• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মাঠে নেই বিএনপি ও লতিফ সিদ্দিকী

ছবি : বাংলাদেশের খবর

নির্বাচন

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী)

মাঠে নেই বিএনপি ও লতিফ সিদ্দিকী

সোহেলকে বিজয়ী করতে একাট্টা আ’লীগ

  • কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
  • প্রকাশিত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে নানা নাটকীয়তায় জমে উঠেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা চালাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। দিচ্ছেন নানা রকম প্রতিশ্রুতি। এই আসনটি দীর্ঘদিন স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক শাজাহান সিরাজ এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দখলে ছিল। শাজাহান সিরাজ প্রথমে জাসদ এবং পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালন করেছেন। অপরদিকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালন করেছেন। নানা কারণে এই দুই বর্ষীয়ান নেতা দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। তাই এই আসন নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন করে হিসাব নিকাশ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কালিহাতী আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আলহাজ হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য। গত ১৯ মাসে এমপি হিসেবে তিনি কাজও করেছেন প্রচুর। নতুন প্রজন্মের বড় একটি অংশ তার সঙ্গে রয়েছে। নির্বাচনে ভোটাররা তার কাজের মূল্যায়ন করবে বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ। এর আগেও তিনি কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এলাকাতে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছাত্রনেতা হিসাবেও। তিনি নৌকার টিকেট পেয়ে দিনরাত চষে বেড়াচ্ছেন তার নির্বাচনী এলাকা। শুরুতে দলের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি থাকলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে সোহেল হাজারীকে বিজয়ী করতে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে এই আসনে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত আলী। তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। নির্বাচনের আগে দল বদল করে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। ফলে তাকে নিয়ে অব্যাহত আছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এই আসনে বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় হতাশা কাজ করছে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাই দলের বেশিরভাগ নেতা মাঠে নেই। তারা কেউ গ্রেফতারের অজুহাতে আবার কেউবা অসুস্থতার অজুহাতে এলাকার বাইরে রয়েছেন। দল গোছাতে পারেননি ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত আলী। তেমন কোন উল্লেখযোগ্য প্রচার-প্রচারণাও চোখে পড়ছে না। সাংগঠনিকভাবে কৃষকশ্রমিক জনতালীগ কালিহাতীতে দুর্বল। তাই সাংগঠনিক দিক থেকেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মত অবস্থানে নেই।

এই আসনের অপর প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক বর্ষীয়ান নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী স্বতন্ত্রী হিসাবে ট্রাক গাড়ী প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। প্রথমদিকে তার সাথে দলের প্রভাবশালী কিছু নেতা থাকলেও দিন দিন তিনি সঙ্গীহীন হয়ে পড়ছেন। গত ১৬ ডিসেম্বর তার নির্বাচনী গাড়ি বহরে হামলার পর থেকে তিনি আমরণ অনশন করছেন। জেলা রিটার্রিং অফিসের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলেও তিনি এলাকাতে নেই। উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন তার সমর্থকরা । এ অবস্থাতে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী তার অতীতের সুনাম ধরে রাখতে পারবেন কিনা এ বিষয়েও আশংকা রয়েছে। বাকী চারজন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রার্থী সাদেক সিদ্দিকী ইতিমধ্যে নৌকার সমর্থনে প্রার্থীতা থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন। জাতীয় পার্টি সৈয়দ মুশতাক হোসেন রতন লাঙ্গল প্রতীকে , জাকের পার্টির মুন্তাজ আলী গোলাপফুল প্রতীকে এবং ইসলামী অন্দোলনের মির্জা আবু সাঈদ হাতপাখা প্রতীক নিয়ে লড়লেও তাদের লড়াইটা মূলত জামানত বাচানোর।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। লতিফ সিদ্দিকী মিথ্যা সিগনালের কথা বলে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরী করেছিল। এ নিয়ে প্রথমে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও এখন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ কাজে করে যাচ্ছে। এখানে বিএনপির কোন প্রার্থী নেই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে যিনি এসেছেন কয়েকদিন আগেও তিনি আওয়ামী লীগে ছিলেন। তাই এখানে নৌকার প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্যেও ঐক্যফ্রন্ট্রের প্রার্থী হিসাবে লিয়াকত আলীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যিনি কয়েকদিন আগেও আওয়ামী লীগে ছিলেন। যে কারণে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা হতাশ। পদ বাঁচাতে মাঠে নামতে হলেও তার জন্যে কেউ রিক্স নিবেন না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads