বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার তিন বছর পূর্ণ হয়েছে শনিবার। কিন্তু দীর্ঘদিনেও চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়নি। আগামীকাল সোমবার অনন্ত হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের নির্ধারিত দিন ধার্য রয়েছে।
সিলেটের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান, আগামীকাল অভিযোগ গঠন হলে মামলার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। অভিযোগ গঠন হলে মামলাটির আদালত স্থানান্তর হতে পারে বলেও জানান তিনি।
অনন্তের ভগ্নিপতি সমর বিজয় শেখর বলেন, আমরা চাই প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হক। যাতে এমন করে পৃথিবী থেকে আর কোনো অনন্তকে চলে যেতে না হয়।
২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয়। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর অনন্তের বড়ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
মামলাটি প্রথমে পুলিশ তদন্ত করলেও পরে তা অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ৯ মে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার সাংবাদিক ইদ্রিসসহ ১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত ছয়জন হলো- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বীরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এবি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), একই গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও সিলেট নগরীর রিকাবী বাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)।
অভিযুক্তদের মধ্যে আবুল, ফয়সাল ও হারুন পলাতক। ২০১৭ সালের ২০ জুন আদালত পলাতক তিনজনের সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দেন। পরে ১৬ জুলাই অভিযোগ গঠনের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। এরই মধ্যে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাফিউর রহমান ফারাবীর জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত আসামিদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। পরে অভিযোগ গঠনে নতুন তারিখ ধার্য করা হয়। আগামীকাল সোমবার নির্ধারিত সেই দিন।
