• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
ভুলভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান শেখ হাসিনার

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবি: বাসস

নির্বাচন

ভুলভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান শেখ হাসিনার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ইশতেহার প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার জাতির কাছে দলীয় ইশতেহার ঘোষণার সময় গত এক দশকে সরকার পরিচালনায় ভুল-ভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন।

আজ সকালে ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ইশতেহারের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো তুলে ধরেন। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলে পরের পাঁচ বছরে এক কোটি ৫০ লাখ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলা থেকে গড়ে এক হাজার যুবক বা যুব মহিলার বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করারও প্রতিশ্রুতি রয়েছে ইশতেহারে। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কাজ করতে গিয়ে আমার বা আমার সহকর্মীদেরও ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। সেগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আরো সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাঙ্ক্ষিত ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, নিরক্ষরতা মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব ইনশাল্লাহ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দক্ষ, সেবামূলক প্রশাসন গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

প্রতিটি গ্রামে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক শহরের সব সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রতিটি গ্রামকে শহরের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হবে।’ গ্রহণযোগ্য, যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলন এবং এ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে কওমি ও মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেশের মূল শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করার কথা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব। এর আগেরবার আমরা যে ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম, তা আমরা বাস্তবায়ন করেছি।’

বাবা-মা, ভাই ও আত্মীয় পরিজনকে হারানোর পর তার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি রাজনীতি করছি শুধু জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এদেশের সাধারণ মানুষ যাতে ভালোভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায়, তাদের জীবন সমৃদ্ধশালী হয়, ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং বঞ্চনা থেকে তারা যেন মুক্তি পায়, তাদের জীবনটাকে আরো উন্নত করা- এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র কামনা।’

যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চান উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আগামী ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা সাড়ম্বরে পালন করব। বাঙালি জাতির এই দুই মাহেন্দ্রক্ষণ সামনে রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই পারবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে, পারবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে।’

ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। পরে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরা হয়। ইশতেহার পাঠের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও অন্য নেতাদের। মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ, দুই লাখ নির্যাতিত নারী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের এবং পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদেরও তিনি স্মরণ করেন। এরপরই তিনি দেশের বর্তমান অর্থনীতির একটি তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাকের স্বাগত বক্তব্যের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

অনুষ্ঠানে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রিসভার সদস্য, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক, প্রকৌশলী, বুদ্ধিজীবী, তরুণ সমাজের প্রতিনিধি, দেশি-বিদেশি সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads