• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

গ্রামাঞ্চলে করোনা টিকার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ধারণা দরকার

  • প্রকাশিত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

শেখ সায়মন পারভেজ হিমেল

 

 

 

ছোটবেলা থেকেই গ্রামাঞ্চলে বেড়ে ওঠার প্রেক্ষিতে একটু বাড়তি অভিজ্ঞতা কাজ করে গ্রামীণ মানুষের জীবনযাপন নিয়ে। সে অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। অতি স্বল্প সময়ে দেশে করোনা টিকা প্রদানের পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তেমনি তা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জিংও বটে। সারাদেশে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচি। ঢাকা রাজধানীসহ সারাদেশে মোট এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মাধ্যমে জানতে পারি, রাজধানী ঢাকায় ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টি টিম কাজ করবে, সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে দুই হাজার ১৯৬টি টিম কাজ করবে। মোট এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে ২ হাজার ৪০০টিম কাজ করবে। এছাড়াও ভ্যাকসিন বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য টিম প্রস্তুত রয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। গত নভেম্বরে এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরামের সঙ্গে চুক্তি হয় বেক্সিমকোর। যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে গত ২৫ জানুয়ারি। এর আগে গত ২০ জানুয়ারি দেশে আসে ভারত সরকারের উপহার দেওয়া ২০ লাখ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন। প্রতিটি মানুষকে দুই ডোজ করে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে এই টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। এছাড়াও বাংলাদেশ গ্যাভি-কোভ্যাক্স থেকে ৬৮ মিলিয়ন বা ৬ কোটি ৮০ লাখ (প্রতিজন দুই ডোজ) ডোজ করোনার ভ্যাকসিন পাচ্ছে।

সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো, গত ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি দেশের পাঁচটি হাসপাতালে ৫৬৭ জনকে প্রাথমিকভাবে টিকা দেওয়া হয়। তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করা হয় এতদিন। কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এই ৫৬৭ জনের মধ্যে দেখা যায়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

প্রথম দিনেই করোনা টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মহোদয়, যা সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক বহন করে। যা হোক, সারা দেশে করোনা টিকা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জিং। কেননা যেখানে দেশের অধিকাংশ মানুষেরই করোনা টিকা নিয়ে স্বচ্ছ ধারণার ঘাটতি রয়েছে, সেখানে সামান্যতম স্বচ্ছ ধারণা নেই বললেই চলে অধিকাংশ জনগোষ্ঠী গ্রামীণ মানুষগুলোর। কানকথা, মনগড়া বিভিন্ন আলাপচারিতায় ভ্যাকসিন মানুষের কাছে এখন এক ভীতিকর নাম বললেই চলে। বিশেষ করে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মানুষের কাছে রয়েছে মনগড়া ধারণা। এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে সরকারের জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করা কষ্টকর হয়ে পড়বে। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে প্রয়োজন সরকার ও স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলোর সক্রিয়তা ও কার্যকরী পদক্ষেপ। গ্রামাঞ্চল মানুষের মাঝে স্বচ্ছ ধারণার প্রেক্ষিতেই সম্ভব করোনা টিকা অনেকাংশে নিশ্চিত করা। তাহলেই একদিন করোনা এই দেশ তথা বিশ্ব থেকে নির্মূল করা সম্ভব হবে। আর এটাই প্রত্যাশা।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads