এখন থেকে পরকীয়া আর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না বলে রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ সংক্রান্ত পূর্বের আইনটি বাতিল ঘোষণা করেন। খবর এনডিটিভি।
ভারতীয় দণ্ডবিধির পরকীয়া সংক্রান্ত ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেন আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, এই আইন স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। নারীদের স্বাতন্ত্র্য খর্ব করে। নারীর ব্যক্তিগত সম্ভ্রম রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বামী তার প্রভু নন। আইনগতভাবে স্বামীর চেয়ে স্ত্রীকে ছোট করে দেখানোটা ভুল।
ইংরেজ শাসনামলে ১৮৬০ সালের ওই আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করলে এবং ওই নারীর স্বামীর অনুমতি না থাকলে সে ব্যক্তির পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। আদালতের মতে, নিছক পরকীয়া কখনো অপরাধ হতে পারে না। পরকীয়ার কারণে কারো জীবনসঙ্গী যদি আত্মহত্যা করেন এবং আদালতে যদি তার প্রমাণ দাখিল করা যায় সেক্ষেত্রে এটি অপরাধে প্ররোচনা হিসেবে গণ্য হবে। পরকীয়া বিবাহবিচ্ছেদের অন্যতম একটি কারণ হতে পারে- এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তবে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।
১৫৮ বছর আগে করা আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত বছর একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। তাদের দাবি ছিল, ঔপনিবেশিক শাসনামলের ওই আইনে নারীদের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করে এই আইন তৈরি হয়। বর্তমান সমাজব্যবস্থার প্রেক্ষিতে এটি বাতিল করা উচিত। তারা আরো দাবি জানায়, একই অপরাধে পুরুষকে দোষী করলে নারীকেও দোষী হিসেবে গণ্য করতে হবে। শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চের একমাত্র নারী বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রাও ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রী কখনো স্বামীর ছায়া নন।
