• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
আলোচনার মাধ্যমে আপত্তি দূর করা হবে : আইনমন্ত্রী

সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

ছবি : বাংলাদেশের খবর

আইন-আদালত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

আলোচনার মাধ্যমে আপত্তি দূর করা হবে : আইনমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জাতীয় সংসদে সদ্য পাশ হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে যে আপত্তি তোলা হয়েছে তা নিয়ে মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ রোববার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে সম্পাদক পরিষদসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও নানা মহলের আপত্তি সত্ত্বেও গত ১৯ তারিখে জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর থেকেই আবারও সমালোচনা শুরু হয়। আইনটির আপত্তির বিভিন্ন ধারা সংশোধনের লক্ষে দুপুরে সচিবালয়ে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন সংশ্লিষ্ট তিন মন্ত্রী।

ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন সম্পাদক পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা নিয়ে আপত্তি তোলে সম্পাদক পরিষদ।

আলোচনার মাধ্যমেই আইনগুলোর আপত্তি দূর করার কথা জানান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘কোন কোন জায়গায় গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্বেগ রয়েছে, সেগুলো লিপিবদ্ধ করেছি। এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা মনে করি, এটি আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে।’

সভায় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপত্তিকর ধারাগুলো মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু পার্লামেন্টে আইনটি পাস হয়ে গেছে, সেহেতু ক্যাবিনেট মিটিং হবে। সেখানে এটাকে আমি উপস্থাপন করবো। এবং এডিটরস কাউন্সিলের যে আপত্তিগুলো, সেগুলো তুলে ধরবো। মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা হওয়ার পর আমরা আবার আলোচনায় বসার জন্য সম্মত হয়েছি।’   

যুগের প্রয়োজনে একটি ডিজিটাল আইনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। 

এদিকে সাংবাদিকরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ধারায় বলা হয়েছে , কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা, প্রচারণা ও মদদ দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর সর্ব্বোচ শাস্তি ১৪ বছরের সাজার পাশাপাশি জরিমানা দিতে হবে ৫০ লাখ টাকা।

তবে আইনের ২১ ধারা বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন,‘আলোচনায় সবাই একমত হয়েছেন যে ২১ ধারাটি যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।’

ধারা ২৫ এ বলা হয়েছে, কেউ যদি ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল মাধ্যমে আক্রমণাত্মক ভয়-ভীতি দেখায় তাহলে তাকে তিন বছরের জেল বা তিন লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ধারা ২৮ এ বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধে আঘাত করার জন্য ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ করে, তাহলে তাকে অনধিক ৭ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে তাকে অনধিক ১০ বছেরের কারাদণ্ড বা ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ধারা ৩১ এ বলা হয়েছে, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা বিভিন্ন শ্রেণী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়, তাহলে তা ডিজিটাল অপরাধ। এই অপরাধের জন্য ৭ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ধারা ৩২ এ বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার গোপনীয় বা অতি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ করলে তা হবে ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির শামিল। আর এটি হবে অজামিন যোগ্য অপরাধ। এমন অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে- কোন ব্যক্তি প্রথমবার এই অপরাধে দোষী সাব্যস্থ হলে অনুর্ধ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা বারবার ওই অপরাধে দোষী প্রমাণীত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads