• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
জাবিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন: ভোটের মাঠে চলছে নানা সমীকরণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষা

জাবিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন: ভোটের মাঠে চলছে নানা সমীকরণ

  • জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষক সমিতির (২০১৯ সালের) কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম ক্যাম্পাসের শিক্ষক রাজনীতি। চলছে ভোট নিয়ে প্রচার-প্রচারণা ও বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ। ভোটের মাঠে শিক্ষকদের বিভিন্ন জোটে দেখা দিয়েছে নানা সমীকরণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেলবার কোন জোট না করলেও উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা বিএনপিপন্থী শিক্ষদের দৃশ্যমান সমর্থন পান। কিন্তু এবার আসন্ন নির্বাচনে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সমর্থন পাচ্ছেন সাবেক উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। এবছর উপাচার্য বিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সাথে বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা রীতিমতো প্রকাশ্যে জোট করে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এছাড়া বামপন্থী শিক্ষকও এই জোটের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধারণা এই জোটের প্রতি বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘শিক্ষক মঞ্চ’-এর সমর্থন রয়েছে।

একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ ও বামপন্থী শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ নামে নতুন একটি জোট গঠন করেছেন। এই জোটের ব্যানারে তিনটি ভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষকরা একটি প্যানেলে আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এতে ১৫ সদস্যের প্যানেলে সভাপতিসহ ৭টি পদে আওয়ামীপন্থী ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৭টি পদে বিএনপিপন্থী এবং একটি পদে বামপন্থী একজন শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন।

অপরদিকে, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামপন্থী ‘বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’এর শিক্ষকরা একটি প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যদিও গতবছর নির্বাচনে বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকরা প্যানেলে বিভক্ত না হয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে সুবিধা পায় বর্তমান উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। বিএনপিপন্থী ও বামপন্থী শিক্ষকদের ‘ভোট পেয়ে’ নির্বাচনে বেশিরভাগ পদে জয়লাভ করে বর্তমান উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। কিন্তু এবছরে সে চিত্র পাল্টে গেছে। উপাচার্যের বেশ কিছু কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে উপাচার্যবিরোধী আওয়ামী শিক্ষকদের সঙ্গে একাট্টা হয়েছেন বিএনপিপন্থী ও বামপন্থী শিক্ষকরা।

‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’র শিক্ষকরা বলছেন, উপাচার্য বর্তমান শিক্ষক সমিতিকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছেন।’ তাদের অভিযোগ, শিক্ষক সমিতি বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদ শিক্ষকদের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে প্রশাসনের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য শিক্ষক সমিতিকে প্রশাসনের বেড়াজাল থেকে বের করার জন্য তারা একত্রিত হয়েছেন। এই জোটে বামপন্থী শিক্ষকদের সমর্থন আছে বলেও জানান তারা।

‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’র সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কিছুই নিয়মনীতি অনুসরণ করে চলছে না। শিক্ষক সমিতিও উপাচার্যের ছত্রছায়ায় যুক্ত হয়ে গেছে। আমরা চাই শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের খবরদারি থেকে মুক্তি পাক। সবক্ষেত্রে জবাবদিহীতার জায়গা তৈরি হোক।

অন্যদিকে বর্তমান উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আওয়ামী শিক্ষকদের একটি অংশ বিএনপিপন্থী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে জোট গড়লেও প্রচারপত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ব্যবহার করেন নি। এতে তাদের আদর্শগত দিক থেকে ঘাটতি থাকার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। আর আদর্শগত মিল না থাকলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না।’

বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’র প্যানেল থেকে নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, আদর্শের জায়গা থেকে সরে গিয়ে যদি তারা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য কোনো জোট তৈরি করে তবে সেটা মহৎ কিছু অর্জন করতে পারে না।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads