• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
ইশতেহারের স্লোগান হচ্ছে ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’  

লোগো আ.লীগ

নির্বাচন

ইশতেহারের স্লোগান হচ্ছে ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’  

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ০৫ নভেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের শিরোনাম ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’। এখন পর্যন্ত এটিই চূড়ান্ত। ‘দিনবদল শুরু করেছি, দিনবদল এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে’ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে দলটির ইশতেহার তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রকাশিত ইশতেহারের মতো যেন চমক সৃষ্টি করতে পারে, দীর্ঘ সময় নিয়ে এবারো এমন ইশতেহার ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘দিনবদলের সনদ’ আর ২০১৪ সালে স্লোগান ছিল ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’। এগুলোর সঙ্গে মিল ও গত দশ বছরে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে এমন চিন্তা ও পরিকল্পনা থেকেই ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’ স্লোগানের পক্ষে দলটির নীতিনির্ধারক ও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির অনেকে। দলের টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয়ের লক্ষ্যে চমকপ্রদ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী ইশতেহার উপহার দেওয়াই নীতিনির্ধারকদের প্রচেষ্টা।

সূত্র জানায়, এবারের ইশতেহারে প্রাধান্য পাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২০তম ও সবশেষ জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণাপত্র। ওই সম্মেলনের স্লোগান ছিল ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্লোগানটি নির্ধারণ করে দেন। যা ব্যাপক আলোচিত হয়। দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে জনগণের মধ্যেও স্লোগানটি ব্যাপক সাড়া ফেলে।

ওই স্লোগানকে দলের আগামী ইশতেহারের স্লোগান করার পক্ষেও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির কারো কারো মত। আবার দলটির ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে নির্ধারিত স্লোগান ‘আওয়ামী লীগই পারে, আওয়ামী লীগই পারবে’, এটাকেও কেউ কেউ এবারের ইশতেহারের স্লোগান করার পক্ষে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে যে উন্নয়ন অব্যাহত থাকে, এ বিষয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি ইশতেহারেও স্পষ্ট বক্তব্য থাকছে। তাই ওই লাইনকে স্লোগান করার পক্ষে মত আছে। শেষ পর্যন্ত তা স্লোগান হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও ‘আওয়ামী লীগ পারে, আওয়ামী লীগই পারবে’ মূলমন্ত্রই থাকছে আগামী ইশতেহারে।

জানা যায়, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রকাশিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের চমক ছিল ‘রূপকল্প-২০২১’। যা ব্যাপক সাড়া ফেলে ও ভোটারদের আকৃষ্ট করে। ভোটার টানতে তা ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল বলে রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে ইশতেহারে দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। অনেক প্রতিশ্রুতি এর মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে আর কোনো কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এবারের সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এমনই কোনো আকর্ষণীয় স্লোগানের চমক দিতে চায় দলটি। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও এমন কথা সাংবাদিকদের কয়েকবার জানান।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ মনে করেন, ‘আওয়ামী লীগ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল, তার সবটাই বাস্তবায়ন করেছে।’

ইশতেহার প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মানুষের চাহিদা ও মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবারের ইশতেহারে।’

দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুই নেতা জানান, গত কয়েকবারের সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার কিছুটা আগে ইশতেহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরিকল্পনাও আছে দলের। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইশতেহার জাতির কাছে তুলে ধরার কথা রয়েছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৭ দিন ও দশম সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৭ দিন আগে প্রকাশ করলেও এবার আরো আগে ইশতেহার প্রকাশের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত সূত্র বাংলাদেশের খবরকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরির প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। টানা প্রায় দুই বছর দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজন ও গবেষকদের গবেষণা, গভীর পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শের মাধ্যমে প্রস্তুত হয়েছে ক্ষমতাসীন এ দলের আগামী নির্বাচনের ইশতেহার। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের প্রবীণ, অভিজ্ঞ তরুণ ও শীর্ষ কয়েক নেতা শুরু থেকেই জড়িত আছেন ইশতেহার প্রণয়নের কাজে।

সূত্র জানায়, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্রীড়াবিদসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব খাতের বিশেষজ্ঞরা ইশতেহারে কী কী থাকতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করেন। পাশাপাশি তারা বর্তমান অবস্থাও পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনের জন্য দলের ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কথা জানান। ওই সময়ের কিছু আগে থেকেই ইশতেহার তৈরির লক্ষ্যে পর্যবেক্ষণ শুরু হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads