• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
‘বনের রাজার’ সাজা আপিলেও বহাল

হাইকোর্ট

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

‘বনের রাজার’ সাজা আপিলেও বহাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ‘বনের রাজা’খ্যাত চাকরিচ্যুত প্রধান বন সংরক্ষক ওসমান গণিকে হাইকোর্টের দেওয়া ১২ বছর সাজা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। ওসমান গণির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন মো. খুরিশদ আলম খান।

পরে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি ওসমান গণির করা লিভ টু আপিল খারিজ করে  দেন আপিল বিভাগ। এর ফলে বিশেষ আদালতের দেওয়া রায় বহাল রইল আপিল বিভাগেও।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রধান বন সংরক্ষক ওসমান গণির উত্তরার সরকারি বাসভবনে অভিযান চালিয়ে চালের ড্রাম, বালিশ ও তোশকের ভেতর থেকে ১ কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করে। এছাড়া ৪১ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্রের সন্ধানও পায়। ২০০৭ সালের ২৯ মে তৎকালীন গুরুতর অপরাধ দমন অভিযান সংক্রান্ত টাস্কফোর্স বা যৌথ বাহিনী ওসমান গণিকে গ্রেফতার করে। এ সময় ওই বাসা থেকে ওসমান গণির নামে দুটি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার লকার থেকে ২৯০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ২০ ভরি অলঙ্কারের বৈধ কাগজপত্র ছিল।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৭ সালের ১৬ জুন ওসমান গণিকে তার সম্পত্তির হিসাব জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেয়। ওসমান গণি ২৬ জুলাই তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব জমা দেন। তার জমা দেওয়া ওই হিসাবে দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, ওসমান গণি ১ কোটি ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৪ টাকা।

২০০৭ সালের ২৬ জুলাই দুদক ওসমান গণি ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় মামলা করে। দুদকের মামলায় ২০০৮ সালের ৫ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ওসমান গণিকে দোষী সাব্যস্ত করে ১২ বছর ও তার স্ত্রী মোহসিনারা গণিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আদালত ওসমান গণির নামে থাকা ১ কোটি ৮০ লাখ ও স্ত্রীর নামে থাকা ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ২৭০ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ তার ১৫ বছর সাজা বহাল রাখেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধেও আপিল করেন কারাগারে থাকা ওসমান গণি। আপিলের চার বছরের মাথায় শুনানি শেষে সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্টের আদেশই বহাল রাখেন।

উল্লেখ্য, বিচারিক আদালত ওসমান গণিকে ১২ বছর কারাদণ্ড দিলেও ইতোমধ্যে তিনি ১১ বছর ধরে কারাভোগ করছেন। ফলে কারাভোগের পর তার কারামুক্তির সময়ও ঘনিয়ে এসেছে। এ ক্ষেত্রে তিনি মুক্তি পেলেও তার বিরুদ্ধে দেওয়া অর্থদণ্ড বহাল থাকবে বলে জানান দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads