• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
প্রস্তুত ৩৫ কোটি পাঠ্যবই নতুন সম্পূরক কৃষি শিক্ষা

বই উৎসব

সংরক্ষিত ছবি

শিক্ষা

প্রস্তুত ৩৫ কোটি পাঠ্যবই নতুন সম্পূরক কৃষি শিক্ষা

# বই উৎসব কাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী # ১ জানুয়ারি নতুন বই পাবে শিক্ষার্থীরা

  • অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
  • প্রকাশিত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচনের ঠিক এক দিন পর পয়লা জানুয়ারি হওয়ায় এবার বই উৎসব হবে কি না এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব উড়িয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্ধারিত সময়েই বই উৎসব হবে। অর্থাৎ ১ জানুয়ারি দেশের ৪ কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৫ শিক্ষার্থী খালি হাতে স্কুলে যাবে আর নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরবে। দেশের সব স্কুলে উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। এর আগে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে অর্থাৎ ২০১৯ সালে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম এবং নবম-দশম শ্রেণিতে সম্পূরক কৃষি শিক্ষা পাঠ্য করা হয়েছে। এবারই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দুটি সম্পূরক কৃষি শিক্ষা বই ছাপিয়ে সারা দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসগুলোতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি এই বইগুলোও শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে আর কোনো পরিবর্তন নেই। তবে এবার নির্বাচনের বছর হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভালোমানের বই উপহার দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খান বলেছেন, আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। আর ১ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অথবা শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সারা দেশে একযোগে বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন। শিক্ষামন্ত্রী যদি উৎসবের দিন অংশ নিতে না পারেন তাহলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, পাঠ্যবই নিয়ে এবারো কোনো শঙ্কা নেই। প্রায় সব বই ছাপা হয়ে চলে গেছে জেলা ও উপজেলায়। বিদ্যালয়ে সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শিশুদের মধ্যে বিতরণের জন্য বিদ্যালয়েই সেগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে। দেশের একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, এবার আগেভাগেই পাঠ্যবই ছাপা হয়ে চলে আসায় এক ধরনের বিপদেও পড়েছেন তারা। এত বিপুল পরিমাণ পাঠ্যবই সংরক্ষণের জন্য উপজেলা পর্যায়ে কোনো নির্দিষ্ট গুদামঘর নেই। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে রেখেছেন।

জানা গেছে, ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২টি পাঠ্যবই ছেপে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে কাজ করেছে ১৬ হাজার ৪০০ ট্রাক। দেশজুড়ে পাঠ্যবই মুদ্রণ ও পরিবহন কাজের তদারকি করতে কাজ করেছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ২২টি টিমের ৬৬ কর্মকর্তা। এর বাইরেও এনসিটিবির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম, এনসিটিবির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম মিলিয়ে আরো ২১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রম দিয়েছেন এই মহাযজ্ঞে।

এনসিটিবি জানায়, ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে মোট ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২ কপি পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের বই ১১ কোটি ছয় লাখ এক হাজার ৫২১ কপি। এসব বই ছাপাতে দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০০ ছাপাখানার সঙ্গে চুক্তি করে কার্যাদেশ দিয়েছিল এনসিটিবি। এর মধ্যে মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) এবং এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের পাঠ্যবই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ করতে কাগজ ছাড়া ৩৪০টি লটে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আর মাধ্যমিক বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন, ইবতেদায়ি, দাখিল, এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল এবং কারিগরি (ট্রেড বই) স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য কাগজসহ ৩২০টি লটে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এসব বই ছাপাতে এবার প্রায় ৮৫ হাজার টন কাগজ ব্যবহূত হয়েছে। এর মধ্যে এনসিটিবি কিনে দিয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টন। বাকি কাগজ মুদ্রণকারীরা বাজার থেকে কিনে বই ছাপিয়ে সরবরাহ করছে।

২০১৯ শিক্ষাবর্ষে মোট পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের বই ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার ২০ কপি। আর প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৮৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৯ কপি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষার বই ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৪ কপি, ইবতেদায়ির ২ কোটি ২৫ লাখ ৩১ হাজার ২৮৩ কপি এবং দাখিলের তিন কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩৪ কপি ছাপা হয়েছে। মাধ্যমিক (বাংলা ভার্সন) স্তরের ১৮ কোটি ৫৩ হাজার ১২২ কপি এবং একই স্তরের ইংরেজি ভার্সনের ১২ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৬ কপি বই ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা স্তরের ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৮ কপি ছাপা হচ্ছে, আর এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৫ কপি, ব্রেইল পাঠ্যপুস্তক ৫ হাজার ৮৫৭ কপি ছাপানো হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads