• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
ভোটের হিসাবে প্রভাব ফেলতে পারে ইসলামী আন্দোলন

আগামী নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে ইসলামী আন্দোলন

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন

একাদশ জাতীয় নির্বাচন

ভোটের হিসাবে প্রভাব ফেলতে পারে ইসলামী আন্দোলন

  • কামাল মোশারেফ
  • প্রকাশিত ১৯ অক্টোবর ২০১৮

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন আলোচনার শীর্ষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একাদশ সংসদ নির্বাচনে চরমোনাই পীরের এ দল হাতপাখা প্রতীক নিয়ে এককভাবে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছে। সাধারণের বিশ্বাস, ভোটের হিসাবে বেশ প্রভাব ফেলতে পারে দলটি।

দলীয় ও নির্বাচন কমিশন তথ্যমতে, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর পর দেশের বৃহত্তম ধর্মভিত্তিক দল হিসেবে পরিচিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ১৯৮৭ সালের ১৩ মার্চ দেশবরেণ্য ওলামা-মাশায়েখদের নিয়ে ‘ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ এ দল গঠন করেন। পরে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী দলটির নাম পরিবর্তন করে ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ রাখা হয়। মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীমের মৃত্যুর পর তার চেলে মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম দলের আমিরের দায়িত্ব পান। ইসলামী আন্দোলন প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে দলটি।

১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে সাত দল মিলে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুজন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে এ দল জোট করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে। সেই সময় জোটগতভাবে নির্বাচন করে ২৩ আসনে। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো এককভাবে ১৬০ আসনে নির্বাচন করে দলটি। ভোট পায় ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৯টি। এই হার মোট ভোটের ১.০৫ শতাংশ।

দলটি দাবি করছে, একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ এবং অবাধ-নিরপেক্ষ হলে দলের প্রাপ্ত ভোটের হার হবে ৫ থেকে ৭ শতাংশ। ভোটসংখ্যা বাড়লেও এককভাবে নির্বাচন করে সংসদে আসন পাওয়াটা কঠিন। বিগত সিটি নির্বাচনে দলটি ভোটের রাজনীতিতে ব্যাপক চমক দেখিয়েছে। ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির হারে তিন নম্বর অবস্থানে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন। উপজেলা নির্বাচনেও ইসলামী ঐক্যজোট প্রার্থীরাও উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া সারা দেশে এক হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে দলের প্রার্থীরা তিন ইউনিয়নে জিতেছেন। প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে সমর্থিত চেয়ারম্যান আছেন আরো দুজন। বিজয়ী চেয়ারম্যানের সংখ্যা কম হলেও অনেক ইউনিয়নে দ্বিতীয় হয়েছেন দলটির প্রার্থীরা।

দলীয় সূত্র এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জোটহীন একলা চলো নীতি অবলম্বন করে আসছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একক রাজনৈতিক দল হিসেবে তৃতীয় বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে চায় তারা। ইতোমধ্যে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে দলটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, সারা দেশে ইসলামী আন্দোলনের লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছে। তারা নিশ্চয়ই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। সারা দেশের প্রতি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে ইসলামী আন্দোলনের কমিটি রয়েছে। আমাদের কর্মসূচির প্রতি নেতাকর্মীরা ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে। ৫ অক্টোবর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ইসলামী আন্দোলনের জাতীয় মহাসমাবেশে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

ইসলামী আন্দোলন কোনো জোটে যাবে কি না কিংবা ইসলামী দলগুলো নিয়ে জোট গঠন করে নির্বাচনী মাঠে আসবে কি না, জানতে চাইলে চরমোনাই পীর বলেন, আমাদের স্লোগান হচ্ছে নো আওয়ামী লীগ, নো বিএনপি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কোনো নির্বাচনী জোটে যোগ দিতে আগ্রহী নয়। ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কোনো জোট হলে শরিক হওয়ার চিন্তা করব। নিছক এমপি-মন্ত্রী হওয়া, ব্যক্তিস্বার্থ বা দুনিয়াবি কিছু সম্মানের জন্য কিংবা অর্থের লোভে আমরা কোনো জোটে যেতে আগ্রহী নয়। তবে আমাদের দলের মূলনীতি বা নীতি আদর্শের সঙ্গে যদি কোনো দলের মিল থাকে তাদের নিয়ে ঐক্য হতে পারে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেব। ইতোমধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads