আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক, এমনটাই চাইছে কমনওয়েলথ। সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে লেখা এক চিঠিতে সংস্থার মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড এ কথা বলেছেন। বিএনপির একটি দায়িত্বশীল নেতা চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দায়িত্বশীল ওই নেতা জানান, এর জবাবে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দেবে বিএনপি। চিঠিতে বিএনপি যে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক তা জানানো হবে। পাশাপাশি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিএনপি যে পরিবেশ চায় তা উল্লেখ করা হবে।
এদিকে চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে গতকাল বিকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে অংশ নেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকে চিঠির বিষয়বস্তু স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সামনে তুলে ধরা হয়। এ নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, চিঠিতে প্যাট্রিসিয়া লিখেছেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপিকে উৎসাহিত করছি। কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অপরিহার্য।’
বিএনপি যখন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশ-বিদেশে জনমত তৈরিতে ব্যস্ত, ঠিক সেই মুহূর্তে কমনওয়েলথ মহাসচিবের এমন একটি বক্তব্য দলের মধ্যে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বাংলাদেশের খবরকে বলেন, কমনওয়েলথ মহাসচিব সম্প্রতি যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিরোধী দলের ওপর হামলা-মামলা, হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘খারাপ’ নজিরও তুলে ধরা হয়েছিল। এর মধ্যে এমন একটি চিঠি তাদের মধ্যে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তিনি বলেন, হয়তো কমনওয়েলথ মহাসচিব সরকারকে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও তাগিদ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে এ চিঠি দেওয়া হয়।
চলতি বছরের আগস্টে কমনওয়েলথ মহাসচিব ঢাকা সফর করেন। ওই সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। প্যাট্রিসিয়া সেই সাক্ষাতের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেন।