• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

ফাইল ছবি

আইন-আদালত

আলোচনা করেই ঠিক হবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ এপ্রিল ২০১৮

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারা নিয়ে মে মাসের শেষের দিকে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করে তা সংশোধন ও পরিমার্জন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

আইনটি বর্তমানে আইসিটি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে। সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

এর আগে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সাংবাদিক নেতারা। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুকসহ কয়েকজন স্বাক্ষাত করে নিজেদের লিখিত মতামত মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

প্রস্তাবিত আইনে উল্লেখ করা ডিজিটাল এজেন্সি ও সম্প্রচার কমিশনের কর্মপরিধি সাংঘর্ষিক হবে বলে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানান সাংবাদিক নেতারা। তাঁরা বলেন, ‘ডিজিটাল মহাপরিচালক গণমাধ্যমের প্রতিকৃতি সম্পর্কে না জানলে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হবে।’

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আইনটি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করেন বিএফইউজের নেতারা। নতুন এজেন্সির বদলে বিটিআরসির অধীনে ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা দল) গঠনের পক্ষে মত দেন তারা।

বিএফইউজের এ মতামতের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাব পেয়েছি। পরবর্তী সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, সম্পাদক পরিষদের সদস্য, সাংবাদিক নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। সেখানে তারা এই মতামত সহ যদি আরো কোনো বক্তব্য থাকে তা তুলে ধরবেন।

আইনটি করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য। তাই এ আইনের যেন অপব্যবহার না হয়, এবং যে ধারাগুলোর ব্যাপারে আপত্তি আছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এমনভাবে আইনটি করা হবে কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং ডিজিটাল নিরাপত্তাও যেন নিশ্চিত হয়।’

বিএফইউজের মতামত

প্রস্তাবিত আইনটির বিষয়ে বিএফইউজের একাংশের লিখিত মতামতে আরো বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিলের নামে যে হাইপ্রোফাইল কমিটির চিন্তা করা হয়েছে, তার বৈঠক করাই কঠিন হয়ে যাবে। ফলে এই কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তা দীর্ঘসূত্রতায় পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত আইনটির ৩১ ধারার ব্যাপক অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করছেন সাংবাদিক নেতারা। সে কারণে এই ধারার অপপ্রয়োগ বন্ধের সব পথ রুদ্ধ করার প্রস্তাব করেন তাঁরা।

আইনটির ৩২ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তির কথা বলা হলেও এ সম্পর্কে প্রচলিত আইনেই সাজা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নতুন আইনের প্রয়োজন কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেইসঙ্গে সাংবাদিকতা ও গুপ্তচরবৃত্তির পার্থক্য নিরূপণের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে।

আইনের এই ধারাটির বিষয়ে বিএফইউজে প্রস্তাব করেছে যে এই আইনের কোনো ধারা সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের প্রতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে। কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের জন্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে তা তাৎক্ষণিক প্রয়োগ করা যাবে না। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে এ বিষয়ে একটি সেল থাকবে, সেই সেলে অভিযোগ করা যাবে। সেই সেলের অনুমোদন সাপেক্ষেই কেবল কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এ আইন প্রয়োগ করা যাবে। এই সেলের অনুমোদন ছাড়া সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের বেলায় এই আইন প্রয়োগ করা যাবে না।

২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রচারণার যে দণ্ডের কথা বলা হয়েছে, তাতে এই ধারাটির রাজনৈতিক বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপব্যবহার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়।

এই ধারা সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিএফইউজের নেতারা। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত কথাগুলো সংযুক্ত করা উচিত বলে তারা প্রস্তাবনা দেন। তাঁরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আরো স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট করা উচিত। ধর্মীয় বা কোনো বিশ্বাসের, সম্প্রদায়ের বা জাতিগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর বিষয়টি এ ধারাতেই স্পষ্ট করা উচিত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads