২০ ডিসেম্বরকে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ বিবেচনা করে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হলে নির্বাচনকালীন সরকারও একই সময়ে গঠন করা হতে পারে। সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে নাকি সামান্য আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে, এ বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘আগামী নির্বাচনকে বিতর্কমুক্ত রাখতে চায় সরকার। এ জন্য তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট নেওয়া পর্যন্ত ৪০ দিনের বেশি ও ৫০ দিনের কম সময়ের ব্যবধান রাখতে চায়। দশম সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট নেওয়ার ব্যবধান ৪২ দিন, নবম সংসদ নির্বাচনে ব্যবধান ৪৭ দিন এবং পঞ্চম থেকে অষ্টম সংসদেও ৪২ থেকে ৪৭ দিন ব্যবধান ছিল। নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদও রাখতে চায় ওই সময়ের কাছাকাছি। যদিও এমনটা করতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই।’

তফসিলের আগে না পরে নির্বাচনকালীন সরকার, এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। বিষয়টি তিনিই জানেন।’ ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম জানান, ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাজোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।’

মহাজোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের আলোচনা হবে শিগগিরই। তবে বৈঠকের তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।’

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে ২৫ থেকে ৩০ জনের সমন্বয়ে। এর প্রধান থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে এর আগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে গঠিত নির্বাচনকালীন সরকার ছিল ২৮ সদস্যের। ওই মন্ত্রিসভায় ২১ জন ছিলেন মন্ত্রী আর বাকিরা প্রতিমন্ত্রী। এবারের মন্ত্রিসভার আকারও গত সরকারের মতো হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads