• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
রায়ে সন্তুষ্ট নন নিহতদের স্বজন ও আহতরা

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

আপিলের ঘোষণা

রায়ে সন্তুষ্ট নন নিহতদের স্বজন ও আহতরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ অক্টোবর ২০১৮

দীর্ঘ ১৪ বছর অপেক্ষার পর পাওয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেদিনের ভয়াল হামলায় আহত ও নিহতদের স্বজনরা। ঘৃণ্যতম ওই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ না হওয়ায় তারা ন্যায়বিচার পাননি বলে মনে করেন। তারেক রহমানের ফাঁসির রায় হলে সেদিনের নারকীয় হামলায় নিহতদের আত্মা শান্তি পেত, আহতদের দুর্বিষহ জীবনের অবসান ঘটত এবং ঘৃণ্যতম ষড়যন্ত্রের রাজনীতি থেকে জাতির মুক্তি মিলত বলেও তাদের অভিমত। ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও তারা জানান। রায়ের পর কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন। ২১ আগস্টে আহত ও নিহতের স্বজনদের সংগঠন ‘২১ আগস্ট বাংলাদেশ’র সাধারণ সম্পাদক নাজিমুদ্দিন নাজমুল বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আমরা যারা ২১ আগস্টের হামলায় আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্য আছি, তারা আদালতের এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা হামলার ষড়যন্ত্রকারী ও মূলহোতা হিসেবে তারেক রহমানের যাবজ্জীবন নয়, ফাঁসি দাবি করেছিলাম। এখনো এ দাবি করছি। আমার এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত যাব।’

আওয়ামী লীগের কর্মী আয়েশা খানম বলেন, ‘আমার মামি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছেন। হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেকের ফাঁসি হয়নি। এটা আমরা মানতে পারি না। আমাদের প্রত্যাশা, উচ্চ আদালত তারেক রহমানকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন।’

২১ আগস্টে আহত ও মামলার সাক্ষী এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক আলতাফ হোসেন বিপ্লব এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আদালতের কাছে প্রত্যাশা ছিল সর্বোচ্চ শাস্তি। অপরাধী যেই হোক, এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও জাতির পিতার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রে ফাঁসির রায় চেয়েছিলাম। জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে বিচারের নামে যারা মূল আসামিদের আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন, তাদেরও সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম। তারেকের ফাঁসির রায় না হওয়ায় আমি অসন্তুষ্ট।’

গতকাল বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণার সময় মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খুরশিদা বেবী হেনা ছিলেন ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আমার সারা শরীরে স্প্লিন্টার। এখনো আমি রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। এ রায়ে আমরা খুশি নই। হামলার মূলনায়ক তারেককে ফাঁসি দেওয়া হয়নি। তারেক কালপ্রিট। তার ফাঁসির দিলে বেশি খুশি হতাম। তবে আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

রায় শোনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্রেনেড হামলার শিকার ও নারী নেত্রী রাশিদা আক্তার রোমা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

২০০৪ সালের সংঘটিত গ্রেনেড হামলায় আহত অ্যাডভোকেট কাজী শাহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলছি, আদালতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। হস্তক্ষেপ থাকলে এ রকম রায় হতো না। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। তারেকের ফাঁসি চাই।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও গ্রেনেড হামলার শিকার আজিজুর রহমান বলেন, ‘আশা করেছিলাম, গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত ও চক্রান্তকারীদের ফাঁসির রায় হবে। তারেকের ফাঁসি না হওয়ায় হতাশ হয়েছি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘তারেকসহ সব হামলা ও ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁসি হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। এ রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই।’

আওয়ামী লীগের কর্মী হেনা বেগম বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমি আহত হয়েছি। আমরা এ রায় মানি না। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। গ্রেনেড হামলার মূলহোতা তারেকের ফাঁসি চাই।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত সেতারা বেগম পুতুল, আওয়ামী লীগের কর্মী সেলিম পাটোয়ারী, তাসলিমা, আফরোজা, মুক্তিযোদ্ধা নিজাম, শেফালী ও হারিস হাসানের সঙ্গে গতকাল কথা হয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে। সবার দাবি, হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেকের সর্বোচ্চ শাস্তি তথা ফাঁসির রায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads